দেশের প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি। —ফাইল ছবি।
বিরোধীদের কথার প্রতিধ্বনি প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচনী কমিশনারের গলাতেও। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ‘ম্যাচ ফিক্সিং’ মন্তব্যের পরে এ বার একই ধরনের মন্তব্য করলেন দেশের প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি। একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, বিরোধী দলগুলির বিরুদ্ধে (কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলগুলি) যে পদক্ষেপ করছে, তা তিন মাস পরে, অর্থাৎ নির্বাচন শেষ হলেও করা যেত।’’ একই মত আরও দুই নির্বাচন কমিশনারের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁরা ওই সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির পদক্ষেপের ফলে ‘খেলার মাঠে অসাম্য’ দেখা যেতে পারে।
গত কাল দিল্লির রামলীলা ময়দানে সভা করেছিল বিজেপি-বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’। সেখানে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘‘ইভিএম ছাড়া, ম্যাচ ফিক্সিং ছাড়া, সমাজমাধ্যম ছাড়া এবং গণমাধ্যমের উপরে চাপ সৃষ্টি ছাড়া বিজেপির পক্ষে ১৮০টির বেশি আসন জেতা অসম্ভব।’’ ‘ম্যাচ ফিক্সিং’-এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বিরোধী নেতা জানান, ইডি, সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে যে ভাবে ব্যবহার করছে নরেন্দ্র মোদী সরকার, সেটাই ম্যাচ ফিক্সিং। এই সব কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সাহায্যে অরবিন্দ কেজরীওয়াল, হেমন্ত সোরেনের মতো বিরোধী নেতাদের জেলে পোরা হচ্ছে। কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ় করে দেওয়া হচ্ছে। ফলে টান পড়ছে ভোটে লড়ার জন্য প্রয়োজনীয় পুঁজিতে।
প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার কুরেশিরও প্রশ্ন, ‘‘ইডি বা আয়কর বিভাগের পদক্ষেপের জেরে যদি কোনও দলের পুঁজিতে টান পড়ে, তা হলে তারা কি ঠিকঠাক ভাবে ভোটে লড়তে পারবে? এই প্রশ্ন আমাদেরও ভাবাচ্ছে।’’ তাঁর মতে, ‘‘নির্বাচন কমিশন চাইলে এমন পদক্ষেপের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করতেই পারে। না হলে লড়াইয়ের ময়দানে সাম্য নিশ্চিত করা যাবে কী ভাবে?’’
এ দিকে, রাহুলের ‘ম্যাচ ফিক্সিং’ মন্তব্য নিয়ে আজ নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। একই সঙ্গে তাদের দাবি, রাহুলের মন্তব্য নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে। তাই তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হোক।
সোমবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিজেপির যে প্রতিনিধি দলটি দেখা করে সেখানে ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী, বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অরুণ কুমার-সহ বেশ কয়েক জন শীর্ষ নেতা। পরে হরদীপ জানান, জনসভায় কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতির মন্তব্যগুলি অত্যন্ত আপত্তিকর। এই সব মন্তব্য যে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করছে, শুধু তা-ই নয়, সেগুলি সমাজে খারাপ প্রভাবও ফেলতে পারে। তাই রাহুলের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy