Advertisement
E-Paper

ভোটের শহরে নজরে শ্রীনু

বাসব রামবাবু নয়, রেলশহরের ভোটে পুলিশের নজরে এখন শ্রীনু নায়ডু। এ বার বিধানসভা নির্বাচনে রেলমাফিয়া শ্রীনু ও তার লোকজন খড়্গপুরের কয়েকটি বুথে গোলমাল পাকাতে বলে আশঙ্কা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৬ ০১:২৭
শ্রীনু নায়ডু। ফাইল চিত্র

শ্রীনু নায়ডু। ফাইল চিত্র

বাসব রামবাবু নয়, রেলশহরের ভোটে পুলিশের নজরে এখন শ্রীনু নায়ডু। এ বার বিধানসভা নির্বাচনে রেলমাফিয়া শ্রীনু ও তার লোকজন খড়্গপুরের কয়েকটি বুথে গোলমাল পাকাতে বলে আশঙ্কা।

পুলিশের এক সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে গোয়েন্দারা এ ব্যাপারে সতর্কবার্তাও পাঠিয়েছেন জেলা পুলিশের কাছে। জানানো হয়েছে, কমপক্ষে ৫টি বুথে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করতে পারে শ্রীনুর লোকজন। ওই বুথগুলো কী কী? পুলিশের এক সূত্রে খবর, রেলশহরের ২১৬ থেকে ২২০, এই পাঁচটি বুথে শ্রীনুর লোকজন গোলমাল পাকাতে বলে আশঙ্কা। পুলিশের এক সূত্রে খবর, খড়্গপুরের ২৬৫টি বুথের মধ্যে ৩৬টি বুথকে উত্তেজনাপ্রবণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভোটের দিন গোলমাল পাকাতে পারে, এমন ৬৯ জনের নামের একটি তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। পুলিশ-প্রশাসনকে ব্যবহার করে দলের পক্ষে ভোট করানোর অভিযোগ শাসক দলের বিরুদ্ধে নতুন নয়। বাম- আমলেও এই অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল-আমলে আরও বেশি করে উঠছে।

কাল, সোমবার খড়্গপুর সদর বিধানসভায় ভোট। ইতিমধ্যে বিজেপির পথসভায় হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় নাম জড়িয়ে গিয়েছে শ্রীনুর নাম। বিজেপির অভিযোগ, শ্রীনু ও তার লোকজনই হামলা করেছে। যদিও পুলিশ এখনও এই রেল মাফিয়ার নাগাল পায়নি। তারা জানিয়েছে, শ্রীনু পলাতক। তার খোঁজ চলছে। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “শ্রীনুকে গ্রেফতারের সব রকম চেষ্টা চলছে। কয়েকটি এলাকায় তল্লাশিও চালানো হচ্ছে। তবে এখনও ওর খোঁজ মেলেনি।’’

রেলশহরে মাফিয়ারাজ বহু দিনের। এক সময় শহরের ‘অন্ধকার দুনিয়া’র বাদশা ছিলেন বাসব রামবাবু। তাঁর হাত ধরেই শ্রীনুর উত্থান। পরে যদিও রামবাবুর সঙ্গে শ্রীনুর দূরত্ব বাড়ে। সে নিজের দল গড়ে। পুলিশের একাংশের দাবি, গত তিন-চার বছরে রামবাবুর বিরুদ্ধে বড় কোনও অভিযোগ ওঠেনি। অথচ, শ্রীনুর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠেছে। তাই এ বার বিশেষ নজরে সে-ই।

ভোট এলে দুষ্কৃতীদের দাপট বাড়ে। গত বছর পুরভোটেও খড়্গপুরবাসীর সেই অভিজ্ঞতা হয়েছিল। সেই ভোটে তৃণমূল প্রথমে ‘ম্যাজিক ফিগার’-এ পৌঁছতে পারেনি। তাই বিরোধী ভাঙানোর অভিযোগ ওঠে শাসক দলের বিরুদ্ধে। শেষমেশ তৃণমূল পুরবোর্ডও গড়ে। এ ক্ষেত্রে শাসকদল শ্রীনু ও তার দলবদলের সাহায্য নিয়েছিল বলেই অভিযোগ।

পুরভোটে শ্রীনুর স্ত্রী পূজা বিজেপির টিকিটে লড়ে জিতেছিলেন। চাপ সৃষ্টি করতে পুরভোটের আগে আগেই শ্রীনুকে এক মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ। তৃণমূল নেতাদের ধারণা ছিল, শ্রীনু জেলে গেলে পূজা জিততে পারবেন না। তবে তা হয়নি। ভোটের পরে তাই ‘ম্যাজিক ফিগার’-এ পৌঁছতে সেই শ্রীনুর দ্বারস্থ হতে হয় শাসক দলের নেতাদের। এক তৃণমূল নেতা জেলে গিয়ে এই শ্রীনুর সঙ্গে দেখা করেন। আর তার ক’দিন পরেই জামিন পেয়ে যায় শ্রীনু। পরে তাঁর স্ত্রী পূজা-সহ বিজেপির ৭ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ৫ জন তৃণমূলে যোগ দেন। সব কাঁটা সরিয়ে মসৃণ ভাবে পুরবোর্ড গঠন করে তৃণমূল। এই গোটা পরিকল্পনা রূপায়িত করার ক্ষেত্রে পশ্চিম মেদিনীপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ মূল ভূমিকা নিয়েছিলেন বলে সেই সময় সরব হয়েছিল বিরোধীরা। শাসক-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ভারতীকে অবশ্য নির্বাচন কমিশন ভোটের মুখে বদলি করে দিয়েছে।

জেলা পুলিশের এক সূত্রে খবর, শুধু শ্রীনু নয়, রেলশহরে আরও কিছু দুষ্কৃতীর গতিবিধির উপরে নজর রাখার চেষ্টা চলেছে। জানা গিয়েছে, ভোটের দিন খড়্গপুরের তিনটি এলাকায় নাকা হবে। বারবেটিয়া, নিমপুরা এবং ইন্দা- এই তিনটি এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চলবে।

Assembly Election 2016 Rail Mafia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy