অভিযোগপত্রের প্রতিলিপি দেখাচ্ছেন জাকির। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হোসেনকে দুষ্কৃতীরা খুনের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ। বিধায়কের অভিযোগ, তিন দিন ধরে বার বার তাঁর ব্যক্তিগত ফোনে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ করে ওই হুমকি দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, যে ফোন থেকে মেসেজগুলি পাঠানো হয়েছে তার মালিককে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঝাড়খণ্ড থেকে তাকে সুতি থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। এ নিয়ে পুলিশ কিছু না জানালেও এই হুমকির পিছনে রাজনৈতিক বা ব্যবসায়িক রেষারেষি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জাকির পুলিশকে জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে একটি নির্দিষ্ট নম্বর থেকে একাধিক দিনে এসেছে এই সব হুমকি মেসেজ। তিনি নিয়মিত হোয়াটস্যাপ দেখেন না। শুক্রবার মেসেজগুলি তাঁর নজরে আসে। তারপর থেকে আতঙ্কে বিধায়কের পুরো পরিবার। শনিবারই সুতি থানায় মোবাইল নম্বরটির বিষয়ে জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন জাকির। তিনি বলেছেন, “আমাকে ও আমার পরিবারের বাকি সদস্যদের বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। আমার আশঙ্কা, নিমতিতা স্টেশনে হামলার মতো কোনও ঘটনা ঘটিয়ে আমাকে এবং পুরো পরিবারকে নিকেশ করার চক্রান্ত করেছে দুষ্কৃতীরা।”
রবিবারও আতঙ্কে কাটেনি তাঁর। জাকির বলেন, “তিন বছর আগে বোমা বিস্ফোরণে আমাকে মারার চেষ্টা হয়েছিল নিমতিতা স্টেশনে। সেই হামলার ক্ষত এখনও বয়ে চলেছি। আহত ২৭ জনের কারও পা বাদ গিয়েছে, কারও হাত-পা দুই-ই। ওই হামলার সুবিচার পাইনি। তার মধ্যেই এই হুমকি। আমার সন্দেহ, স্থানীয় কিছু লোক এর সঙ্গে যুক্ত আছে। আমি জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পাই। তার পরেও এই হুমকি পেয়ে আমার পরিবার আতঙ্কে রয়েছে।’’
জাকির আরও বলেন, ‘‘নিমতিতা-কাণ্ডে এখনও সকলে গ্রেফতার হয়নি। হতে পারে তার সঙ্গে এই হুমকির যোগ রয়েছে। আমি এখনও দলনেত্রী বা রাজ্য নেতাদের হুমকির বিষয়ে কিছু জানাইনি তাঁরা সকলে নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত আছেন বলে।’’
পুলিশ অবশ্য হুমকির অভিযোগ পেয়েই তৎপর হয়েছে। ওই মোবাইল নম্বর চিহ্নিত করে তার মালিককে ঝাড়খণ্ড থেকে তুলে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছে তারা। জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় বলেন, “এফআইআর করা হয়েছে। মোবাইলের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্তে সব পরিষ্কার হবে।”
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি নিমতিতা স্টেশনে ট্রেন ধরতে যাওয়ার পথে বোমা বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়েছিলেন জাকির এবং তাঁর ২৭ জন অনুগামী। হামলায় জাকিরের বাঁ পা মারাত্মক ভাবে জখম হয়। তারপর থেকেই তাঁর পায়ের চিকিৎসা চলছে। স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরাও করতে পারেন না। আগামী জুলাইয়ে তামিলনাড়ুর কোয়ম্বত্তূরে তাঁর পায়ে ফের অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা। ওই বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত করছে এনআইএ। এ পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত এখনও চলছে। বিস্ফোরণে জঙ্গিযোগ রয়েছে নিশ্চিত হয়ে ইউএপিএ আইনের ১৬ ও ১৮ ধারা যুক্ত করেছে এনআইএ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy