Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Arvind Kejriwal

গ্রেফতারে লাভ না ক্ষতি, ধন্দে বিজেপি

গ্রেফতারির সিদ্ধান্তের পক্ষে থাকা অংশের মতে, এই গ্রেফতারি দুর্নীতির বিরুদ্ধে নরেন্দ্র মোদী সরকারের লড়াইকে শক্তিশালী করেছে। কঠোর বার্তা দেওয়া গিয়েছে গোটা দেশকে।

অরবিন্দ কেজরীওয়াল।

অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৪ ০৭:৪৮
Share: Save:

লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে কতকটা আড়াআড়ি ভাগ হয়ে পড়েছে বিজেপি।

গ্রেফতারির সিদ্ধান্তের পক্ষে থাকা অংশের মতে, এই গ্রেফতারি দুর্নীতির বিরুদ্ধে নরেন্দ্র মোদী সরকারের লড়াইকে শক্তিশালী করেছে। কঠোর বার্তা দেওয়া গিয়েছে গোটা দেশকে। কিন্তু অন্য শিবিরের যুক্তি, কেজরীর গ্রেফতারি নিয়ে দিল্লির বাইরে বিজেপির রাজনৈতিক ভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগ বিশেষ নেই। বরং কিছু দিন আগেও যে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চকে যথেষ্ট ছন্নছাড়া দেখাচ্ছিল, কেজরীওয়ালের গ্রেফতারির পরে তারাই নয়া অস্ত্র পেয়ে এককাট্টা হয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছে। সেই ‘ঐক্যের’ প্রভাব অন্যান্য রাজ্যেও ভোগাতে পারে বিজেপিকে। এই সময়ে কেজরীর পক্ষে সহানুভূতির হাওয়া ওঠা অবশ্যই কাম্য নয় বিজেপির।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

পদে থাকা অবস্থায় প্রথম বার কোনও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে গত কাল দিল্লিতে কেজরীওয়াল গ্রেফতার হন। আদালতে ইডি দাবি করেছে, দিল্লির আবগারি কেলেঙ্কারিতে কেজরীওয়ালই ছিলেন পাণ্ডা। তদন্তে পাওয়া গিয়েছে, হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা লেনদেনে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীই ছিলেন মধ্যস্থ। বিজেপি নেতাদের একাংশ এই কারণেই কেজরীর গ্রেফতারিকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই হিসেবে তুলে ধরার পক্ষে। তাঁদের মতে, বিশেষ করে কংগ্রেস, তৃণমূল, আরজেডির মতো দলগুলি কী ভাবে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কেজরীর পাশে দাঁড়িয়েছে, গোটা দেশের মানুষের সামনে সেই প্রচারকে তুলে ধরা গেলে বিজেপিরই লাভ। কিন্তু এই গ্রেফতারিকে দিল্লিবাসী কী ভাবে নেবেন, তা নিয়ে বিজেপিরই আর এক অংশ দোলাচলে। কারণ, বিগত ভোটগুলিতে দিল্লিবাসীর দ্বৈত মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে। লোকসভায় তাঁরা বিজেপিকে সব আসনে জেতালেও বিধানসভায় ঢেলে ভোট দিয়েছেন আপ-কে। সম্প্রতি পুরভোটেও জিতেছে আপ। আপের আমলে দিল্লির নাগরিক পরিষেবায় উন্নতি হয়েছে চোখে পড়ার মতো। ফলে দিল্লিতে আপের পক্ষে যে বিপুল জনসমর্থন রয়েছে, তা অস্বীকারের করার উপায় নেই।

ফলে আশঙ্কা থাকছে, বিরোধীরা এই ঘটনাকে তাদের তথা কেজরীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে ভোট প্রচারে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হলে দিল্লি-সহ দেশের অন্যত্র সমস্যায় পড়তে হবে দলকে। ওই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে থাকা গোষ্ঠীর মতে, কেজরীওয়ালকে জেলে পোরার লাভ মিলবে কেবল দিল্লিতে। কিন্তু গ্রেফতারির সিদ্ধান্তকে মোদী সরকারের ফ্যাসিবাদী মনোভাবের পরিচয় বলে একজোট হয়েছেন বিরোধীরা। দিল্লির রাজনীতিতে কংগ্রেসের দুর্নীতির বিরোধিতা করে ক্ষমতায় এসেছিল আপ। তা সত্ত্বেও শত্রুতা ভুলে দুই যুযুধান শিবির বন্ধুতে পরিণত হয়েছে, যা আগামীতে বিজেপিকে বিপদে ফেলতে পারে।

প্রশ্ন হল প্রতিটি পদক্ষেপ মেপে পা ফেলার পক্ষপাতী বিজেপি কি তা হলে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জনতার নাড়ি বোঝার রাস্তায় হাঁটেনি? কেজরী গ্রেফতার হলে দলের ক্ষতি না লাভ, তা না মেপেই কি তাড়াহুড়ো করে পদক্ষেপ করা হল? অনেকের মতে, আপাত ভাবে ওই সিদ্ধান্ত ‘হঠাৎ’ করে নেওয়া হয়েছে বলে মনে হলেও, আসলে এর জাল বোনা হয়েছে এক বছর আগে থেকে। আবগারি দুর্নীতিতে মণীশ সিসৌদিয়াকে এক বছর আগে গ্রেফতার করে ইডি। সেই সময় থেকে জল মাপা শুরু করে গেরুয়া শিবির। দফায় দফায় কেজরীওয়ালকে যে সমন পাঠানো হচ্ছিল তাতে আপ সমর্থকদের মধ্যে কতটা প্রভাব পড়ে, তাঁরা কতটা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেন, সেই দিকে কড়া নজর রাখছিল দল। আপের দুর্নীতি নিয়েও প্রচার জোরদার হয়। তাই সঙ্ঘবদ্ধ প্রতিবাদ তো দূরে থাক মণীশ সিসৌদিয়ার গ্রেফতারি দিল্লিবাসীর মধ্যে সে ভাবে আলোড়ন ফেলতেই পারে না, যা বিজেপিকে সাহস জোগায় কেজরীওয়ালকে গ্রেফতারি করার মতো সিদ্ধান্ত নিতে।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE