Advertisement
E-Paper

নাতনির সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন সুরজিৎ, বাজারে ব্যস্ত রমেনবাবু

ভোট খতম। কিন্তু টেনশন তো এখনও তালাবন্ধ ভোট মেশিনে। তাই কর গুনে দিন কাটছে ওঁদের, আর কত দিন! হাপিত্যেশ করে বসে থাকা প্রার্থীদের কথা আনন্দবাজারের পাতায়। বাজারে গিয়ে নিজে হাতে সব্জি ও ছোট মাছ কেনা অভ্যাস তাঁর। কিন্তু ভোটের লড়াইতে নেমে প্রায় দেড় মাস বাজার করতে পারেননি তিনি। কিন্তু এখন ভোট শেষ হতেই ফের নিজের পুরনো অভ্যাসে ফিরে গিয়েছেন বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের এ বারের জোট প্রার্থী সিপিএমের রমেন আঢ্য। গাইঘাটার চাঁদপাড়া বাজারেই দলের বনগাঁ-গাইঘাটা জোনাল কমিটির অফিস।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৬ ০৩:১০
নাতনির সঙ্গে  তৃণমূল প্রার্থী সুরজিৎ বিশ্বাস। ডানদিকে, দলীয় কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় ব্যস্ত বাম প্রার্থী রমেন আঢ্য।

নাতনির সঙ্গে তৃণমূল প্রার্থী সুরজিৎ বিশ্বাস। ডানদিকে, দলীয় কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় ব্যস্ত বাম প্রার্থী রমেন আঢ্য।

বাজারে গিয়ে নিজে হাতে সব্জি ও ছোট মাছ কেনা অভ্যাস তাঁর। কিন্তু ভোটের লড়াইতে নেমে প্রায় দেড় মাস বাজার করতে পারেননি তিনি। কিন্তু এখন ভোট শেষ হতেই ফের নিজের পুরনো অভ্যাসে ফিরে গিয়েছেন বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের এ বারের জোট প্রার্থী সিপিএমের রমেন আঢ্য।

গাইঘাটার চাঁদপাড়া বাজারেই দলের বনগাঁ-গাইঘাটা জোনাল কমিটির অফিস। সকালে বাজারে গিয়ে কর্মীদের সঙ্গে ভোটের ফলাফল নিয়ে একদফা আলোচনায় বসে পড়ছেন রমেনবাবু। এটি কি টেনশন দূর করার জন্য? তাঁর কথায়, ‘‘চল্লিশ বছর ধরে রাজনীতিতে আছি। সত্যি বলছি আমার কোনও টেনশন হচ্ছে না। এতদিন ধরে ফলাফল বাক্সবন্দি রয়েছে। মন্দ হোক ভাল হোক ফলাফলটা দ্রুত জানতে পারলেই ভাল হত।’’ তবে ভোটের প্রচারে হেঁটে আরও শারীরিক ভাবে সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে জানান বামপ্রার্থী। রমেনবাবু স্থানীয় মণ্ডলপাড়া ও চাঁদপাড়া বাজারে বাজার করতেই পছন্দ করেন। ছোট মাছ পছন্দ মতো পাওয়া যায় বলে চাঁদপাড়া বাজারটি তাঁর প্রিয়। বাজার করা তাঁর নেশা। রমেনবাবু বলেন, ‘‘ভোটের ক’দিন বাজার করতে পারিনি। এখন প্রায়ই বাজার থেকে পুঁটি, ট্যাংরা কিনে খাচ্ছি।’’

তবে ভোটের পরও ব্যস্ত ষাটোর্ধ্ব প্রার্থী রমেনবাবু। কোথাও কর্মীর ধানের আগুন লেগেছে শুনে আবার কোথাও কোনও পথ দুর্ঘটনায় যুবক মারা গিয়েছেন, খবর পেলেই ছুটে যাচ্ছেন তিনি। পথ চলতি মানুষ তাঁকে জেতার ভরসাও দিচ্ছেন। কী ভাবছেন ভোটের ফল নিয়ে। জনতা রমেনবাবুকে দেখলেই বলছেন, আপনিই জিতবেন। মানুষের এই ভরসাতেই এখন দিন কাটছে বামপ্রার্থীর। বিভিন্ন জায়গা থেকে কর্মীরাোন করছেন। ফোনে ‘‘আমরাই জিতব। সরকারও আমরাই গঠন করব।’’ বলে রমেনবাবু আশ্বাসও দিচ্ছেন। ফোন রেখে দেওয়ার তিনি বলেন, ‘‘আশাবাদী জিতব। যদিও মানুষ ভোট দিয়ে চাপা রয়েছেন।’’ এখানে কিন্তু কিছুটা উদ্বেগ ধরা পড়ল রমেনবাবুর চোখেমুখে।

সকালে ঘুম থেকে ওঠা ও রাতে ঘুমতে যাওয়ার সময় একঘণ্টা বাড়িয়ে পিছিয়ে নিয়েছেন তিনি। সকাল বিকেল পার্টি অফিসে এসে চলছে চুলছেঁড়া বিশ্লেষণ।

অন্য দিকে স্থানীয় ঠাকুরনগর বাজার এলাকায় নিজের বাড়িতেই বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছেন তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী বিধায়ক সুরজিৎ বিশ্বাস। ভোটের প্রসঙ্গ তুলতেই বলেন, ‘‘টেনশন হওয়া, ভোটে লড়াই করা যে কোনও প্রার্থীর স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কেউ যদি বলেন তাঁর টেনশন হচ্ছে না তা হলে বুঝতে হবে তিনি ঠিক বলছেন না। আমারও টেনশন হচ্ছে। কিন্তু তা জেতা নিয়ে নয়। আমি জানি আমি জিতবই। আমার টেনশন হল কোন বুথে এগিয়ে যাব আর কোন বুথে পিছিয়ে যাব তা নিয়ে।’’ ভোটের পর প্রত্যেকটি এলাকায় একবার করে ঘুরে এসেছেন তিনি। বাড়িতে নিয়মিত আসছেন কর্মী সমর্থকেরাও। তাঁরা নিজেদের মতো করে ভরসা দিয়ে যাচ্ছেন। ফোন করেও কর্মীরা ভরসা দিচ্ছেন তাঁকে। রাত করে শুলেও ভোটের প্রচারের জন্য ভোরে উঠে পড়তেন তিনি। কিন্তু এখন উঠছেন সকাল সাতটায়। মাছ মাংস সে ভাবে পছন্দ নয় সুরজিৎবাবুর। হালকা ঝোল, টক ডাল, টক দই দিয়েই খাওয়া সারছেন। এমনিতে নিজে বাজার করেন না তিনি। ভোটের পর একদিন থলে হাতে বেরিয়ে পড়েছিলেন বাজারে। সেখানে পরিচিত মানুষেরা তাঁকে ঘিরে ধরে জেতার ভরসা দিয়েছেন বলে তাঁর দাবি। টেনশন মুক্ত থাকার জন্য বেছে নিয়েছেন টিভিতে খবর দেখাকে। বেশির ভাগ সময় টিভিতে খবর দেখছেন। সন্ধ্যার পর দু-একটি সিরিয়ালেও চোখ রাখছেন সুরজিৎবাবু। তবে তাঁকে সবচেয়ে বেশি টেনশন ফ্রি রেখেছে তাঁর পাঁচ বছরের নাতনি অভিষিক্তা। তাঁর সঙ্গে নাকি মাঝে মধ্যেই টিভির সামনে বসে পড়তে হচ্ছে কার্টুন দেখতে। সুরজিৎবাবু বলেন, ‘‘ছোটা ভীম দেখতে দেখতেই হয়তো ১৯ মে এসে যাবে।’’

assembly election 2016 Bangaon vote results
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy