Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Abhishek meets Dev

ভোটে না দাঁড়ানোর জল্পনার মধ্যেই অভিষেকের সঙ্গে বৈঠক করে মমতার কাছে দেব! সিদ্ধান্ত বদল হচ্ছে?

দেবকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফেই। তলব পেয়েই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের সঙ্গে দেখা করতে আসেন ঘাটালের সাংসদ দেব। তার পরে যান কালীঘাটে।

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিকে) এবং  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (ডান দিকে) সঙ্গে দেখা করলেন তৃণমূল সাংসদ দেব (মাঝে)।

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিকে) এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (ডান দিকে) সঙ্গে দেখা করলেন তৃণমূল সাংসদ দেব (মাঝে)। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:৪২
Share: Save:

তিনি দলের হয়ে ভোটে দাঁড়াবেন না, এই জল্পনার মধ্যেই ঘাটালের সাংসদ দেব একই দিনে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দেখা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে।

শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ দেবের গাড়ি প্রথমে এসে পৌঁছয় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেকের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসের সামনে। গাড়ি থেকে নেমে ভিতরে চলে যান দেব। তার পরে ক্যামাক স্ট্রিটের ওই অফিস থেকে বেরিয়ে তিনি সোজা চলে যান কালীঘাটে, তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতার বাড়িতে। এই ঘটনাপ্রবাহে প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি দেব তাঁর সিদ্ধান্ত বদলাতে চলেছেন?

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

গত কিছু দিন ধরেই দলের হয়ে ভোটে না লড়ার ইঙ্গিত দিয়ে চলেছেন দেব। দিন কয়েক আগে ঘাটালের তিনটি প্রশাসনিক পদ— ঘাটাল কলেজ, ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি ও বীরসিংহ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন দেব। তার পরেই সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে দেব লিখেছিলেন, ‘‘সংসদে আমার শেষ দিন।” ঘাটালের তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেতা দীপক অধিকারী (দেব)-এর ওই পোস্ট কার্যত অনেকটাই স্পষ্ট করে দেয় ঘাটালে তৃণমূলের হয়ে দেবের নির্বাচনে না লড়ার বিষয়টিকে। যদিও সরাসরি এ ব্যাপারে কখনওই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা তিনি জানাননি। অন্য দিকে, দলনেত্রী বরাবরই বুঝিয়ে এসেছেন, তিনি দেবকে দলের সাংসদ হিসাবে দেখতে আগ্রহী। সম্প্রতি একটি প্রশাসনিক বৈঠকে দেবকে ‘দলের সম্পদ’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এর মধ্যেই শনিবার বিকেলে দেবকে ডেকে পাঠানো হয় দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে। সেই বৈঠক এবং তার পরে মমতার সঙ্গে বৈঠক নিয়েই নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে।

দু’জনের সঙ্গেই কী নিয়ে কথা হয়েছে দেবের, তা স্পষ্ট নয়। তবে শনিবার বিকেলে দেব যে অভিষেকের সঙ্গে দেখা করতে আসবেন, তা আগে থেকেই ঠিক ছিল। তৃণমূল সূত্রে খবর, দেবকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফেই। তবে তাঁর কালীঘাটে যাওয়ার বিষয়টি আগে থেকে জানা ছিল না। এই হঠাৎ ঘটে যাওয়া ঘটনাটির নেপথ্যে অন্য ইঙ্গিতের গন্ধ খুঁজে পাচ্ছেন রাজনীতির কারবারিরা।

রাজনৈতিকদের একাংশ অবশ্য এই সাক্ষাৎকারের নেপথ্য কারণ হিসাবে একটি ঘটনার কথা বলছিলেন প্রথম থেকেই। দিন কয়েক আগে দেবকে নিয়ে একটি অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ্যে এসেছিল। সেখানে ঘাটালের প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দলুইকে বলতে শোনা যায়, ‘‘দেবের লোকেরা কাটমানি নেন।’’ ওই অডিয়ো ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে সূত্রের খবর ওই অডিয়ো ক্লিপ প্রকাশ্যে আসার পর দেব তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে খারাপ লাগার কথা জানিয়েছিলেন। ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের বরাদ্দ অর্থ নিয়ে অভিযোগ তোলা হয়েছিল বিজেপির তরফেও। বলা হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার ১৬০০ কোটি টাকা দিলেও কাটমানির ভাগাভাগির লড়াইয়ে সেই টাকা ফেরত চলে গিয়েছে। সেই অভিযোগ প্রকাশ্যেই উড়িয়ে দেব বলেছিলেন, ‘‘কারা এমন বলছে আমি জানি না। তবে সংসদেও বলেছি, কেন্দ্র কোনও টাকা দেয়নি। যতটুকু হয়েছে তা রাজ্যের টাকাতেই হয়েছে।’’ অনেকেই বলেছিলেন, এ ব্যাপারেই দেবের সঙ্গে কথা বলতে চান দলীয় নেতৃত্ব। জানতে চান তাঁর ক্ষোভের কারণ।

দেবের ভোটে না দাঁড়ানোর নেপথ্যে আরও দু’টি কারণ নিয়ে আলোচনা হয় শাসকদলের মধ্যেই। সেই আলোচনাতেই শোনা গিয়েছিল, রাজ্যের এক মন্ত্রীর উপর দেব ক্ষুব্ধ। তাঁর ছবি নন্দনে জায়গা না পাওয়া নিয়েই নাকি সেই ক্ষোভের সূত্রপাত। যদিও অভিনেতা-সাংসদ কখনও, কোথাও প্রকাশ্যে এ বিষয়ে কিছু বলেননি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠেরা জানিয়েছিলেন, দেব ক্ষুব্ধ। আবার অনেকের মতে, দেব-ঘনিষ্ঠেরা মন্ত্রীর উপর ক্ষোভের কথা বললেও নেপথ্যে অন্য কারণ রয়েছে। সেই কারণ কী? তাঁদের বক্তব্য, গরু পাচার মামলার তদন্তের সূত্রে দেবকে ডেকেছিল সিবিআই। অভিযোগ, গরু পাচারের টাকা দেবের ছবিতে বিনিয়োগ হয়েছিল। দেব কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে এড়াতেই আর ভোটে দাঁড়াতে চান না বলে বক্তব্য ওই অংশের।

জনশ্রুতি, বিশ্বকাপে ইডেনে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ দেখতে গিয়ে দেব তাঁর ঘনিষ্ঠদের জানিয়েছিলেন, তিনি আর ভোটে দাঁড়াতে চান না। তারও আগে আনন্দবাজার অনলাইনের ‘অ-জানাকথা’য় দেব বলেছিলেন, ‘‘যদি সম্ভব হয়, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে আর দাঁড়াতে চাই না।’’

তৃণমূল সূত্রে খবর, মাসখানেক আগে কালীপুজোর পরের দিন তৃণমূলনেত্রীর বাড়িতে দধিকর্মা খেতে গিয়েছিলেন দেব। সে দিনও বেশ খানিক ক্ষণ দু’জনের মধ্যে কথা হয়েছিল। কিন্তু শাসকদলের একাধিক নেতার বক্তব্য, দেব মমতার সামনেও ভোটে দাঁড়ানোর বিষয়ে হ্যাঁ, না কিছুই বলেননি। সেই দেবই শনিবার অভিষেকের সঙ্গে বৈঠকের পর মমতার কাছে গেলেন। এই সাক্ষাতে তাই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তৃণমূলের সাংসদ হওয়ার ব্যাপারে দেব কি তবে তাঁর পুরনো মত বদলাতে চলেছেন?

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Dev Abhishek Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE