Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

টাটকা সন্ত্রাসের স্মৃতি, ভোট দেওয়া নিয়ে সংশয়

দিল্লির দৌড়ে কে কোথায়? কোন দল কী ভাবে ঘর গোছাচ্ছে? কোথায় কোন কাঁটা বেগ দিচ্ছে কাকে? লোকসভা ভোটের আগে বিধানসভা ভিত্তিক খোঁজখবর।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

দিলীপ নস্কর
রায়দিঘি শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:২০
Share: Save:

দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েও ভোট দেওয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত শুনতে হয়েছিল, ভোট হয়ে গিয়েছে।

অনেকেই আবার ভোটের লাইন পর্যন্ত পৌঁছতে পারেননি। তার আগেই শাসক দলের নেতা-কর্মীদের তাড়া খেয়ে ফিরে যেতে হয়েছিল।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

বছরখানেক আগের পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে এমনই নানা অভিযোগ রয়েছে রায়দিঘি বিধানসভা এলাকার বহু মানুষের। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে সেই স্মৃতি ফিরবে কি না, সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে তাঁদের মনে।

নির্বাচন কমিশন অবশ্য শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আশ্বাস দিয়েছে। ইতিমধ্যেই এই বিধানসভা এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারি শুরু হয়েছে।‌ তবে তাতে ভরসা পাচ্ছেন না অনেকেই।

পঞ্চায়েত ভোটে ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ ওঠা নন্দকুমারপুর পঞ্চায়েত এলাকার এক বাসিন্দার কথায়, “কেন্দ্রীয় বাহিনীকে তো নিয়ন্ত্রণ করছে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন।” বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, শাসক দলের নেতারা ইতিমধ্যেই প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে রেখেছেন। দু’মাস পরে বাহিনী চলে গেলে কী হবে, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। এই পরিস্থিতিতে আদৌ ভোট দিতে যাবেন কি না, সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি অনেক ভোটার।

মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত রায়দিঘি বিধানসভা। এক সময়ে এই এলাকা সিপিএমের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। পরে উত্থান হয় তৃণমূলের। ২০১১ সালে পরিবর্তনের বছরে এখানে বিধানসভায় জেতে তৃণমূল। তখনও অবশ্য পঞ্চায়েত সমিতি-সহ একাধিক পঞ্চায়েত সিপিএমের দখলে ছিল। পরে এখানে শক্তিক্ষয় হয় বামেদের।

তৃণমূলের পাশাপাশি এলাকায় ক্রমশ প্রভাব বাড়তে শুরু করে বিজেপির। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে, এই বিধানসভায় তৃণমূলের থেকে সামান্য কিছু ভোটে পিছিয়ে ছিল পদ্ম শিবির। সে বার বামেরা তৃতীয় স্থানে নেমে যায়। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটেও দ্বিতীয় হয়েছিল বিজেপি। গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে সন্ত্রাসের অভিযোগের মধ্যেই বামেদের থেকে ভাল ফল করে পদ্ম শিবির।

এ বার মথুরাপুর কেন্দ্রে তৃণমূলের হয়ে লড়ছেন যুব নেতা বাপি হালদার। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী করেছে অশোক পুরকাইতকে। দু’পক্ষই জোরদার প্রচারে নেমে পড়েছে। দিন কয়েক আগে সিপিএমের তরফে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। প্রার্থী হয়েছেন শরৎচন্দ্র হালদার। প্রচার শুরু করেছেন তিনিও। লড়াইয়ে রয়েছেন আইএসএফ প্রার্থী অজয়কুমার দাস, এসইউসির প্রার্থী বিশ্বনাথ সর্দারেরা।

এই বিধানসভার অনুন্নয়ন নিয়ে বিরোধীদের অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। তার উপরে যোগ হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট লুটের অভিযোগ। বিরোধী নেতা-কর্মী তথা স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, জয়নগর থেকে রায়দিঘি পর্যন্ত রেল লাইন সম্প্রসারণ, রায়দিঘি বাজারে হিমঘর, মার্কেট কমপ্লেক্স আজও তৈরি হল না। এলাকায় নদীবাঁধ এখনও পাকাপাকি ভাবে সংস্কার হয়নি। বছর কয়েক আগে তৃণমূলের তৎকালীন বিধায়ক দেবশ্রী রায়ের বিরুদ্ধে টোটো দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে এখনও ক্ষুব্ধ অনেকে।

বিজেপির মথুরাপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী অশোক পুরকাইত বলেন, “এখানে তৃণমূলের প্রার্থী নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত। সরকারি রাস্তার গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। নিকাশি নালা, রাস্তা তৈরি না করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অধিকাংশ পঞ্চায়েতে শাসকদলের প্রধানেরা আবাস যোজনার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।’’ বিজেপির মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নবেন্দুসুন্দর নস্কর বলেন, “গত পঞ্চায়েত ভোটে ওই বিধানসভায় সন্ত্রাস চালিয়েছে তৃণমূল। অনেকে ভোট দিতে পারেননি। এখন থেকেই আমাদের কর্মীদের মারধরের হুমকি দিচ্ছে।”

এলাকার সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “এই সরকারের আমলে এলাকায় কোনও উন্নয়ন হয়নি। এখনও পর্যন্ত জয়নগর থেকে রায়দিঘি পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারনের কাজ শুরু হল না। মার্কেট কমপ্লেক্স, হিমঘর অসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তৃণমূলের প্রার্থীর বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগে উঠেছে।” সিপিএম প্রার্থী শরৎচন্দ্র হালদারের কথায়, “বিরোধী প্রার্থীদের নিয়ে মন্তব্য করব না। রাজনৈতিক ভাবে ভোটের লড়াই হবে।”

তৃণমূল প্রার্থী বাপি হালদারের দাবি, “রেল লাইন সম্প্রসারণ ও নদী বাঁধ সংস্কারের বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে। এলাকার বিধায়ক বহু বার বিষয়টি নিয়ে দরবার করেছেন। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। বাধ্য হয়ে রাজ্য সরকার অর্থ বরাদ্দ করে নদীবাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে। রায়দিঘি বাজারে হিমঘর ও মার্কেট কমপ্লেক্স জমি জটে আটকে রয়েছে। এই এলাকায় প্রায় ৪০ কিলোমিটার পাকা রাস্তা তৈরি, পানীয় জলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। কয়েক বছরে যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে।” তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ বিরোধীদের অপপ্রচার বলে দাবি বাপির।

রায়দিঘির তৃণমূল বিধায়ক অলোক জলদাতা বলেন, “এখানে কোনও নির্বাচনেই সন্ত্রাস হয় না। পঞ্চায়েত প্রধানদের বিরুদ্ধেও কোনও দুর্নীতির অভিযোগে পাইনি। এলাকায় স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহের কাজ চলছে।”

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Raidighi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE