Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Narendra Modi Mamata Banerjee

মমতার পুঁজিতে ধাক্কা দিতে চান মোদী, পাল্টা চাল দিদির, একই দিনে দু’জনের মুখে আইসিডিএস-অঙ্গনওয়াড়ি

রাজনীতিতে ‘সময়’ বা ‘টাইমিং’ একটা বড় ব্যাপার। সে দিক থেকে বুধবার প্রধানমন্ত্রী মোদীর বারাসতের সভার আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতার ঘোষণা রাজনৈতিক ভাবে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই অভিমত অনেকের।

Narendra Modi wants to hit TMC\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s women vote bank, Mamata Banerjee wants to keep support intact

নরেন্দ্র মোদী-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৪ ২১:৫১
Share: Save:

ব্যবধান প্রায় আড়াই ঘন্টার। রাজ্যে মহিলা ভোট নিয়ে একই দিনে আসরে নেমে পড়লেন দুই যুযুধান নরেন্দ্র মোদী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বারাসতে বুধবার বিজেপির মহিলা সম্মেলনের মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী মোদী দু’টি বিষয় তুলে ধরেছেন। এক, সন্দেশখালির প্রসঙ্গ তুলে মোদী বোঝাতে চেয়েছেন বাংলায় মহিলারা কী দুর্দশায় রয়েছেন। এবং দুই, গোটা দেশের মহিলাদের স্বনির্ভর করার জন্য তাঁর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার কী কী প্রকল্প নিয়েছে, তার কী কী বাস্তবায়িত হয়েছে।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

মোদীর সভা শুরুর প্রায় আড়াই ঘণ্টা আগেই বুধবার সকাল ১০টায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ফেসবুকে ঘোষণা করে দেন, রাজ্যের আইসিডিএস, আশা এবং অঙ্গনওয়াড়ি সহায়কদের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বর্ধিত অঙ্কের ঘোষণাও করে দেন মমতা। যে প্রকল্পের উপভোক্তারা সকলেই মহিলা। মুখে কেউই বিশদে কিছু বলেননি বটে। কিন্তু একই দিনে মোদী এবং দিদির এ হেন বক্তৃতা এবং ঘোষণার পরে এটা সহজবোধ্য যে, বাংলার মহিলা ভোটের কথা মাথায় রেখেই প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী যা বলার বলেছেন।

২০০৯ সালের লোকসভা ভোটেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, বাংলার মহিলা ভোটের বেশির ভাগটাই ‘দিদি’র বাক্সে গিয়ে পড়েছে। তার পরে ২০১১ থেকে ২০২১ পর্যন্ত প্রায় সব ভোটেই দেখা গিয়েছে, বাংলার মহিলা ভোটকে কার্যত ‘পুঁজি’ করে ফেলেছে তৃণমূল। বিজেপির একটি সূত্রের বক্তব্য, মমতার সেই পুঁজিতে এ বার ভাগ বসাতে চাইছেন মোদী। মমতাও সেই ভোট রক্ষা করতে মরিয়া।

বারাসতের সভায় মোদী যে সন্দেশখালির প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূল তথা মমতার সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাবেন, তা কারওর অজানা ছিল না। মমতার মতো পোড়খাওয়া রাজনীতিকও জানতেন, কী স্তরে আক্রমণ হতে পারে। অতএব, দ্রুত ফেসবুকে সরকারি নীতি সংক্রান্ত ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেন মমতা। এবং মোদীর সভার আগেই। এই প্রথম ফেসবুকের মতো কোনও ডিজিটাল মাধ্যমে কোনও সরকারি ঘোষণা করলেন মমতা। তার ‘টিজ়ার’ দেওয়া হল মঙ্গলবার রাতে। ঘোষণা করা হল, বুধবার সকাল ১০টায় ‘গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা’ করা হবে। ঘটনাচক্রে, বারাসতের সভার আগে মোদী কলকাতার মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। সেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতাও আমন্ত্রিত ছিলেন। কিন্তু তিনি যাননি। রেলের খাতায় মোদীর কর্মসূচির সময়কাল ছিল সকাল সওয়া ১০টা। তার ঠিক ১৫ মিনিট আগে মমতা ফেসবুকে ওই ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ঘোষণাটি করেন।

মুখ্যমন্ত্রী ফেসবুকে সংক্ষিপ্ত ভিডিয়ো বার্তায় জানান, আশাকর্মীদের বেতন ৭৫০ টাকা বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁর সরকার। এ ছাড়া, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি পাবে ৭৫০ টাকা। আইসিডিএস সহকারী বা আইসিডিএস সহায়কদের বেতনও প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে বৃদ্ধি পাবে। এপ্রিল মাস থেকেই নতুন বর্ধিত বেতনক্রম কার্যকর হবে।

মমতা যেমন আইসিডিএস, অঙ্গনওয়াড়ি, আশাকর্মীদের বেতনবৃদ্ধির কথা বলেছেন, তেমনই মোদীর মুখে আয়ুষ্মান যোজনায় সেই আইসিডিএস, অঙ্গনওয়াড়ি, আশাকর্মীদেরই যুক্ত করার কথা শোনা গিয়েছে। জেলায় জেলায় সরকারি পরিষেবা প্রদান কর্মসূচিতে গিয়ে মমতা ধারাবাহিক ভাবে বলছেন, কেন্দ্রীয় সরকার আগে আশা, আইসিডিএস কর্মীদের বেতনের ৯০ শতাংশ দিত। এখন সবটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যই সবটা দেয়। মমতার কথায়, ‘‘ওরা কাড়তে জানে, আমরা দিতে জানি।’’

২০২১ সালের ভোটে যখন বিজেপি সারা দেশের সাংগঠনিক শক্তিকে এই রাজ্যে নামিয়ে দিয়েছিল, তখন মমতার মুখে ছিল ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এর প্রতিশ্রুতি। অনেকের মতে, ভোটে দিদির ওই প্রতিশ্রুতি মহিলা ভোট ভাঙতে দেয়নি। বরং বাক্সের বাইরে থাকা ভোটকেও তাঁর দিকে টেনে এনেছিল। সরকারে আসার পর সেই প্রকল্প শুধু বাস্তবায়িতই হয়নি, তিন বছর যেতে না যেতেই টাকার অঙ্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে। এপ্রিল মাস থেকেই রাজ্যের দু’কোটির বেশি মহিলা সেই বর্ধিত টাকা পাবেন। এক দিকে মোদী যখন সন্দেশখালি তুলে ধরে মহিলাদের ‘দুর্দশা’কে প্রচারের অভিমুখ করছেন, তখন মমতা মহিলা ভোটকে আরও সুরক্ষিত রাখতে সরকারি ও রাজনৈতিক ঘোষণা করছেন। পাশাপাশি, মোদীকে বিঁধতে তৃণমূলও প্রশ্ন তুলছে, যে মোদী সন্দেশখালি নিয়ে এত কথা বলতে পারেন, তিনি কেন একবার মণিপুর যেতে পারেন না? কেন লোকসভায় তাঁর সঙ্গে বসেন মহিলা কুস্তিগীরদের যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ? যা থেকে স্পষ্ট, মহিলা ভোট ভাঙতে চায় বিজেপি। অটুট রাখতে চান মমতা।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE