খড়্গপুরে মাঠ দেখছেন সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। — কিংশুক আইচ
সারদা-কাণ্ডের পরে তাঁর ঘোষণা ছিল, ২০১৬-তে ‘ভাগ মমতা ভাগ’ হবে। নারদ-কাণ্ডের পরে সেই সিদ্ধার্থনাথ সিংহের কটাক্ষ, ‘ভাগনেকে দিন আ চুকে হ্যায়!’
সোমবার খড়্গপুরে এসে বিজেপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘‘এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই নৈতিকতার দোহাই দিয়ে এনডিএ সরকার ছেড়েছিলেন। জর্জ ফার্নান্ডেজকে পদত্যাগ করিয়েছিলেন। আর এখন তৃণমূলের ১২ জন নেতা-মন্ত্রীকে ক্যামেরার সামনে টাকা নিতে দেখা যাচ্ছে। অথচ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেননি। নিজেও পদত্যাগ করেননি।” তাঁর কথায়, “মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছেন। দুর্নীতিগ্রস্তদের মানুষ বাংলা থেকে হটাবেনই। ভাগনেকে দিন আ চুকে হ্যায়!’’
বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। খড়্গপুর দিয়েই নির্বাচনী প্রচার শুরু করবেন তিনি। এখানে বিজেপি-র প্রার্থী দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আগামী ২৭ মার্চ খড়্গপুরের সুভাষপল্লির বিএনআর মাঠে প্রধানমন্ত্রীর সভা হওয়ার কথা। তার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতেই সোমবার রেলশহরে আসেন সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। দুপুরে তিনি বিএনআর মাঠ পরিদর্শন করেন। পরে কর্মী বৈঠকও করেন।
এ দিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বারবার নারদা নিয়ে তৃণমূলের সমালোচনা করেন সিদ্ধার্থনাথ। এ-ও দাবি করেন, কংগ্রেস-বামেরা মিলে তৃণমূলকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। সিদ্ধার্থনাথের কথায়, “কংগ্রেস-বামেরা যে ভাবে তৃণমূলকে বাঁচাচ্ছে তার পর্দাফাঁস হয়ে গিয়েছে। আজ দলের সাংসদ চন্দন মিত্র বিষয়টি রাজ্যসভায় তুলেছিলেন। তিনি বিষয়টি নীতি কমিটির কাছে পাঠানোর হয়ে সওয়াল করেন। কারণ, মুকুল রায় সংসদ সদস্য। কিন্তু কংগ্রেস নীরবই ছিল। এতেই স্পষ্ট কংগ্রেস-বামেরা মিলে তৃণমূলকে বাঁচাচ্ছে।’’
কংগ্রেস শিবির অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছে, নারদ কাণ্ডের তদন্তের জন্য সংসদের দুই কক্ষেই সরব হয় বিরোধীরা। বিজেপি চায়নি বলেই নারদের বিষয়টি রাজ্যসভায় নীতি কমিটির কাছে পাঠানো যায়নি। বিজেপি চাইলে ঘুষ কাণ্ডের বিষয়টি লোকসভার পাশাপাশি রাজ্যসভাতেও নীতি কমিটির কাছে পাঠানো হত।
বিধানসভা নির্বাচনের মুখে বিজেপি যে নারদের হাতিয়ার হাতছাড়া করবে না, এ দিন তা-ও স্পষ্ট করেছেন সিদ্ধার্থনাথ। তৃণমূল যে বলছে তারা চোর নয়? সিদ্ধার্থনাথের কটাক্ষ, “কখনও দেখেছেন চোর বলছে যে আমি চুরি করেছি? খুনি কখনও বলে যে আমি খুনি? এর জন্য তদন্ত হয়। তদন্ত তো রাজ্য সরকারেরই করা উচিত।” ঘুষ-কাণ্ডের পর রাজ্য বিজেপির বড় একটা অংশ তেড়েফুঁড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণে নামার পক্ষে। সিদ্ধার্থনাথরাও তৃণমূলকে মাঠ ছাড়তে নারাজ। তাঁর কথায়, “সারদা থেকে নারদ, দুর্নীতি স্পষ্ট। পরিবর্তন শুধু ওঁর (মুখ্যমন্ত্রী) আর তৃণমূলের হয়েছে। সাধারণ মানুষের হয়নি। বাংলায় নরেন্দ্র মোদীর বিকাশের আওয়াজ উঠছে।’’
পাশাপাশি সিপিএমকেও বিঁধেছেন বিজেপি-র এই কেন্দ্রীয় নেতা। তিনি বলেন, “এখানে কংগ্রেসের সঙ্গে ওদের দোস্তি। আর কেরলে কুস্তি। এখন সিপিএমকে জবাব দিতে হবে কেন তারা রাজ্যসভায় মুকুল রায়কে বাঁচানোর চেষ্টা করছে!’’ দলীয় সূত্রে খবর, এ দিনের কর্মী বৈঠকেও সিদ্ধার্থনাথ বারবার এই বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন যে বাংলায় লড়াইটা তৃণমূলের সঙ্গে সরাসরি বিজেপির।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy