E-Paper

সুনীল-অর্জুনের দলবদলের প্রসঙ্গ তুলে প্রচার বামেদের

প্রণব দেবনাথ

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৪ ০৮:১৪
Representative Image

—প্রতীকী ছবি।

এ বার প্রার্থিপদ মেলেনি। সে কারণে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে ভোট ময়দানে নামেননি বর্ধমান পূর্বের বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল। তবে না থেকেও প্রবল ভাবে সিপিএমের প্রচারে আছেন তিনি।

রাজ্যে ক্ষমতার পালাবাদলের পরেই বামফ্রন্ট বিধায়ক সুনীল যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলে। পরের লোকসভা ভোটে পেয়ে গিয়েছিলেন তৃণমূলের টিকিটও। ২০১৯ লোকসভা ভোটেও তাঁকে প্রার্থিপদ দিয়েছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন গত বিধানসভা ভোটের আগে। ভোটের পরে ফের ফেরেন তৃণমূলে। এ বার আর সুনীলকে টিকিট দেননি মমতা। সুনীলকে দলের হয়ে মাঠে নামতে দেখা যায়নি। তাঁর বারবার শিবির পরিবর্তনকে লোকসভা ভোটের প্রচারে হাতিয়ার করেছেন ওই কেন্দ্রীয় বামফ্রন্ট প্রার্থী নীরব খাঁ। শুধু সুনীল নয়, ভোটের প্রচারে বামকর্মীরা তুলে আনছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহের বারবার শিবির বদলানোর বিষয়টিও। সুনীলের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার সম্পর্কে কে, কী বলছে, তা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।’’

সিপিএম কর্মীরা প্রচারে বেরিয়ে ঘরে ঘরে বার্তা দিচ্ছেন, এক মাত্র বামপন্থীরাই আদর্শ বদল করে না। প্রকৃত উন্নয়নের দিশা দেখাতে পারেন তাঁরাই। তৃণমূল রাজ্য এবং বিজেপি দেশটাকে শেষ করে দিচ্ছে। কাটোয়া আখড়া গ্রামের সিপিএম কর্মী মাধাই ঘোষ বলেন, “তৃণমূল বা বিজেপি প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার মানেই ভোট নষ্ট করা। এই কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। আবার তৃণমূলে ফিরে আসেন।’’ তাঁর দাবি, ভোটারদের বড় অংশ বামপ্রার্থীকে ভোট দেবেন বলে আশ্বাস দিচ্ছেন।

কাটোয়ার বাসিন্দা মানস ভট্টাচার্য বলেন, “ভোটে জেতার পরে জন প্রতিনিধিদের দলবদল করা গণতন্ত্রের পক্ষে খারাপ। তবে এ রোগে সিপিএমও আক্রান্ত। আবু আয়েস মণ্ডলের মতো অনেক সিপিএম বিধায়ক দল ছেড়ে তৃণমূলে গিয়েছেন। দলীয় আর্দশের থেকে ব্যক্তিস্বার্থই তাঁদের কাছে বড়।”

কাটোয়ার সিপিএম নেতা সুজিত রায়ের দাবি, “মানুষ তৃণমূল ও বিজেপিকে আর চাইছে না। দু’টো দলের মধ্যে গোপন বোঝাপড়া রয়েছে। এতে রাজ্য ও দেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝাচ্ছি, তৃণমূল ও বিজেপি নিজের স্বার্থে বারবার দল পরিবর্তন করে।”

বামেদের এই প্রচারকে একেবারেই গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। দলের জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “কেন্দ্রের থেকে মানুষের অধিকার একমাত্র তৃণমূলই ছিনিয়ে আনতে পারে। তাই বিরোধীরা যতই চেষ্টা করুন না কেন, মানুষ আমাদের প্রার্থীকেই জেতাবেন।” তাঁকে খোঁচা দিয়ে সিপিএমের প্রচার, দলবদল নিয়ে রবীন্দ্রনাথের বলার মুখ নেই। কারণ তিনি কংগ্রেসের টিকিটে জিতে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন।

জেলা বিজেপি (কাটোয়া সাংগঠনিক) সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “সিপিএম ৩৪ বছর আর তৃণমূল ১৩ বছর ক্ষমতায় থেকে রাজ্যকে রসাতলে পাঠিয়েছে। ওরা যতই চেষ্টা করুক না কেন, পূর্ব বর্ধমানের মানুষ আমাদের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন।” কিন্তু তাঁদের প্রার্থী কে? গোপালের জবাব, ‘‘সময় হলেই জানা যাবে।’’

পূর্ব বর্ধমান লোকসভা কেন্দ্রের সাতটির বেশির ভাগ জায়গাই আগে ছিল সিপিএমের শক্ত ঘাঁটি। যদিও গত লোকসভা ভোটে বামেদের তিনে ঠেলে এই কেন্দ্রে প্রধান বিরোধী দল হয়ে ওঠে বিজেপি। গত পঞ্চায়েত ভোটে হারানো ভোটের কিছুটা ফিরে পেলেও আহামরি ফল হয়নি বামেদের। তবে এই কেন্দ্রে বিজেপি এখনও প্রার্থী ঘোষণা না করায় প্রচারে বামেরা কিছুটা বাড়তি সুযোগ পাচ্ছে বলে মত রাজনীতিকদের একাংশের।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 CPM TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy