—প্রতীকী ছবি।
ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, তিনি বুথে ঢুকে ইভিএম আর ভিভিপ্যাট মেশিন ভেঙে ফেলছেন। ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করা হয়নি বটে। তবে প্রাথমিক ভাবে বিধায়ককে চিহ্নিত করছেন সকলেই। এই রকম গুরুতর অভিযোগের মুখে হাই কোর্ট কী ভাবে তাঁকে অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ দিয়ে রাখল? সোমবার সু্প্রিম কোর্ট এই প্রশ্নই শুধু তুলল না, রীতিমতো বিরক্তির সঙ্গে বলল, ‘‘আমাদের নিয়ে কি রসিকতা করা হচ্ছে? এ তো প্রহসন!’’
ঘটনাটা অন্ধ্রপ্রদেশের। অভিযোগের আঙুল ওয়াইএসআর কংগ্রেসের বিধায়ক পি রামকৃষ্ণ রেড্ডির দিকে। সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যাওয়া একটি ভিডিয়ো ক্লিপিংয়ে দেখা যাচ্ছে, তিনি এবং তাঁর সাঙ্গোপাঙ্গরা ১৩ মে একটি বুথে হানা দিয়ে টেবিল থেকে ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট মেশিন তুলে নিয়ে মেঝেতে আছড়ে ফেলছেন। পুলিশ কিন্তু এফআইআর-এ তাঁর নাম লেখেনি। অভিযোগ রুজু হয়েছে ‘অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি’র নামে। তা সত্ত্বেও রেড্ডি গা-ঢাকা দেন। তার ক’দিন পরেই এসে যায় আদালতের রক্ষাকবচ।
কী বলেছিল হাই কোর্ট?
বিচারপতি ভেঙ্কট জ্যোতির্ময়ী বিধায়ককে ৫ জুন সকাল ১০টা অবধি অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ দেন। অর্থাৎ এর মধ্যে পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে কোনও রকম পদক্ষেপ করতে পারবে না, তা নিশ্চিত করা হয়। হাই কোর্টের এই নির্দেশের বিরুদ্ধেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন বিরোধী দল টিডিপি-র পোলিং এজেন্ট নাম্বুদ্রি শেষগিরি রাও। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, গণনার সময়েও এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে।
আজ সু্প্রিম কোর্টে বিচারপতি অরবিন্দ কুমার এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার অবকাশকালীন বেঞ্চ হাই কোর্টের নির্দেশকে কার্যত তুলোধোনা করেছেন। তিরস্কৃত হয়েছে পুলিশের ভূমিকাও। বিচারপতিরা প্রশ্ন করেছেন, ‘‘আমাদের নিয়ে কি রসিকতা করা হচ্ছে? এ তো প্রহসন! এই রকম মামলায় অন্তর্বর্তী সুরক্ষা হয় কী করে? যদি এই নির্দেশ আমরা স্থগিত না করি, তা হলে গোটা ব্যবস্থাটাই একটা মস্করায় পরিণত হবে।’’ শেষ পর্যন্ত স্থগিতাদেশ অবশ্য দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। রেড্ডির আইনজীবী জানান, শীর্ষ আদালতের সব কথা মানবেন তাঁর মক্কেল। সেই মোতাবেক সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, আগামী কাল ভোট গণনার দিন রেড্ডি কোনও গণনাকেন্দ্রে যেতে তো পারবেনই না, গণনাকেন্দ্রের ত্রিসীমানাতেও থাকতে পারবেন না। হাই কোর্টে বৃহস্পতিবারই রেড্ডির মামলার শুনানি হওয়া চাই এবং সেই পর্বে অন্তর্বর্তী সুরক্ষার প্রসঙ্গ যেন কোনও রকম প্রভাব না ফেলে। প্রসঙ্গত অন্ধ্রে লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই বিধানসভা নির্বাচনও হচ্ছে।
এ দিন শুনানি চলাকালীন রেড্ডির আইনজীবী বলার চেষ্টা করেছিলেন, ওই ভিডিয়োতে যে রেড্ডিকেই দেখা যাচ্ছে, তার প্রমাণ কী? ভিডিয়োর সত্যতারই বা প্রমাণ কী? আবেদনকারীদের পক্ষ থেকে তখন দাবি করা হয়, ভিডিয়োটি নির্বাচন কমিশনের লাইভ ওয়েবকাস্ট থেকেই পাওয়া গিয়েছে। সঙ্গে আরও কিছু স্থিরচিত্রও আছে। রেড্ডির আইনজীবী এই দাবি মানতে চাননি। বিচারপতিরা তখন বলেন, অভিযোগকে প্রাথমিক ভাবে সত্য ধরে নিয়েই এগোতে হবে। ভিডিয়োটি আপাত ভাবে ভুয়ো বলে মনে হচ্ছে না, এই মন্তব্যও করেন বিচারপতি মেহতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy