গ্রাফিক — শৌভিক দেবনাথ।
নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে নন্দীগ্রাম থেকে বামফ্রন্ট প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর ধুন্ধুমার লড়াইয়ে নন্দীগ্রামে তাঁর উপস্থিতি চোখ টেনেছে রাজনীতির কারবারীদের। শুধু নন্দীগ্রামের যুদ্ধই নয়, এ বারের ভোট প্রচারে তাঁকে পাওয়ার আবেদনই সবচেয়ে বেশি জমা পড়েছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে। সিপিএমের এ হেন যুব নেত্রী মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের মধ্যে অতীতের বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ছায়া দেখছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। তাঁর এমন রাজনৈতিক উত্থান অতীত দিনের বুদ্ধদেবের রাজনীতিতে আত্মপ্রকাশকে স্মরণ করাচ্ছে বলে মনে করছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিক বিমান।
বিমানের মতে, “বুদ্ধদেব যে ভাবে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দলের সর্ব ক্ষণের কর্মী হয়েছিল, মিনাক্ষীর ক্ষেত্রেও অনেকটা তেমনই ঘটেছে।” পশ্চিম বর্ধমান জেলার কুলটি কলেজের অস্থায়ী কর্মীর চাকরি করতেন মিনাক্ষী। ছাত্রাবস্থা থেকেই বাম রাজনীতির প্রতি ঝোঁক ছিল তাঁর। সেই সূত্রেই জড়িয়ে পড়া এসএফআইয়ের সঙ্গে। ২০১৮ সালে ডানকুনিতে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের সভানেত্রী মনোনীত হন মিনাক্ষী। তার কিছু দিন আগেই চাকরি ছেড়ে পার্টির সর্ব ক্ষণের কর্মী হন তিনি। আর এ বারের ভোটযুদ্ধে দল যখন তাঁকে সবচেয়ে কঠিন আসনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়, সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন এই যুবনেত্রী।
মধ্যবিত্ত ঘর থেকে উঠে আসা এক জন রাজনৈতিক কর্মী চাকরি ছেড়ে রাজনীতি তথা দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেবের সঙ্গে মিনাক্ষীর মিল দেখছেন বিমান। তিনি বলছেন, “মিনাক্ষী যে ভাবে এগোচ্ছে বুদ্ধ ঠিক এ ভাবেই এগিয়েছিল। সেই সময়ে স্কুল শিক্ষকের চাকরি স্বেচ্ছায় ছেড়ে পার্টির সর্ব ক্ষণের কর্মী হয়েছিল। বামপন্থী রাজনীতিতে মিনাক্ষীর এই অধ্যাবসায় দেখে সত্যিই আমরা খুশি।” বুদ্ধদেব ছয়ের দশকে রাজনীতি শুরু করেন ছাত্রাবস্থা থেকেই। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জয় দিয়ে শুরু করে পৌঁছেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদ পর্যন্ত। মিনাক্ষীর জন্য রাজনীতির সেই পথ এখনও দীর্ঘ।
মিনাক্ষী সর্বস্তরে গ্রহণযোগ্য বলে বিমানের দাবি, “ওঁর বক্তৃতা সব ধরনের মানুষের বোধগম্য হচ্ছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিনাক্ষীর মিশে যাওয়ার বিষয়টিও ওর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।” এ রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পর সিপিএম নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তাঁরা দলের যুব সম্প্রদায়কে জায়গা দেননি। এ বারের ভোটে কিন্তু এক ঝাঁক নতুন মুখের ওপর আস্থা রেখেছেন মুজফফর আহমেদ ভবনের কমরেডরা। তাঁদের মধ্যেই আগামীর নেতৃত্বকে খুঁজে পাচ্ছেন বিমান বসুরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy