বর্ষবরণে কলকাতা উত্তরের কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ ভট্টাচার্য। — নিজস্ব চিত্র।
গঙ্গাবক্ষে নৌকায় করে প্রচার সারলেন কেউ। কেউ তুললেন ঢাকের বোল। চলল পুজোপাট থেকে জুতো পালিশ, সবই।— লোকসভা ভোটের আবহে, বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে এমনই নানা ভূমিকায় দেখা গেল প্রার্থীদের। রাজনীতিতে উৎসব-পার্বণকে কেন্দ্র করে জনসংযোগের রীতি দীর্ঘদিনের। কার্যত সেই একই রীতিই এই দিনও দেখা গেল। তবে এমন উদ্যাপনের আবহের মধ্যেও থাকল, বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের ত্রিশূল হাতে ছবি দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিতর্কও।
নববর্ষের দিন ভোট-প্রচার উপলক্ষে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে এ দিন কাঁথিতে পদযাত্রা করতে দেখা গিয়েছে। পরে বসিরহাটে দলীয় প্রার্থী রেখা পাত্রের সমর্থনে সন্দেশখালিতে পদযাত্রা ও জনসভা করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে, তাঁর ভোট-প্রচার শুরুর জন্য নববর্ষের দিনটিকেই বেছে নিয়েছেন অভিনেতা তথা বিজেপির ‘তারকা প্রচারক’ মিঠুন চক্রবর্তীও। জলপাইগুড়িতে রোড-শো করেছেন তিনি। হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে আবার দেখা গিয়েছে চন্দননগরের রানিঘাট থেকে ত্রিবেণী পর্যন্ত নৌকায় করে প্রচার করতে। বেলেঘাটা থেকে ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি পর্যন্ত প্রভাতফেরিতে যোগ দিয়েছিলেন উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়।
এর সঙ্গে কিছু ‘চমক’-ও ছিল বিজেপির প্রচারে। বি আর অম্বেডকরের জন্মদিনও ছিল এই দিন। তা উপলক্ষে, সংবিধান-প্রণেতার জীবন-দর্শন বোঝাতে জুতো পালিশ করেন বাঁকুড়ার বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার। কলকাতায় অম্বেডকরের মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু-সহ বাম নেতৃত্ব।
নববর্ষের দিন জনসংযোগের ‘সুযোগ’ ছাড়েনি তৃণমূলও। নিমতা, দক্ষিণেশ্বর ও নিউ ব্যারাকপুরে নববর্ষের পদযাত্রায় যোগ দিয়েছিলেন দমদমের দলীয় প্রার্থী সৌগত রায়। পরে চড়কের মেলায় গিয়েছিলেন। বীরভূমের প্রার্থী শতাব্দী রায়ের দিনভর কেটেছে পুজো দেওয়া ও পরে পাড়ায়-পাড়ায় আড্ডা দিয়ে। নববর্ষের দিন সকালে বাঁকুড়ার মহামায়া মন্দিরে পুজো দিয়েছেন বাঁকুড়ার তৃণমূল প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তীও। সেই সঙ্গে গুড়াপে রোড-শো চলাকালীন উপস্থিত জনতাকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান হুগলির তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে শ্রীরামপুরের প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার বাড়িতে পুজো, নাতির জন্মদিন উপলক্ষে পারিবারিক অনুষ্ঠানেই নিজেকে বেঁধে রেখেছিলেন তিনি।
তমলুক শহরে ধুতি পরে বাংলায় বছরের প্রথম দিনে ঢাকের বোল তুলতে দেখা যায় তরুণ সিপিএম প্রার্থী সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বালিগঞ্জে জনসংযোগ সারেন দক্ষিণ কলকাতার প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম। তবে এই দিনে নিউ ব্যারাকপুর থেকে প্রচার মিছিলে থাকলেও এক বারের জন্যও রাজনীতির কথা বলেননি বলে জানিয়েছেন দমদমের সিপিএম প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী। তাঁর প্রচার-মিছিলে ছিল ট্যাবলো। হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। ডায়মন্ড হারবারের সিপিএম প্রার্থী প্রতীক-উর রহমানও এ দিন সকালে সাতগাছিয়ায় প্রভাতফেরির আদলে প্রচার মিছিল বার করেছিলেন। ঘুরেছেন চড়কের মেলাতেও। যাদবপুরের সিপিএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য আবার কৌশিক সেন, অনির্বাণ ভট্টাচার্য-সহ এলাকার বিশিষ্ট নাগরিকদের বাড়িতে শুভেচ্ছা-বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন।
কলকাতা উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী প্রদীপ ভট্টাচার্য সকালে অম্বেডকরের মূর্তিতে মাল্যদান করেন। বিকেলে হেদুয়া পার্ক থেকে কলেজ স্ট্রিট পর্যন্ত শোভাযাত্রায় বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে ছিলেন প্রদীপও। সন্ধ্যায় দু’দলের নেতৃত্বের অংশগ্রহণেই স্টার থিয়েটারের সামনে কবিতায়-গানে হয়েছে বর্ষবরণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy