Advertisement
E-Paper

বাগানে আম, লিচুর ফলন দেখে ভোটে আশাবাদী লেবু

বাড়ির বাগানের লিচুগুলিতে রঙ ধরেছে। আমও পাকতে শুরু করেছে। আর সে দিকে তাকিয়েই ভোটের ফলের উত্তেজনা থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করছেন মালদহের সুজাপুর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী আবু নাসের খান চৌধুরী। দৈনিক সকাল বিকেল বাড়ির বাগানে বসে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বেশ হাসিখুশিই দেখাচ্ছে তাঁকে। মুখে বলছেন, ‘‘আমার কোনও টেনশন নেই।’’

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৬ ০৩:১২
বাগানে লেবুবাবু। নিজস্ব চিত্র।

বাগানে লেবুবাবু। নিজস্ব চিত্র।

বাড়ির বাগানের লিচুগুলিতে রঙ ধরেছে। আমও পাকতে শুরু করেছে। আর সে দিকে তাকিয়েই ভোটের ফলের উত্তেজনা থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করছেন মালদহের সুজাপুর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী আবু নাসের খান চৌধুরী। দৈনিক সকাল বিকেল বাড়ির বাগানে বসে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বেশ হাসিখুশিই দেখাচ্ছে তাঁকে। মুখে বলছেন, ‘‘আমার কোনও টেনশন নেই।’’

তবে দলীয় নেতা কর্মীদের কাছে নিয়ম করে ফোন করে ভোটের অঙ্কের খোঁজ নিচ্ছেন। ফোনের ওপার থেকে জানানো হচ্ছে, ‘‘সুজাপুর, মোজমপুর, গয়েশবাড়িতে লিডে থাকব সাহেব।’’ তবে বাকি দশটি পঞ্চায়েতে কী হবে? সেই প্রশ্নে দলীয় নেতারও চুপ হয়ে যাচ্ছেন। প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে তাঁদের উত্তর, ‘‘সাহেব আপনি চিন্তা করবেন না। মানুষ আপনার পাশে রয়েছে।’’

লেবুবাবুর এ বার কঠিন লড়াই। লড়তে হয়েছে ভাইপো ইশা খান চৌধুরীর সঙ্গেই। সুজাপুর কংগ্রেসের অত্যান্ত শক্ত ঘাঁটি। তার উপরে জোট। সেই আসন বের করে আনা লেবুবাবুর চ্যালেঞ্জ। তবে লেবুবাবু বলেন, ‘‘খেলতে গেলে হার জিৎ রয়েছে। তাই টেনশন করার কিছু নেই। আর আমি মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। এলাকার উন্নয়ন এলং বরকতদার আশীর্বাদ থাকায় সব চাপই আমার কাছে হালকা।’’

সুজাপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। আর এই ১৩টি পঞ্চায়েতের রয়েছে ২১২টি বুথ। ইংরেজবাজারের কোতুয়ালি ভবনের তৃণমূল শিবিরে অর্থাৎ আবু নাসের খান চৌধুরী ওরফে লেবুবাবুর বাড়িতে প্রতিটি বুথ নিয়ে চলছে চুল চেরা বিশ্লেষণ। এই কেন্দ্রে ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রার্থী ছিলেন লেবুবাবু। ওই বছর তিনি ৭০ হাজার ৬৪০টি ভোট পেয়ে হারিয়েছিলেন সিপিএম প্রার্থী হাজি কেতাব উদ্দিনকে। জিতেছিলেন ১৭ হাজার ৩৬১টি ভোটে।

কিন্তু সে বার ছিলেন কংগ্রেসের প্রার্থী। আর সুজাপুর বরাবরই কংগ্রেসের দখলে থেকেছে। এমনকি এই কেন্দ্রেই কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন প্রয়াত নেতা আবু বরকত গনিখান চৌধুরী। ফলে সুজাপুরের মানুষ গনি পরিবার এবং কংগ্রেসের উপরে আস্থা রেখে এসেছেন। তাই এ বার লেবুবাবু তৃণমূলের টিকিটে ভোটে দাঁড়িয়েছেন বলে সহজ লড়াই বেশ কঠিন হয়েছে।

তবে তিনি তো বরকতের ছোট ভাই, তারপরেও কেন জেতা নিয়ে সংশয়? এই প্রশ্নেরও উত্তর দিয়েছেন তাঁর অনুগামীরা। তাঁরা বলেন, ‘‘লেবুবাবুর বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়িয়েছেন কংগ্রেসের ইশা খান চৌধুরী। তিনি বরকত সাহেবের ভাইপো তথা দক্ষিণ মালদহ কেন্দ্রের সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরীর ছেলে। ফলে সুজাপুরে কোতুয়ালি পরিবারের ভোট ভাগ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’ সেই সঙ্গে বামেরাও পাশে রয়েছে কংগ্রেসের। বিগত বছর বাম প্রার্থী ওই কেন্দ্রে পেয়েছিলেন ৫৩ হাজার ২৭৯টি ভোট। যা এবারে চিন্তার অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে। এই অঙ্কের পরেও রয়েছে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের কাটা। সুজাপুর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রায় সব ক’টি পঞ্চায়েতে রয়েছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। ফলে এক গোষ্ঠীর নেতাদের নিয়ে লেবুবাবু ঘুরলেই চটে যাচ্ছেন অপর গোষ্ঠীর নেতা। যার ফলে অস্বস্তি বেড়েছে লেবুবাবুর।

অস্বস্তিতে থাকলে মুখে হাসি রয়েছে লেবুবাবুর। বিদেশি শিক্ষাকতা করতেন। সেখান থেকে অবসর নিয়ে এখন রাজনৈতির ময়দানে। রয়েছে হার্টের সমস্যা। তারপরেও ভোটবাজারে চষে বেড়িয়েছেন সুজাপুর বিধানসভা কেন্দ্র। তিনি বলেন, ‘‘এখন একেবারে বিশ্রাম নিচ্ছি। দলের নেতারা বাড়িতে আসছেন। আমি কেমন আছি খোঁজ নিয়ে যাচ্ছেন। আর প্রত্যেকেই বলছেন ভোট ভালোই হয়েছে। আমার কোন টেনশন নেই। বাড়ির বাগানে যেমন ভালো ফলন ধরেছে লিচু, আমের, আশাকরি আমার বিধানসভাতেও ভালো ফল হবে দলের।’’

assembly election 2016 abu naser khan chowdhury
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy