Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Mithun Chakraborty

Narendra Modi’s Brigade Rally: মঞ্চে থাকবেন জানিয়ে মিঠুন বললেন, ব্রিগেডে অন্য কিছু হবে! তবে আসছেন না অক্ষয়

রাজনীতিতে মিঠুনের ‘পুনরাবির্ভাব’ ঘটছে বলা যেতে পারে, সিনেমার পরিভাষায় যা ‘গ্র্যান্ড গালা রি-রিলিজ’ এবং তা ঘটছে তৃণমূলের বিরোধী দলের হাত ধরে।

শনিবার রাতে বেলগাছিয়ার একটি বাড়িতে মিঠুনের সঙ্গে কৈলাস।

শনিবার রাতে বেলগাছিয়ার একটি বাড়িতে মিঠুনের সঙ্গে কৈলাস। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২১ ১০:১৪
Share: Save:

কথামতোই শনিবার রাতে কলকাতায় পৌঁছেছেন। এবং রবিবার ব্রিগেডে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মঞ্চে থাকবেন। জানিয়ে দিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। বেলা ১২টা নাগাদ মিঠুন ব্রিগেডে পৌঁছবেন। তার আগে তিনি বলেছেন, ‘‘ব্রিগেডে কিছু তো একটা হবে!’’ সেই ‘হওয়া’ কি তাঁর প্রত্যক্ষ ভাবে বিজেপি-তে যোগ? নাকি নিছকই বিজেপি-র হয়ে ভোটে প্রচার? তা এখনও পর্যন্ত খোলসা করেননি বাঙালি সুপারস্টার। তবে রবিবার সকালে জানা গিয়েছে, অক্ষয় কুমার ব্রিগেডে আসছেন না। শনিবার বিজেপি-তে যোগ-দেওয়া অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ জানিয়েছিলেন, অক্ষয় ব্রিগেডে আসছেন। তবে রবিবার সকালে অক্ষয়ের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্রিগেডে থাকছেন না ‘খিলাড়ি’।

অভিনয় জীবনে রাজনীতিকের ভূমিকায় একাধিক বার অভিনয় করেছেন মিঠুন। বাস্তব জীবনেও ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ। তবে সেই ইনিংস মাঝপথেই ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। সে অর্থে রাজনীতিতে তাঁর ‘পুনরাবির্ভাব’ ঘটছে বলা যেতে পারে। যাকে সিনেমার পরিভাষায় বলে ‘গ্র্যান্ড গালা রি-রিলিজ’। এবং তা ঘটছে সেই দলের হাত ধরে, যারা তাঁর প্রাক্তন দলের সঙ্গে সম্মুখসমরে অবতীর্ণ। চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যে দুষ্টের দমনে রাতারাতি রাজনীতিতে অভিষেক ঘটেছিল ‘এমএল এ ফাটাকেষ্ট’র। বাস্তবে কিন্তু জমি মেপেই এগোচ্ছেন মিঠুন। বাম-তৃণমূল হয়ে সাময়িক বিরতি নিয়েছিলেন। এ বার বিজেপি-র হাত ধরে রাজনীতিতে নতুন ইনিংস খেলতে তৈরি তিনি। প্রধানমন্ত্রীর ব্রিগেড সভার আগে কলকাতায় পা রেখে অন্তত তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন মিঠুন। ব্রিগেডের মাঠে ‘অন্যকিছু’ ঘটতে পারে বলে আগাম জানিয়ে রেখেছেন তিনি। সেই ‘অন্যকিছু’ যে কী, তা নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি বিজেপি নেতৃত্ব।

শনিবার প্রায় মধ্যরাতে কলকাতায় নামেন মিঠুন। বিমানবন্দরেই তিনি জানান, রবিবার ব্রিগেডে থাকছেন। তিনি বলেন, ‘‘বারাণসী হয়ে বিমান এল বলে দেরি হল। কাল ১২টায় ব্রিগেডে দেখা হচ্ছে।’’ এর আগে সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবতের সঙ্গে সাক্ষাৎকে ‘আধ্যাত্মিক যোগ’ বলে বর্ণনা করলেও অতঃপর বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা বা ব্রিগেডে মোদীর পাশে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা দেবেন কিনা জানতে চাইলে মিঠুন ইঙ্গিতপূর্ণ গলায় বলেন, ‘‘অন্যকিছুও তো হতে পারে! সময় এলেই জানতে পারবেন। কী হতে পারে তা বলব না। তবে কিছু তো হবেই। জানতে পারবেন।’’ রাতেই মিঠুনের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। দু’জনের সাক্ষাতের ছবিও টুইট করেছেন কৈলাস। সঙ্গে লিখেছেন, ‘গভীর রাতে কলকাতার বেলগাছিয়ায় অভিনেতা মিঠুন’দার সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা ল। ওঁর দেশভক্তি এবং গরিব মানুষের প্রতি ওঁর ভালবাসা আমার ছুঁয়ে গিয়েছে’।

বিমানবন্দরেই মিঠুনকে প্রশ্ন করা হয়েছিল বাংলা নিয়ে। জানতে চাওয়া হয়েছিল, বিজেপি-র বিভিন্ন নেতা অন্য রাজ্য থেকে বাংলায় ভোটের প্রচারে আসছেন। কিন্তু মিঠুনের তো বাংলাই ঘরবাড়ি! সেখানে ফিরে কেমন লাগছে। জবাবে মিঠুন সাফ বলেন, ‘‘এখানে আমার বাড়ি-টাড়ি কিছু নেই। যখনই আসি, হোটেলে থাকি। নইলে প্রযোজকরা যেখানে থাকার ব্যবস্থা করে, সেখানে গিয়ে উঠি।’’ মিঠুন এ কথা বললেও বিজেপি তাঁকে বাংলা এবং বাঙালির সঙ্গে ওতপ্রতোভাবে জড়িয়েই রাখতে চাইছে। রবিবার সকালেও মিঠুনের সঙ্গে গিয়ে দেখা করেছেন বিজেপি-র শীর্ষনেতারা। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি মুম্বইয়ে মিঠুনের সঙ্গে সঙ্ঘপ্রধান ভাগবতের সাক্ষাতের ছবি সামনে আসার পর থেকেই গেরুয়া শিবিরে মিঠুনের আগমনের দিন গুনতে শুরু করে রাজনৈতিক মহল। জল্পনা জোরাল সম্ভাবনা হয়ে ওঠে ব্রিগেডে মোদীর সভার দু’-তিন দিন আগে থেকে। দিল্লি সূত্রে জানা যায়, ভাগবতের পৌরোহিত্যেই গেরুয়া-ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন মিঠুন। কলকাতার ব্রিগেডে মোদীর সভায় তাতে আনুষ্ঠানিক সিলমোহর পড়তে চলেছে।

শনিবার এ নিয়ে মুখ খোলেন বিজয়বর্গীয়। আনন্দবাজার ডিজিটালকে দেওয়া তিনি বলেন, ‘‘মিঠুন’দার সঙ্গে কথা হয়েছে আমার। আজ (শনিবার) রাতেই তিনি কলকাতায় এসে পৌঁছবেন। ওঁর সম্পর্কে এখনই কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে এটা ঠিক যে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন উনি।’’ যদিও মিঠুনের বিজেপি-তে যোগদান এবং ব্রিগেডের উপস্থিতির প্রসঙ্গ এড়িয়েই গিয়েছিলেন তিনি। ‘ঘরের মেয়ে’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মাত দিতে শুরু থেকেই বাংলায় ভূমিপুত্রের খোঁজে মরিয়া হয়ে উঠেছিল বিজেপি। তৃণমূল ছেড়ে যাওয়া মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাশে পেলেও ‘সার্বিক’ বাঙালি আবেগকে ছুঁতে তারা মিঠুনের উপরেই ভরসা করছে বলে খবর। তবে গেরুয়া শিবিরেরই একটি অংশ দাবি করছে, মূলত প্রচারের কাজেই মিঠুনকে লাগাতে চাইছেন বিজেপি শীর্ষনেতৃত্ব। ‘মহাগুরু’কে পাশে নিয়ে বাঙালির আবেগকে ছুঁতে চাইছেন তাঁরা। এখন দেখার, ব্রিগেডে মিঠুন কী বলেন। কী করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE