ছিল জনগর্জনের সভার প্রস্তুতি সভা। হয়ে উঠল লোকসভা নির্বাচনের প্রচার সভা। আর সেই সভার পরেই সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে সরাসরি আক্রমণ করলেন বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায়। দাবি করলেন, সাধারণ মানুষের ‘বিশ্বাসভঙ্গের’ দায় নিতে হবে প্রাক্তন বিচারপতিকেই।
বৃহস্পতিবার সিউড়ি ১ ব্লকের পানুরিয়া গ্রামের এই সভার পরে সাংসদ বলেন, “আপনার প্রতি দুই চার জন মানুষের বিশ্বাস ভরসা এসেছিল। কিন্তু আপনি যে পদে ছিলেন, সেই পদের এবং নিজের সম্মান নষ্ট করে বিচার ব্যবস্থাকে অসম্মান করলেন। এর দায় কিন্তু আপনাকে নিতেই হবে।” শতাব্দীর দাবি, “আপনার এত বড় বড় আদর্শের কথা, আপনি এত লোককে চোর বলছেন। কিন্তু শুধু টাকা নিলেই তো চোর হয় না, সম্মানকে বিক্রি করাও চুরি। আপনি মানুষকে বিভ্রান্ত করে নিজের ক্ষমতাকে বিক্রি করেছেন, এটা কি চুরি নয়?”
পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি বিজেপিও। বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি বাবন দাস বলেন, “আইন মানা এবং সম্মান এই দু’টি বিষয় নিয়েই তৃণমূলের কথা বলা মানায় না। তৃণমূল নানা ক্ষেত্রে হাই কোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের আদেশ না মেনে আসলে বিচার ব্যবস্থাকে অসম্মান করেছে। আর ওদের যদি নিজেদের সম্মান বোধ থাকত, তা হলে রাজ্য জুড়ে দুর্নীতি দেখার পরে আর বাড়ির বাইরেই বের হত না। তাই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ঠিক ভুল বিচার করার আগে ওঁরা নিজেদের দিকে তাকিয়ে দেখুন।’’
এ দিনের সভায় শতাব্দী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শ্রম ও আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক, বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী-সহ জেলা তৃণমূলের অন্য নেতারা। সকলের বক্তব্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা এবং রাজ্য সরকারের জনদরদী নীতির কথা উঠে আসে। সভায় সিউড়ি শহর ও সিউড়ি ১ ব্লক থেকে প্রায় ৩০টি বাস ও বহু গাড়িতে করে কর্মী, সমর্থকদের এনে কয়েক হাজার জমায়েতও করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত বিগত লোকসভা নির্বাচনে সিউড়ি ১ ব্লকে বিজেপির থেকে অনেকটাই পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। তাই এ দিনের বক্তব্যে বিজেপিকেই নিশানা করেন বক্তারা। মলয় বলেন, “নরেন্দ্র মোদী চা বানাতে জানতেন না, শুধু বিক্রি করতে জানতেন৷ তাই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেও তিনি দেশে কিছু বানানোর পরিবর্তে রেল থেকে শুরু করে বিমান পর্যন্ত সব কিছুই বিক্রির কাজ করে চলেছেন।” সাংসদ বলেন, “আমরা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ বা ২ কোটি চাকরির মতো মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চাই না। আমরা যে প্রতিশ্রুতি দিই, তা পালন করে তার পরেই ভোট চাই।”
বাবন বলেন, “তৃণমূল যতই চেষ্টা করুক, জেলার অধিকাংশ জায়গায়ই ওদের পায়ের তলায় মাটি নেই। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ওই ব্লকে ওরা আরও বেশি ভোটে পিছিয়ে যাবে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)