Advertisement
E-Paper

বিজেপির সমর্থনে তৃণমূল পেল দুই কর্মাধ্যক্ষ, বাম প্রার্থীকে পরাজিত করতে একজোট ঘাসফুল এবং পদ্ম!

তেহট্ট-১ পঞ্চায়েত সমিতির আসন সংখ্যা ৩৩। ভোটাধিকারপ্রাপ্ত সদস্য সংখ্যা ৫০। বন, ভূমি এবং পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের দুটি ফাঁকা আসনে প্রার্থী দিয়েছিল বামেরা। মনোনয়ন দেয় তৃণমূলও। ‘তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে’ কোনও আসনেই প্রার্থী দেয়নি বিজেপি।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৫ ২১:৫২
TMC BJP Alliance

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

রাজ্য রাজনীতিতে তারা যুযুধান দুই শিবির। বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করে এখন থেকে একে অপরকে আক্রমণ শানাচ্ছে তৃণমূল এবং বিজেপি। অন্য দিকে, পঞ্চায়েত সমিতিতে বাম প্রার্থীকে হারাতে একজোট হল তৃণমূল এবং বিজেপি! নদিয়ার তেহট্টের ঘটনা।

পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের পর্বে বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলকে হঠাতে বাম এবং বিজেপির বোঝাপড়া দেখা গিয়েছে। এ বার ঠিক তেহট্টে পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচনে দেখা গেল রাজ্যের শাসকদল এবং প্রধান বিরোধী দলের সমঝোতা। বিজেপির সমর্থনে বাম প্রার্থীকে হারিয়ে তেহট্ট-১ পঞ্চায়েত সমিতির বন, ভূমি এবং পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ পদে জয়ী হলেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। দু’টি ক্ষেত্রেই বিজেপির সঙ্গে জোট করেছে তৃণমূল। স্থানীয় নেতৃত্বের আপত্তি সত্ত্বেও তেহট্ট-১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতির ‘তত্ত্বাবধানে’ বিজেপির সঙ্গে জোট সম্পন্ন হয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূল নেতৃত্বের। বামেদের দাবি, তারা তো বলেই আসছে তৃণমূল বিজেপিরই ‘বি টিম।’ সেটাই পরিষ্কার হল আরও একবার।

তেহট্ট-১ পঞ্চায়েত সমিতির আসন সংখ্যা ৩৩। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, জেলা পরিষদ সদস্য, বিধায়ক ও সাংসদ মিলিয়ে ভোটাধিকারপ্রাপ্ত সদস্য সংখ্যা ৫০। বন, ভূমি এবং পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের দু’টি ফাঁকা আসনে প্রার্থী দিয়েছিল বামেরা। মনোনয়ন দেয় তৃণমূলও। ‘তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে’ কোনও আসনেই প্রার্থী দেয়নি বিজেপি। পঞ্চায়েত সমিতির ৫০ জন ভোটাধিকারপ্রাপ্ত সদস্যের মধ্যে বিজেপির পক্ষে ছিল ১৯টি এবং তৃণমূলের দখলে ছিল ১৬টি ভোট। এক বিধায়ক প্রয়াত হওয়ায় তৃণমূলের ভোট সংখ্যা কমে ১৫ হয়েছে। বাম-কংগ্রেসের মোট ভোটের সংখ্যা ১৬। বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচনে ভোটাভুটিতে অংশ নিয়েছিলেন মোট ৪৫ জন সদস্য। বামপ্রার্থী শ্রাবন্তী খাঁকে ৩০-১৫ ভোটে পরাজিত করে কর্মাধ্যক্ষ হয়েছেন তৃণমূলের নিতাই দাস। তৃণমূলের প্রাপ্ত ৩০টি ভোটের মধ্যে তাদের ১৩টি এবং বিজেপির ১৭টি ভোট ছিল। ঠিক একই ভাবে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচনে ২৯-১৪ ভোটে জয়ী হন তৃণমূলের প্রার্থী গোপাল রায়। ২৯টি ভোটের মধ্যে ১৮টি এসেছে বিজেপির সৌজন্যে। ফল দেখে সিপিএম জেলা কমিটির সদস্য সুবোধ বিশ্বাসের কটাক্ষ, ‘‘যাহা বিজেপি, তাহাই তৃণমূল। এ তো মুকুল রায়ই বলে দিয়েছেন। এখন প্রতি মুহূর্তে তার প্রমাণ মিলছে।’’

যদিও তৃণমূলের যুক্তি, স্থানীয় বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে এমন জোট হয়েই থাকে। বিরুদ্ধ মতও আছে। তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি, জেলার বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সুকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘স্থানীয় নেতৃত্ব এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ছিল। আমরা কোনও ভাবে চাইনি বিজেপির মতো একটি সাম্প্রদায়িক দলের সঙ্গে জোট করে ক্ষমতা দখল করতে। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বিজেপির বিরুদ্ধে মরণপণ লড়াই করছেন, তখন এই জোট সারা রাজ্যে খারাপ বার্তা নিয়ে যাবে। কিন্তু বর্তমান সভাপতি দিলীপ পোদ্দার কারও সঙ্গে আলোচনা না করে ব্যক্তিগত ভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওঁর ব্যক্তিগত কিছু চাওয়া-পাওয়া এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে পারে বলে আমাদের মনে হচ্ছে।’’ যদিও দিলীপের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

TMC BJP Left panchayat samiti Nadia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy