Advertisement
Back to
Mamata Banerjee

‘সায়নীকে এখানকার তৃণমূলই হারিয়েছিল’, লোকসভা ভোটের আগে বিধানসভা নিয়ে ক্ষোভ জানালেন মমতা

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আসানসোল দক্ষিণ আসন থেকে তৃণমূলের টিকিটে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন সায়নী। তিনি পরাজিত হন বিজেপির অগ্নিমিত্রা পালের কাছে।

Sayani Ghosh and Mamata banerjee

সায়নী ঘোষ এবং মমতা বন্দোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০২:৪৫
Share: Save:

সায়নী ঘোষ হারেননি। তাঁকে জেলা তৃণমূলের নেতারাই হারিয়েছিলেন। সোমবার দলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতৃত্বের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে এমনটাই বলেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, তাঁর কাছে সব খবর থাকে। একই সঙ্গে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের উদ্দেশে তাঁর হুঁশিয়ারি, দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলে ছেড়ে কথা বলা হবে না।

মঙ্গলবার থেকে পর পর তিন দিন তিন জেলায় প্রশাসনিক সভা করবেন মমতা। পাশাপাশি, প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করার কথা তাঁর। মঙ্গলে পুরুলিয়া, বুধে বাঁকুড়ার খাতড়া এবং বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রামের সভা করে কলকাতায় ফেরার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। তার আগে সোমবার রাতে পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে দুর্গাপুর সার্কিট হাউসে বৈঠক করেন তৃণমূলনেত্রী। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক, মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, দলের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন দাসু, আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায়-সহ জেলা নেতৃত্বের অনেকেই। তৃণমূল সূত্রে খবর, ওই বৈঠকে আলোচনার বিষয় ছিল— আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি। একই সঙ্গে বিধানসভা ধরে ধরে আসানসোল লোকসভা আসনে তৃণমূল প্রার্থীকে জেতানোর রূপরেখা তৈরি করা। বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের সূত্রে জানা গিয়েছে, আলোচনা চলাকালীন আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার কথা উঠতেই রেগে যান মমতা। তাঁর মন্তব্য, সায়নী ঘোষ হারেননি। তাঁকে দলের জেলা নেতারা হারিয়ে দিয়েছেন। মমতা বলেছেন, সব খবর তাঁর কাছে থাকে।

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আসানসোল দক্ষিণ আসন থেকে তৃণমূলের টিকিটে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন সায়নী। তিনি পরাজিত হন বিজেপির অগ্নিমিত্রা পালের কাছে। ভোটের ফল ঘোষণার পর সায়নী অভিযোগ করেছিলেন, দলের কর্মীদের একাংশের অন্তর্ঘাতের জেরেই নির্বাচনে হেরেছেন তিনি। ওই বছরের অগস্টে সায়নী বলেছিলেন, ‘‘কিছু ভাল খেলা হয়েছে। কিছু খারাপ খেলা হয়েছে। তুমিও জানো, আমিও জানি, কে ঠিক করে খেলেছে, কে ভুল করে খেলেছে। কে দলের হয়ে খেলেছে, কে দলের বিরুদ্ধে খেলেছে। সব থেকে বেশি কর্মীরা জানেন।’’

সোমবারের বৈঠকে থাকা নেতৃত্বের ওই সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, শুরুতেই দলনেত্রী মন্তব্য করেন, কেউ কেউ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পশ্চিম বর্ধমান জেলা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার কয়েকটি আসন বিজেপির হাতে তুলে দেওয়া হবে। যাতে ইডি-সিবিআই যেন তাঁকে কোনও ভাবে বিরক্ত না করে। এই ধরনের চিন্তাভাবনা যিনি করছেন তিনি ঠিক করছেন না বলেই মন্তব্য করেন মমতা। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী হুমকি দেন, দলে থেকে যদি কেউ দলের সঙ্গে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করেন, তা হলে তাঁকে ছেড়ে কথা বলা হবে না।

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন দলনেত্রী। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনকে নির্বাচন পর্যন্ত পিছনের সারিতে থাকার পরামর্শ দেন তিনি। কারণ হিসাবে তিনি জানান, ওই সংগঠনের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ তাঁর কানে এসেছে। দলের কর্মীদের ছেড়ে বিরোধী দলের কর্মীদের বিভিন্ন কলকারখানা বা সরকারি-বেসরকারি জায়গায় চাকরিতে ঢোকানোর কথাও তিনি শুনেছেন বলে মন্তব্য করেন মমতা। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, মমতা মন্তব্য করেন, যাঁরা এ রকম করেছেন, তাঁরা ঠিক কাজ করেননি। তাঁদের ভেবেচিন্তে কাজ করার পরামর্শও দেন তিনি। দুর্গাপুর-বর্ধমান লোকসভা আসনে কাকে প্রার্থী করা হবে তা খোলসা না-করলেও মমতা জেলা নেতৃত্বকে আশ্বস্ত করেছেন যে, সেখানে ভাল প্রার্থীই দেওয়া হবে। তাঁর নির্দেশ, বিধানসভার যে সব আসনে তৃণমূলের বিধায়ক রয়েছেন, সেই সব আসনে লোকসভা ভোটে তাঁকেই দায়িত্ব নিয়ে জয়ী করতে হবে তৃণমূল প্রার্থীকে। বাকি আসনের দায়িত্ব জেলা নেতৃত্বের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE