Advertisement
E-Paper

নজরদার দল কী রিপোর্ট দেবে, ভেবেই ত্রস্ত প্রশাসনিক কর্তারা

চার দিনের সফর শেষে বুধবার ফিরে যাচ্ছে পাঁচ রাজ্যের মুখ্যনির্বাচনী অফিসারের নেতৃত্বাধীন নজরদার দল। তারা নির্বাচন কমিশনকে কী রিপোর্ট দেয়, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন জেলাশাসক-পুলিশ সুপাররা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৬ ১৪:৩৭

চার দিনের সফর শেষে বুধবার ফিরে যাচ্ছে পাঁচ রাজ্যের মুখ্যনির্বাচনী অফিসারের নেতৃত্বাধীন নজরদার দল। তারা নির্বাচন কমিশনকে কী রিপোর্ট দেয়, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন জেলাশাসক-পুলিশ সুপাররা। নজরদার দলের রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রশাসনে ফের এক দফা অদলবদল হতে পারে ভেবে থরহরিকম্প প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশের।

গত ১৪-১৫ মার্চ মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নসীম জৈদীর নেতৃত্বে কমিশনের ফুল বেঞ্চ রাজ্যে এসেছিল। রাজ্য ছাড়ার আগেই জৈদী বলেছিলেন,‘‘শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য কমিশন সমস্ত রকম ব্যবস্থা করবে। কাউকে রেয়াত করা হবে না।’’

ফিরে যাওয়ার দু’দিনের মাথায় এক জেলাশাসক, চার পুলিশ সুপার-সহ ৩৭ জন অফিসারকে সরিয়ে দিয়েছে কমিশন। ইতিমধ্যেই নির্দেশ পাঠিয়ে বলা হয়েছে, ভোটের প্রচারে কোনও বাইক বাহিনীর ব্যবহার চলবে না। ভোটের কাজ থেকে সরিয়ে দিতে হবে সিভিক পুলিশকেও। পাশাপাশি, সন্ত্রস্ত এলাকায় ভোটারদের আস্থা জোগাতে যে ২৫০ কোম্পানি বাহিনী রাজ্যে এসে গিয়েছে, তাদের যথাযথ ব্যবহারের নির্দেশও দিয়েছে কমিশন। বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে শুধু বড় রাস্তায় নয়, নিয়ে যেতে হবে ১২ হাজার স্পর্শকাতর এলাকাতেও। বাহিনী স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জেনে নেবে এলাকার পরিস্থিতি। সেই সঙ্গে জেলাশাসকদের প্রতি দিন পাঁচটি করে সন্ত্রস্ত এলাকা এবং মহকুমাশাসক ও মহকুমা পুলিশ অফিসারদের প্রতি দিন ১০টি করে এলাকায় ঘুরে রিপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে।

এতেই ক্ষান্ত হয়নি কমিশন। জেলাস্তর থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে যে রিপোর্ট আসছে তা আরও এক দফা যাচাই করতে পাঁচ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের নেতৃত্বে পাঁচটি দল রাজ্যে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গত ২০ মার্চ থেকে সেই দলের প্রতিনিধিরা জেলায় জেলায় গিয়ে আইনশৃঙ্খলা থেকে ভোট প্রস্তুতির যাবতীয় খবর নিয়েছেন। তাঁরাই আজ দিল্লি ফিরে নির্বাচন সদনে রাজ্যের ভোট প্রস্তুতির বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট দেবেন। তার ভিত্তিতে কমিশন আরও এক দফা ব্যবস্থা নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

কেন সিইও-দের দল পাঠাতে হল?

প্রশাসনের এক কর্তা জানাচ্ছেন, এ রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে ভূরি ভূরি অভিযোগ কমিশনে জমা পড়েছে। নির্বাচনের সময় সেই সব অফিসারকে দিয়েই ভোট করাতে হচ্ছে। সকলকেই তো সরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। তাই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কমিশনের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতেই সিইও-দের দল পাঠানো হয়েছে। যে সব জায়গা থেকে অভিযোগ বেশি আসে, সেখানেই কমিশনকে বাড়তি পদক্ষেপ করতে হয়। বিহার ভোটের সময়েও এ রাজ্যের সিইও সুনীল গুপ্তকে সেখানে পাঠিয়েছিল কমিশন।

ওই কর্তা বলেন, ‘‘প্রশাসনের পাশাপাশি ভোটারদের আস্থা জোগানোও এই দলের অন্যতম কাজ। তারা কোচবিহারের ছিটমহল থেকে, গার্ডেনরিচ, বিধাননগর থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত, জঙ্গলমহল থেকে কালিয়াচক, সর্বত্র ঘুরে সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পর্কে কমিশনকে রিপোর্ট দেবে।’’

দক্ষিণবঙ্গের এক জেলাশাসক বলেন, ‘‘ভোটার তালিকা থেকে শুরু করে দাগিদের বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থা সবই খুঁটিয়ে দেখেছে কমিশনের নজরদার দল। তাঁরা আমাদের কাছে সন্তোষপ্রকাশই করেছেন। কিন্তু তার পরেও দ্বিধা কাটছে না।’’

জঙ্গলমহলের এক জেলাশাসকের কথায়, ‘‘কমিশনের টিম কী দেখল সেটা বড় কথা নয়, কী রিপোর্ট দেবে সেটাই আসল। ফলে ফিরে যাওয়ার পর বোঝা যাবে।’’

উত্তরবঙ্গের এক পুলিশ সুপারের কথায়, ‘‘স্পর্শকাতর এলাকা ঘুরে তেমন অভিযোগ পাননি কমিশনের কর্তারা। কিন্তু তাঁদের উপলব্ধি কী, তা কমিশনের পরবর্তী পদক্ষেপ দেখেই বুঝতে পারব।’’

ফিরে যাওয়ার পর কমিশনের সঙ্গে বসবেন পাঁচ রাজ্যের সিইও। আগামী ২৮ মার্চ রাজ্যের মুখ্যসচিব-স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করবেন জৈদী। এর মাঝখানে কমিশন আরও একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক কর্তারা।

assembly election 2016 police west bengal trinamool mamata banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy