Advertisement
১৬ মে ২০২৪
আজ, খড়্গপুরে প্রধানমন্ত্রীর সভা

পদ্ম ফোটাতে সেই ‘মোদী-ম্যাজিক’ই ভরসা

২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে মোদী হাওয়ায় তরতর করে এগিয়ে গিয়েছিল গেরুয়া শিবির। সে বার মেদিনীপুর কেন্দ্রের অন্তর্গত খড়্গপুর সদর বিধানসভায় প্রথম স্থানে ছিল বিজেপি। এ বার এই কেন্দ্রে প্রার্থী বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আর তাঁর সমর্থনে প্রচার করতেই আজ, রবিবার খড়্গপুরের সুভাষপল্লিতে রেলের বিএনআর মাঠে সভা করবেন নরেন্দ্র মোদী।

 চলছে সভার প্রস্তুতি। শনিবার খড়্গপুরে। — নিজস্ব চিত্র।

চলছে সভার প্রস্তুতি। শনিবার খড়্গপুরে। — নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৬ ০০:১০
Share: Save:

ভরসা ফের মোদী ‘ম্যাজিক’!

২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে মোদী হাওয়ায় তরতর করে এগিয়ে গিয়েছিল গেরুয়া শিবির। সে বার মেদিনীপুর কেন্দ্রের অন্তর্গত খড়্গপুর সদর বিধানসভায় প্রথম স্থানে ছিল বিজেপি। এ বার এই কেন্দ্রে প্রার্থী বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আর তাঁর সমর্থনে প্রচার করতেই আজ, রবিবার খড়্গপুরের সুভাষপল্লিতে রেলের বিএনআর মাঠে সভা করবেন নরেন্দ্র মোদী।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, মিশ্র ভাষাভাষীর শহর খড়্গপুরে বিজেপির নিজস্ব ভোট ব্যাঙ্ক রয়েছে। গত লোকসভায় সেই ভোটই একলাফে অনেকটা বেড়ে যায়। তারপর খড়্গপুর পুরভোটে অবশ্য ফল ভাল করতে পারেনি বিজেপি। তবু এ বার ফের খড়্গপুরকেই পাখির চোখ করে এগোচ্ছে গেরুয়া শিবির। মোদীর সভা দলের পালে ভোটের হাওয়া টানতে সহায়ক হবে বলেই আশা গেরুয়া শিবিরের। প্রধানমন্ত্রীর জনসভা পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের রাজ্য নেতা প্রভাকর তিওয়ারি বলেন, “নরেন্দ্র মোদী দলের সবথেকে বড় তারকা। আমাদের আশা, সভায় লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হবে।”

আজ, রবিবার বিকেল ৫টায় প্রধানমন্ত্রীর বিমান নামবে কলাইকুণ্ডা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে তিনি খড়্গপুর আসবেন। বিএনআর ময়দানে সভাস্থল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে শহরের ট্রাফিক ময়দানে তৈরি হয়েছে হেলিপ্যাড। ট্রাফিক ময়দান থেকে গাড়িতে প্রধানমন্ত্রী সভাস্থলে যাবেন। বিকেল ৪টে থেকে সভা শুরু হবে। সন্ধে সাড়ে ৫টা নাগাদ মোদী সভায় যোগ দেবেন বলে বিজেপি সূত্রে খবর।

সভার প্রচারে শহর জুড়ে লাগানো হয়েছে ফ্লেক্স। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার জন্য ইতিমধ্যেই এআইজি, ডিআইজি, এসপি পদমর্যাদার পুলিশ-সহ প্রায় ৬০ জন পুলিশ আধিকারিক শহরে পৌঁছে গিয়েছেন। সভার যাবতীয় নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করার দায়িত্বে রয়েছে ‘স্পেশ্যাল প্রোটেকশন গ্রুপ’ (এসপিজি)। এ ছাড়াও প্রায় দু’হাজার কেন্দ্রীয় ও রাজ্য পুলিশও থাকছে।

বিএনআর ময়দানের পূর্ব দিকে হয়েছে দু’টি মঞ্চ। মূল মঞ্চে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী। ওই মঞ্চেই থাকার কথা বাবুল সুপ্রিয়, কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, সিদ্ধার্থনাথ সিংহ-সহ প্রায় দশ জন কেন্দ্রীয় নেতার। পাশের বড় একটি মঞ্চে জেলার বিজেপি প্রার্থী ও নেতারা থাকবেন। সভায় পূর্ব মেদিনীপুর ও বাঁকুড়ার বিজেপি নেতা-কর্মীরাও আসতে পারেন। মাঠের পশ্চিম দিকে সাধারণ মানুষের বসার ব্যবস্থা হবে।

বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, গত বছর পুর নির্বাচনে তৃণমূল সাধারণ মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। এ বার রেলশহরে ভোট ব্যাঙ্ক পুনরুদ্ধারে ঝাঁপাচ্ছে বিজেপি। বিজেপি নেতা প্রভাকরবাবুও বলছেন, ‘‘এ বার মোদী প্রচারে আসায় লোকসভার তুলনায় আমাদের ভোট অনেক বাড়বে।”

শনিবার অবশ্য প্রশাসনকে বেঁধেন দিলীপবাবু। এ দিন বিকেলে খড়্গপুরের খরিদায় সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন বিজেপির ফ্লেক্স খুলে দিচ্ছে। বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে। আমরা কমিশনে জানাব।” দিলীপবাবুর কটাক্ষ, “ভারতী ঘোষ শাসকদলের হয়ে কাজ করেছেন। এখন ওঁর গ্যারাজ পোস্টিং হয়েছে। এ বার ওঁর পদত্যাগ করা উচিত।’’

বিজেপিকে বিঁধতে ছাড়ছে না তৃণমূল। খড়্গপুরের প্রার্থী রমাপ্রসাদ তিওয়ারির কটাক্ষ, “পুরসভায় বিজেপি চতুর্থ হয়েছিল। এ বার আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।’’ কংগ্রেসের ‘গড়’ হিসেবে পরিচিত খড়্গপুরে মোদীর সভা নিয়ে কী বলছেন প্রবীণ প্রার্থী জ্ঞানসিংহ সোহন পাল। তাঁর মতে, ‘‘লোকসভা, পুরসভা ও বিধানসভা ভোটের অনেক তফাৎ রয়েছে। ওঁরা নিজেদের অস্তিত্ব হারিয়েছে।’’ সঙ্গে চাচার কটাক্ষ, ‘‘ভোটে ‘বহিরাগত’ প্রার্থীকে প্রধানমন্ত্রী এসে কি জয়ী করাতে পারবেন?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE