E-Paper

মঞ্চে মোদী, সন্দেশখালি নিয়ে চড়া সুর বিজেপির, বঙ্গে ক্ষমতায় আসার দাবি নড্ডার

দু’দিনের ওই বৈঠকে যোগ দিতে রাজ্য থেকে প্রায় সাড়ে তিনশো প্রতিনিধি যোগ দিয়েছেন। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার শনিবার রাতে দিল্লি পৌঁছন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:০৮
bjp

দিল্লিতে বিজেপির জাতীয় সম্মেলন। ছবি: পিটিআই।

ভারত মণ্ডপমে উঠে এল সন্দেশখালি প্রসঙ্গ।

আজ থেকে দিল্লিতে শুরু হয়েছে বিজেপির জাতীয় সম্মেলন। মূলত আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বৃহত্তর ভাবে দলের রণকৌশল ঠিক করতেই ওই বৈঠক ডেকেছে দল। সেই বৈঠকেই আজ সন্ধ্যায় ‘বিকশিত ভারত’ প্রস্তাব আনেন বিজেপি নেতা রাজনাথ সিংহ। তাতে সরকারের নানা সাফল্যের কাহিনির সঙ্গেই স্থান করে নিয়েছে সন্দেশখালি প্রসঙ্গ।

মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে দায়িত্ববোধ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করে রাজনাথ বলেন, ‘‘আমাদের দেশের একটি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। কী হচ্ছে সেখানে! নারীদের সঙ্গে কী ধরনের অত্যাচার করা হচ্ছে! তাঁদের ইজ্জত ও অস্মিতা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের সন্দেশখালিতে যা হয়েছে এবং আমাদের দলীয় কর্মীরা যে সাহসের সঙ্গে ওই অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়ছেন, তাতে আমি আমাদের কর্মীদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। এই ধরনের ঘটনা সভ্য সমাজের কলঙ্ক। কঠোর নিন্দা হওয়া উচিত।’’

সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই জাতীয় স্তরে সক্রিয় রয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। গত কালই সন্দেশখালিতে হওয়া ঘটনার প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসনের সুপারিশ করে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি দিয়েছেন জাতীয় তফসিলি কমিশনের অন্তর্বর্তী চেয়ারম্যান অরুণ হালদার। দল যে সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর নিগ্রহের ঘটনাটিতে গুরুত্ব দিচ্ছে, তা বোঝাতেই বিষয়টি প্রস্তাবের আওতায় নিয়ে আসা হয়। আগামী দিনে ওই ঘটনাকে বৃহত্তর প্রচারের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহারের লক্ষ্য নিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তৃণমূল নেতৃত্বের পাল্টা দাবি, বিজেপি নেতারা উন্নাও, হাথরাসে হওয়া মহিলাদের উপর অত্যাচার নিয়ে চোখ বন্ধ রাখেন। মহিলা কুস্তিগিরদের যৌন হেনস্থা এদের চোখে পড়ে না। মণিপুরে এক বছর ধরে অস্থিরতা নিয়েও বিজেপি চুপ। কিন্তু ধর্মীয় মেরুকরণের সুযোগ থাকায় বিজেপি সন্দেশখালি ঘটনায় ইন্ধন দিতে চাইছে।

এ দিকে যে গতিতে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি শক্তিবৃদ্ধি করছে, তাতে আগামী দিনে দল ওই রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে চলেছে বলে দাবি করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। সন্দেশখালি ঘটনা নিয়ে যখন জাতীয় রাজনীতি উত্তাল, তখন নড্ডার ওই বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে কোন রাজ্যে দলের ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, তার উদাহরণ দিতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রসঙ্গ টেনে আনেন নড্ডা। তিনি বলেন, ‘‘অতীতে পশ্চিমবঙ্গে মাত্র ১০ শতাংশ ভোটার ছিল দলের। দল জিতেছিল মাত্র তিনটি আসনে। কিন্তু গত বিধানসভায় দল ভোট পায় ৩৮.৫ শতাংশ। আসনপ্রাপ্তির সংখ্যা তিন থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ৭৭-এ। আগামী দিনে ওই রাজ্যে ক্ষমতায় আসতে চলেছে দল।’’ নড্ডা কোনও সময়সীমা না দিলেও বৈঠকে যোগ দেওয়া রাজ্য নেতাদের বক্তব্য, ‘‘দুর্নীতির ঘটনা থেকে সন্দেশখালির যৌন নিগ্রহের অভিযোগ— তৃণমূলের পালানোর রাস্তা ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। মানুষ আগামী বিধানসভা নির্বাচনেই তৃণমূলকে রাজ্য থেকে মুছে দেবে।’’

দু’দিনের ওই বৈঠকে যোগ দিতে আজ রাজ্য থেকে প্রায় সাড়ে তিনশো প্রতিনিধি যোগ দিয়েছেন। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার শনিবার রাতে দিল্লি পৌঁছন। সূত্রের মতে, আগামিকাল তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করে সন্দেশখালির ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে পারেন। তা ছাড়া রাজ্যওয়াড়ি আলোচনার ক্ষেত্রে রাজ্যের ভোট প্রস্তুতি নিয়ে বলার ক্ষেত্রেও সুকান্তই সম্ভবত বক্তব্য রাখবেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJP sandeshkhali PM Narendra Modi Sandeshkhali Incident Lok Sabha Election 2024

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy