Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

প্রার্থী নন বুঝেই কি গেরুয়াত্যাগী কুনার!

প্রাক্তন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার কুনার বিজেপিতে যোগ দেন ২০১৭ সালে। তখন তিনি জনজাতি মোর্চার জেলা সভাপতি ছিলেন। তারপর ২০১৯-এ সাংসদ হন।

জেলা সভাপতিকে পাঠানো সাংসদের চিঠি।

জেলা সভাপতিকে পাঠানো সাংসদের চিঠি। নিজস্ব চিত্র।

কিংশুক গুপ্ত
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৪ ০৯:০৪
Share: Save:

জঙ্গমহলের অন্য আসনগুলিতে বিজেপি প্রার্থী হচ্ছেন বিদায়ী সাংসদরাই। ইতিমধ্যে তাঁদের নামও ঘোষণা করেছে দল। তবে ঝাড়গ্রামে এখনও পদ্ম প্রার্থীর নাম ঘোষণা বাকি। এরই মধ্যে দল ছাড়ছেন বলে জেলা নেতৃত্বকে চিঠি দিলেন ঝাড়গ্রামের বিদায়ী সাংসদ কুনার হেমব্রম।

জানা গিয়েছে, বুধবার কুনার রাজ্য ও জেলার দুই নেতাকে ফোন করে প্রথমে দল ছাড়ার কথা জানান। তাঁরা কুনারকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বারণ করেন। তবে শুক্রবার দল থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করছেন জানিয়ে জেলা সভাপতি তুফান মাহাতোকে চিঠি দিয়েছেন কুনার। তিনি বলছেন, ‘‘ব্যক্তিগত কারণে দল থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কথা লিখিতভাবে নেতৃত্বকে জানিয়ে দিয়েছি। পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে এখনই কিছু ভাবছি না।’’

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

বিজেপির জেলা নেতারা অবশ্য এ বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। দলের রাজ্য কমিটির সদস্য সুখময় শতপথী শুধু বলেন, ‘‘কুনারদা ব্যক্তিগত কারণে দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে সামাজিক কাজে সময় দেবেন বলে ফোনে জানিয়েছিলেন। তবে তিনি দল ছাড়ার কথা জানিয়ে নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েছেন কি না আমার জানা নেই।’’ সূত্রের খবর, জেলা বিজেপির এক নেতা এ দিন কন্যাডোবা গ্রামের বাড়িতে কুনারকে বোঝাতে গিয়েছিলেন। তবে কুনার মত বদলাননি।

প্রাক্তন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার কুনার বিজেপিতে যোগ দেন ২০১৭ সালে। তখন তিনি জনজাতি মোর্চার জেলা সভাপতি ছিলেন। তারপর ২০১৯-এ সাংসদ হন। তবে এ বার তিনি টিকিট পাবেন কিনা নিশ্চিত নয়। গত ২ মার্চ প্রথম দফায় রাজ্যের যে ২০টি লোকসভায় বিজেপি প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে, তার মধ্যে ঝাড়গ্রাম নেই। তবে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর আসনে বিজেপির বিদায়ী তিন সাংসদই ফের দলের প্রার্থী হয়েছেন। পুরুলিয়ার জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, বিষ্ণুপুরে সৌমিত্র খাঁ ও বাঁকুড়ায় প্রার্থী হয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার।

সূত্রের খবর, এরপরই ক্ষুব্ধ ও অপমানিত বোধ করছেন কুনার। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, সাংসদ হিসেবে কুনার যথেষ্ট কাজ করেছেন। এখনও পর্যন্ত সাংসদ তহবিলে পাওয়া ২২ কোটি টাকা খরচও করেছেন। গত পাঁচ বছরে তাঁর সুপারিশে ভুবেনশ্বর এমস্-এ ভর্তি হয়ে চিকিৎসার সুযোগ পেয়েছেন ৩৫৭ জন। জটিল রোগে আক্রান্ত ২২৪ জনকে প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্য পেতে সহযোগিতা করেছেন সাংসদ। তারপরও কি কুনারে ভরসা নেই গেরুয়া শিবিরের?

জেলা বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের অবশ্য ব্যাখ্যা, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে ঝাড়গ্রাম সংসদীয় এলাকার ৩০ শতাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছিল গেরুয়া শিবির। তারই প্রতিফলন হয়েছিল গত লোকসভায়। কুনার ৪৪.৬ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন, আর তৃণমূলের বিরবাহা সরেন টুডু ৪৩.৭ শতাংশ ভোট। ১১ হাজার ভোটে জিতেছিলেন কুনার। তবে গত বিধানসভা, পুরসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে কার্যত নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে তৃণমূল। গত পঞ্চায়েত ভোটে ঝাড়গ্রামে একটিও গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করতে পারেনি বিজেপি। ফলে, লোকসভায় নতুন মুখের পক্ষেই সওয়াল করেছেন
জেলা নেতৃত্ব।

রয়েছে স্থানীয়স্তরে বিজেপির গোষ্ঠী রাজনীতিও। বর্তমান জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে কুনারের বনিবনা নেই। কুনারের অনুগামীরা জেলা রাজনীতিতে কোণঠাসা। এই জেলায় গেরুয়া সংগঠনের অবস্থাও ভাল নয়। ফলে, মাত্র ১১ হাজার ভোটে জেতা কুনারকে এ বার প্রার্থী করাটা ঝুঁকির বলেই রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছেন জেলা নেতৃত্ব। আর সেই গোঁসাতেই সম্ভবত কুনারের এই সিদ্ধান্ত।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Jhargram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE