Advertisement
E-Paper

‘জব্দ করতে দু’মিনিট’! ওসি এবং বিডিওকে শাসালেন বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ, তোপ তৃণমূলের

বিজেপির দেওয়াল লিখন মুছে ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে শুক্রবার প্রথমে জয়পুর থানা ও পরে জয়পুর বিডিও অফিসে গিয়েছিলেন সৌমিত্র। থানায় ওসির দেখা পাননি তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২৪ ২০:৩২
সৌমিত্র খাঁ।

সৌমিত্র খাঁ। —ফাইল চিত্র।

ওসি এবং বিডিওকে শাসিয়ে বিতর্কে জড়ালেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। তাঁদের বিরুদ্ধে শাসকদল তৃণমূলের দালালি করার অভিযোগ তুলে বিদায়ী সাংসদের হুঁশিয়ারি, ‘‘জব্দ করতে দু’মিনিট লাগবে!’’ নির্বাচন কমিশনের কাছে ওই ওসি ও বিডিওকে অপসারণ করার ‘অনুরোধ’ও করবেন বলে জানিয়েছেন সৌমিত্র। যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

বিজেপির দেওয়াল লিখন মুছে ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে শুক্রবার প্রথমে জয়পুর থানা ও পরে জয়পুর বিডিও অফিসে গিয়েছিলেন সৌমিত্র। থানায় ওসির দেখা পাননি তিনি। বিডিও অফিসও তালাবন্ধ ছিল। তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাংসদ। কেন বিডিও অফিস বন্ধ, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে চিৎকার-চেঁচামেচিও জুড়ে দেন। বিডিওর উদ্দেশে সৌমিত্রের অভিযোগ, ‘‘আপনি তৃণমূলের দালালি করছেন।’’ এ নিয়ে পরে বিডিও দিব্যজ্যোতি পাত্র আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আজ রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের সব অফিস ছুটি। তাই আমাদের এই অফিসও বন্ধ ছিল। তা ছাড়া উনি (সৌমিত্র) না জানিয়েই এসেছেন।’’

ঘটনার সূত্রপাত দুপুরে। সৌমিত্র ভোটপ্রচারে যান জয়পুর ব্লকের হেতিয়া-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে। সেখানে স্থানীয় কিছু বিজেপি কর্মী সৌমিত্রকে জানান, কুম্ভস্থল এলাকায় বিজেপির দেওয়াল লিখন মুছে ফেলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জয়পুর থানায় অভিযোগ জানানো হলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এর পরেই তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন সৌমিত্র! দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘জয়পুরের ওসি তৃণমূলের দালালি করছেন। তাঁকে জব্দ করতে আমার দু’মিনিট সময় লাগবে। অবিলম্বে ওই ওসি ও জয়পুরের বিডিওকে অপসারণের জন্য নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করব।’’ এর পর সটান জয়পুর থানায় হাজির হন সাংসদ। থানায় ঢুকে খোঁজ করেন ওসির। ওসি থানায় না থাকায় সেখান থেকে সৌমিত্র খাঁ হাজির হন জয়পুরের বিডিও অফিসে। শিবরাত্রি উপলক্ষে অফিস ছুটি থাকায় অফিসের মূল গেট তালাবন্ধ ছিল। অফিস তালাবন্ধ দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সাংসদ। অফিস কেন তালাবন্ধ থাকবে, তা নিয়ে চেঁচামেচি শুরু করেন তিনি। সেই খবর পেয়েই বিডিও অফিসে পৌঁছন বিডিও। তিনি সাংসদকে সব অভিযোগ লিখিত আকারে দিতে বললে শুরু হয় বাক্‌বিতণ্ডা। বিডিও ও তাঁর দফতরের এক কর্মী যতই তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, ততই সুর চড়াতে দেখা যায় তাঁকে। এর পর নিজেই বিডিও অফিস ছেড়ে বেরিয়ে যান সৌমিত্র।

পরে সৌমিত্র বলেন, ‘‘জয়পুরে গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে দেয়নি। লোকসভা নির্বাচনও করতে দিতে চাইছেন না জয়পুর থানার ওসি ও বিডিও। আমাদের দেওয়াল লিখন মুছে দেওয়া হয়েছে। আমরা অভিযোগ জানানোর পরও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কেন ব্যবস্থা নেওয়া হল না, তা জানতে থানায় ও বিডিও অফিসে এসেছিলাম। থানার ওসির দেখা মেলেনি। বিডিও তৃণমূলের দালালি করার চেষ্টা করছিলেন। এই দুই আধিকারিককে অবিলম্বে না সরালে লোকসভা নির্বাচন করা সম্ভব নয়।’’ এ প্রসঙ্গে বিডিও বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় আমি এখানকার বিডিও ছিলাম না। তাই এই অভিযোগ আমার ক্ষেত্রে খাটে না।’’

সৌমিত্রের ওই মন্তব্যের সমালোচনায় সরব হয়েছে তৃণমূল। দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের মুখে সৌমিত্র বুঝতে পারছেন, পায়ের তলায় মাটি নেই। তাই তাঁর মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে এ ভাবে কথা বলা যায় না। সেটা জনপ্রতিনিধি হিসাবে তাঁর জানার কথা। এই দুর্ব্যাবহারের জন্য অবিলম্বে তাঁকে গ্রেফতার করা উচিত।’’

Lok Sabha Election 2024 Soumitra Khan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy