E-Paper

গণসংগঠনের  সদস্য বাড়ছে,  দাবি বামেদের

কালীগঞ্জ ব্লক অতীতে কংগ্রেস অধ্যুষিত হলেও সময়ের সঙ্গে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে এই ব্লকে বিভিন্ন আন্দোলন ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএমই কার্যত মূল বিরোধী দল হয়ে উঠেছে।

সন্দীপ পাল

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:২৯
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

দিনক্ষণ ঘোষণা হয়নি। তবে সব রাজনৈতিক দলই লোকসভা ভোটের জন্য ঘর গোছাতে শুরু করে দিয়েছে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচন, ইনসাফ যাত্রা ও যুব সংগঠনের বিগ্রেড সমাবেশের পর সিপিএম কিছুটা জমি খুঁজে পেয়েছে। ইতিমধ্যে কালীগঞ্জ ব্লক জুড়ে তাদের গণসংগঠনে সদস্য বাড়ছে বলে দাবি সিপিএমের। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছাত্র ও যুব সংগঠন। দলীয় সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচনের হিসেবে চোখ রেখেই লোকসভার লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে সিপিএম।

কালীগঞ্জ ব্লক অতীতে কংগ্রেস অধ্যুষিত হলেও সময়ের সঙ্গে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে এই ব্লকে বিভিন্ন আন্দোলন ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএমই কার্যত মূল বিরোধী দল হয়ে উঠেছে। তবে গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে খুব একটা দাঁত ফোটাতে পারেনি তারা। ২০১৮-এর পঞ্চায়েত ভোট, ’১৯-এর লোকসভা ভোট ও ’২১-এর বিধানসভা ভোটে তাদের ভোট নিন্মমুখী হলেও গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তা মুখ ঘুরিয়েছে। একক ভাবে পালিতবেঘিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত দখল ছাড়াও বেশ কিছু আসনে জয়লাভ করেছে তারা।

বামেদের দাবি, ২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনে জালিয়াতি, ভোট লুট ও চুরি করে তৃণমূল বহু জায়গায় জিতেছিল। এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাদের ভোটপ্রাপ্তির হার কয়েক গুণ বেড়েছে। কালীগঞ্জ ব্লকে বামেদের অন্য শরিক দলের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। এক সময় আরএসপি পঞ্চায়েতে আসন পেত। এ বছর তাদের কয়েকটি আসন ছাড়া হলেও একটিই আসন পেয়েছে তারা। ফলে সিপিএমই এখানে প্রধান বাম দল হিসেবে ময়দানে রয়েছে।

কোভিড পরিস্থিতির পর থেকে কালীগঞ্জে সিপিএমের রাজনীতিতে একটা নতুন প্রজন্ম উঠে এসেছে। এর ফলেই গোটা জেলার সঙ্গে এখানেও ছাত্র ও যুব সংগঠনে এক ঝাঁক তরুণকে দেখা যাচ্ছে। সিপিএমের দাবি, কোভিডের সময় যারা কাজ করেছে তাদের মধ্যে থেকেই গণ সংগঠনের নেতৃত্বে উঠে এসেছে কয়েক জন। এই ব্লকের অনেকে জেলা স্তরেও নেতৃত্বে দিচ্ছেন। সাধারণ সদস্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। দীর্ঘদিন পর ছাত্রদের পঞ্চায়েত-ভিত্তিক একাধিক ইউনিট তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর পলাশি কলেজ ইউনিট তৈরি করেছে এসএফআই। এই তরুণদের মধ্যে থেকে বাছাইউ করে সিপিএমের সদস্যপদ দেওয়া হচ্ছে।

দলীয় সূত্রের খবর, ২০২২ সালে এসএফআই সদস্য ছিল দেড় হাজার, চলতি বছরে তা ইতিমধ্যেই অতিক্রম করেছে। সদস্য সংখ্যা কয়েক গুণ বাড়বে বলে নেতাদের আশা। আবার যুব সংগঠন নদিয়া জেলার সদস্যের সংখ্যা আঠারো হাজার অতিক্রম করেছে। আরো বাড়ার সম্ভাবনা আছে বলেও দাবি তাদের।

সিপিএম সূত্রের দাবি, শ্রমজীবীদের মধ্যেও তাদের প্রভাব ফের বাড়ছে। অস্থায়ী পেশায় যুক্ত 'গিগ ওয়ার্কার', টোটো চালকদের একটা বড় অংশ, পরিযায়ী শ্রমিক, রেল হকারদের অনেকেই তাদের দিকে ঝুঁকছেন। এঁদের সমস্যা নিয়ে একাধিক আন্দোলনের ফলে অসংগঠিত ক্ষেত্রে সদস্য সংখ্যা বেড়েছে। সিপিএমের বুনিয়াদি ক্ষেত্র কৃষক আন্দোলন তো ছিলই, বর্তমানে কালীগঞ্জ ব্লকে খেতমজুর ইউনিয়নও তৈরি হয়েছে। অতীতে মহিলা সমিতিরও সদস্য কমেছিল। এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সব মহিলা-সংরক্ষিত আসনেই সিপিএম প্রার্থী দিয়েছিল। ফলে মহিলা সদস্যও বেড়েছে।

সদ্য দলে যোগ দিয়েই মীরা ১ নম্বর গ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন বিল্লাল শেখ। তিনি বলেন, “অনেকেই আসছে। যুবকদের থেকে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে এটাই বড় পাওনা।” সিপিএমের নদিয়া জেলা কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস আচার্যের দাবি, “ভোট ঠিক ভাবে হলে ও সকলে ভোট দিতে পারলে শুধু কালীগঞ্জ বা নদিয়া জেলা নয়, রাজ্য জুড়েই হিসেবের অনেক পরিবর্তন হবে।” কালীগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক নাসিরউদ্দিন আহমেদ অবশ্য পাল্টা দাবি করেন, "অতীতেও আমরা বামেদের বিগ্রেড দেখেছি। তার প্রভাব ভোটে কিছুই পড়েনি। সাধারণ মানুষ তৃণমূলের সঙ্গেই আছে।"

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 CPIM

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy