গণনা কেন্দ্রের পাঁচিলের উপরে টিন বাঁধা হচ্ছে। রবিবার সিউড়ির শিল্প বিদ্যাপীঠে। ছবি: তাবস বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাত পোহালেই সিউড়ির শিল্প বিদ্যাপীঠে শুরু হবে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের ভোট গণনা। তার আগে সম্পূর্ণ গণনা কেন্দ্রকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। গণনা কেন্দ্রে ঢোকার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র দেখাতে হচ্ছে সমস্ত কর্মীকেই। গণনার দিনেও গণনা কর্মীদের জন্য নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে দাবি, আগের নির্বাচনে গণনা কেন্দ্রে কী কী সমস্যা হয়েছে, তা মাথায় রেখেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সমস্ত রকম গন্ডগোল এবং অতি উৎসাহী দলীয় কর্মীদের উচ্ছ্বাস আটকাতেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
রবিবার সিউড়ির গণনা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেল বাঁশের ব্যারিকেডে ঘিরে দেওয়া হয়েছে গণনা কেন্দ্রে ঢোকার সমস্ত পথ। দু’দফায় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় খতিয়ে দেখে তবেই সেই পথ দিয়ে ভিতরে ঢুকতে পারবেন গণনার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাউন্টিং এজেন্টদের গণনা কেন্দ্রে ঢোকার জন্য যে নির্দিষ্ট পথ তৈরি করা হয়েছে সেখানেও যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গণনা কেন্দ্র থেকে দু’দিকেই ১০০ মিটার পর্যন্ত বাঁশের ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছে। নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র ছাড়া সেই ব্যারিকেডের ভিতর কেউই ঢোকার অধিকার পাবেন না বলে জানা গিয়েছে প্রশাসন সূত্রে। পাশাপাশি, বাইরে থেকে যাতে গণনা কেন্দ্রের ভিতরের গতিবিধি দেখতে পাওয়া না যায়, তার জন্য সীমানা প্রাচীরের উপরের অংশ টিন দিয়ে সম্পূর্ণ ঘিরে ফেলার কাজও শুরু হয়েছে। গণনা কেন্দ্রের আশেপাশে যাতে দলীয় কর্মীদের অতিরিক্ত জমায়েত না হয় তা নিশ্চিত করতেও রাজ্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে চার দিকে ছড়িয়ে রাখা হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
বিশেষ নিরাপত্তা জনিত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে গণনা কর্মীদের ক্ষেত্রেও। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গণনা কর্মীদের নিয়ে আসার জন্য বাস ও গাড়ির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর বাইরেও যদি কেউ নিজস্ব মোটরবাইক বা গাড়ি নিয়ে গণনা কেন্দ্রে আসতে চান তা হলে গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে গণনা কেন্দ্রের ভিতরেই। গণনা কর্মীদের মোবাইল ফোন না নিয়ে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে। তার পরেও যদি কেউ মোবাইল ফোন নিয়ে আসেন, তা হলে তা রাখার জন্য গণনা কেন্দ্রের ভিতরে দু’টি কাউন্টার করা হয়েছে। ঢোকার মুখে মোবাইল বন্ধ করে সেই কাউন্টারে জমা করতে হবে এবং সমস্ত কাজ শেষ করে গণনা কেন্দ্র থেকে বেরোনোর সময় মোবাইল ফেরত পাবেন কর্মীরা। একই সঙ্গে ব্যক্তিগত প্রয়োজনের ওষুধ এবং গণনা কর্মীর প্রয়োজনীয় নথি ছাড়া আর কিছু নিয়েই কর্মীরা ভিতরে প্রবেশ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছে প্রশাসন। পানীয় জল, সাধারণ শরীর খারাপের ওষুধ, ওআরএস, গ্লুকোজ জল, টিফিন ও দুপুরের খাবার- সবই প্রশাসনের তরফ থেকেই ব্যবস্থা করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
জেলার এক উচ্চ পদস্থ আধিকারিক বলেন, “গণনা কেন্দ্রের ভিতরে যাতে কোনও রকম অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করতেই হবে। পাশাপাশি, গণনা পদ্ধতি বা গণনা কর্মীদের নিয়ে যাতে কোনও রাজনৈতিক দল কোনও অভিযোগ তুলতে না পারে, সেই দিকেও আমরা নজর রাখছি। প্রত্যেক গণনা কর্মীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, নিজেদের ব্যক্তিগত রাজনৈতিক পছন্দের ছাপ যেন তাঁদের কাজে বা মুখে, চোখে প্রকাশ না পায়। তেমন হলে প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ করবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy