মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়া (বাঁ দিকে), বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।
গরম যত বাড়ছে ততই তেতে উঠছে রাজনীতির ময়দান। চলছে কু-কথার রাজনীতি। ব্যতিক্রম মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্র। এই কেন্দ্রে দুই ‘বন্ধু’র লড়াই যেন সৌজন্যের। ব্যক্তিগত পর্যায়ে নেই কোনও কু-কথার স্রোত। এখানে লড়াই রাজনৈতিক নীতি-আদর্শের।
মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে যুযুধান রাজনৈতিক দলের দুই প্রার্থীর কথায় যেন এক সুর। হবে না-ই বা কেন! দু’জনেই যে আদতে বন্ধু। একজন অভিনেত্রী জুন মালিয়া। অন্যজন ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পাল। প্রায় ২০ বছরের বন্ধুত্ব। গৌরবের সঙ্গেই দু’জনেই স্বীকার করছেন নিজেদের বন্ধুত্বের কথা। তবে এ বার লোকসভা নির্বাচনে এই মেদিনীপুর আসনে তৃণমূলের প্রার্থী জুনের সঙ্গে লড়াই বিজেপির প্রার্থী অগ্নিমিত্রার। তবে সেই লড়াইয়ে নেই কোনও ব্যক্তিগত আক্রমণ। নেই কোনও পারস্পরিক কু-কথা। দু’জনেই পরস্পরের রাজনৈতিক দল ও সেই দলের নীতি-আদর্শ নিয়ে নানা প্রশ্নে সরব। দিন কয়েক আগে প্রশ্ন করলে জুন তাঁর বন্ধু স্বীকার করেই অগ্নিমিত্রা বলেছেন, “এটা নীতি-আদর্শের লড়াই। জুন মালিয়া আমার প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, আমার প্রতিদ্বন্দ্বী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল ও তাঁদের নীতি আদর্শ।” আবার খড়্গপুরে দাঁড়িয়ে জুন বলেন, “এখানে বন্ধুত্ব খারাপ হওয়ার প্রশ্নই নেই। উনি(অগ্নিমিত্রা) একটা অন্য নীতি-আদর্শে নিয়ে অন্য দলে যুক্ত রয়েছেন। আমি আমার নীতি-আদর্শ নিয়ে তৃণমূলে রয়েছি। এই মুহূর্তে আমরা একটি নির্বাচনে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী। আর আমরা সবসময়েই বন্ধু। বন্ধুত্ব বজায় থাকবে।”
রাজ্য তথা দেশ জুড়ে কার্যত চলছে ভাষা-সন্ত্রাস। প্রতিদ্বন্দ্বীকে বিঁধতে ব্যক্তিগত আক্রমণে চলছে কু-কথার বন্যা। এই জেলারই ঘাটাল আসনেও তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দেবকে ‘গরু চোর’, ‘চাকরি চোর’, ‘সেতু চোর’ বলে কটাক্ষের পাশাপাশি ‘সন্ত্রাসবাদী সাংসদ’ বলে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন বিজেপি প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়। প্রথম পর্যায়ে হেসে উপেক্ষা করলেও দিন কয়েক আগে মাদপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে হিরণকে ‘রাস্তা চোর’ বলে কটাক্ষ করতে শোনা গিয়েছে দেবকেও। তবে সেই জেলার মেদিনীপুর আসনেও দুই বন্ধুর সৌজন্যের লড়াই উদাহরণ হিসেবে সামনে আসছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, “এটাই তো বাংলার সংস্কৃতি, কৃষ্টি। মেদিনীপুর আসনে জুন মালিয়া বা অগ্নিমিত্রা পাল কেউই আপাতত পারস্পরিক আক্রমণ না করে যে সৌজন্য বজায় রেখেছেন তা প্রশংসনীয়।” বিজেপির জেলা মুখপাত্র অরূপ দাসও বলেন, “এই বাংলায় তো বিরোধীদের কণ্ঠরোধ, অসৌজন্য, মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ধারা চালু করেছে তৃণমূল। কিন্তু আমাদের দল সবসময়ে সৌজন্যের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। অগ্নিমিত্রা পাল ব্যক্তিগত আক্রমণ এখনও করেননি। এটা ইতিবাচক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy