Advertisement
E-Paper

‘রূপকথা’র এই পুলিশ কি বছরভর থাকবে থানায় থানায়?

দফায় দফায় ভোটাভুটি শেষ। এ বার অপেক্ষা পাওনাগণ্ডা বুঝে নেওয়ার। ১৯ মে রাজনৈতিক দলগুলো বুঝে যাবে, কার কী পাওনা হয়েছে। রাজ্যবাসীর কিন্তু একটা নতুন প্রাপ্তি ইতিমধ্যেই ঘটে গিয়েছে। ভোট-বাংলায় এক নতুন পুলিশকে পাওয়া গিয়েছে।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৬ ০০:০০
সরকারে যে দলই আসুক, পুলিশ কি তার এই প্রশংসনীয় দার্ঢ্য ধরে রাখবে? ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী।

সরকারে যে দলই আসুক, পুলিশ কি তার এই প্রশংসনীয় দার্ঢ্য ধরে রাখবে? ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী।

দফায় দফায় ভোটাভুটি শেষ। এ বার অপেক্ষা পাওনাগণ্ডা বুঝে নেওয়ার। ১৯ মে রাজনৈতিক দলগুলো বুঝে যাবে, কার কী পাওনা হয়েছে।

রাজ্যবাসীর কিন্তু একটা নতুন প্রাপ্তি ইতিমধ্যেই ঘটে গিয়েছে। ভোট-বাংলায় এক নতুন পুলিশকে পাওয়া গিয়েছে।

পুলিশ যেন রূপকথার নায়ক এ বার। দশকের পর দশক ধরে বাংলা দেখেছে, ভোট মানেই হিংসার লকলকে আগুন। ভোট মানেই রক্তপাত। ভোট মানেই প্রাণহানি। কিন্তু এত কিছুর মূল্যেও ভোটাধিকার নিশ্চিত ছিল না। নিজের ভোটটা আদৌ নিজে দিতে পারা যাবে কি না, জনমতের সঠিক প্রতিফলন আদৌ এ মুলুকে সম্ভব কি না— ভোট এলেই এমন নানা প্রশ্ন উঁকি দিত বাংলার আনাচে-কানাচে। তার মাঝেও কি ভোট ঠিকঠাক হয়নি কখনও? নিশ্চয়ই হয়েছে। ক্ষমতার অলিন্দে আছড়ে পড়েছে সব কিছু ওলট-পালট করে দেওয়া ঝড়। কিন্তু, জনমতকে অবাধে প্রতিফলিত হতে দেওয়ার কৃতিত্ব কেন্দ্রীয় বাহিনীর কপালের তিলক এঁকে দিয়েছে। রাজ্য পুলিশের নাম শোনা যায়নি কখনও।

এ বার পুলিশের জয়ধ্বনি শোনা গেল। তৃণমূল জমানা শুরু হওয়া ইস্তক এ বারের ভোট ছিল অন্য রকম ভোট। পাঁচটা বছর ধরে যে পুলিশ মাথা বিকিয়ে রেখেছিল শাসকের কাছে, লোকসভা ভোটে, পঞ্চায়েত ভোটে, পুর ভোটে যে পুলিশকে দেখা গিয়েছে শাসকের উর্দিধারী ক্যাডারের মতো আচরণ করতে, সেই পুলিশে এ বার অবিশ্বাস্য দার্ঢ্য। শাসকের কঠোর শাসানি সত্ত্বেও মাথা নোয়ানো নেই। রাজনৈতিক ঝোঁক নেই। পক্ষপাত শুধু গণতন্ত্রের প্রতি, জনমতের অবাধ প্রতিফলনের প্রতি।

পুলিশের এই নতুন অবতার কি চিরন্তন হবে? সরকারে যে দলই আসুক, পুলিশ কি তার এই প্রশংসনীয় দার্ঢ্য ধরে রাখবে? না কি নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণ খসে খসতেই আবার ঢলে পড়বে সরকারের নিয়ন্ত্রকদের দিকে?

যা কিছু ইতিবাচক, আশার রাজ্যে তাদের ঠাঁই দিতেই হয়। পুলিশ এমন রূপকথার নায়কোচিত হয়ে দেখা দিলে আশা-আকাঙ্ক্ষার দিগন্তে তা নতুন ভোর আনে বই কি? পুলিশ যদি এই ভূমিকায় অটল থাকে, তা হলে সাধারণ নাগরিকের জন্য অসীম ভরসার প্রতীক হয়ে উঠবে ওই খাঁকি উর্দি। পুলিশ যদি এই নয়া অবতার ধরে রাখে, তা হলে সাধারণের শ্রদ্ধা অনেক গুণ বেড়ে যাবে এ দেশের শাসন কাঠামোর উপর। পুলিশ যদি এই ঋজুতা রক্ষা করে, সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে এ দেশের গণতন্ত্র।

উত্তরে হিমালয় আর দক্ষিণে সাগর সাক্ষী, অল্প কয়েকটা দিনের জন্য হলেও, গণতন্ত্রের বৃহত্তম উৎসবে সেই রূপকথার পুলিশের সঙ্গেই দেখা হল বঙ্গবাসীর। ভরসা থাকুক, রোজ রোজ এই পুলিশের সঙ্গেই দেখা হবে বাংলার প্রতিটি প্রান্তে।

police assembly election 2016 anjan bandyopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy