প্রথম দিকে ঢিলেঢালা ভাব দেখা গিয়েছিল। এ বার স্পিকার সুমিত্রা মহাজনও চাইছেন, নারদ-কাণ্ডে অভিযোগ খতিয়ে দেখার কাজ দ্রুত শেষ করুক লোকসভার নীতি কমিটি।
নারদ নিউজে তৃণমূল সাংসদদের ঘুষ নেওয়ার গোপন ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পরেই সিপিএম ও কংগ্রেসের চাপে বিষয়টি লোকসভার নীতি বা এথিক্স কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তার পরে প্রথম দিন পনেরো কোনও পদক্ষেপই হয়নি। তার পর কমিটি নারদ নিউজের কর্ণধার ম্যাথু স্যামুয়েলের কাছ থেকে অসম্পাদিত ভিডিও ফুটেজ জমা নেয়। অভিযুক্ত তৃণমূল সাংসদদের নোটিসও পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপের জন্য আরও চাপ তৈরি করতে চাইছে সিপিএম। আজ তদন্ত দ্রুত শেষ করার পক্ষে মত দিয়েছেন স্পিকারও।
সোমবার থেকে সংসদের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা। তার আগে আজ সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। পশ্চিমবঙ্গে ভোটের প্রচারে ব্যস্ত থাকায় মহম্মদ সেলিম আপাতত দিল্লিতে আসতে পারছেন না। তাঁর নির্দেশে ত্রিপুরার সাংসদ তথা দলের মুখ্য সচেতক জিতেন চৌধুরী বৈঠকে গিয়েই নারদ-কাণ্ডের প্রসঙ্গ তোলেন। জিতেন বলেন, ‘‘তৃণমূলের সাত জন সাংসদের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি লোকসভার নীতি কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। সেই কমিটির চেয়ারম্যান লালকৃষ্ণ আডবাণীর মতো সম্মাননীয় ব্যক্তি। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেখা যাচ্ছে, কমিটির কাজ শ্লথ গতিতে চলছে।’’ এই বিষয়ে স্পিকারের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলেন তিনি।
বৈঠকে তৃণমূলের কেউ হাজির ছিলেন না। স্বাভাবিক ভাবেই জিতেনকে থামানোরও কেউ চেষ্টা করেননি। সিপিএম সাংসদের অভিযোগ শুনে স্পিকার মন্তব্য করেন, কমিটির অভিযোগ খতিয়ে দেখার কাজ দ্রুত শেষ করা উচিত। বৈঠকে হাজির ছিলেন বিজু জনতা দলের নেতা ভর্ত্রুহরি মহতাব। তিনি নীতি কমিটিরও সদস্য। কাজ শুরু হতে দেরি হওয়ার কথা মেনে নিয়ে মহতাব জানান, ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত সাংসদদের জবাব চেয়ে নোটিস পাঠানো হয়েছে। বেশ কয়েক জন তাঁদের জবাবও পাঠিয়েছেন।
জিতেন দাবি তোলেন, লোকসভার মতো রাজ্যসভার নীতি কমিটিতেও বিষয়টি পাঠানো হোক। কারণ তৃণমূলের একজন অভিযুক্ত সাংসদ (মুকুল রায়) রাজ্যসভার সদস্য। ঘটনাচক্রে সোমবারই রাজ্যসভার নীতি কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা। সিপিএম সূত্রে খবর, বৈঠকে মুকুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে খতিয়ে দেখার দাবি তুলবেন সীতারাম ইয়েচুরি। মুকুল নিজেও ওই কমিটির সদস্য। ইয়েচুরি যুক্তি দেবেন, রাজ্যসভার নীতি কমিটির নিজে থেকে কোনও সাংসদের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখার ক্ষমতা রয়েছে।
সিপিএম ও কংগ্রেস, দু’দলই সংসদে তৃণমূলের হিংসার বিরুদ্ধে সরব হতে চায়। কিন্তু মহম্মদ সেলিম বা অধীর চৌধুরীর মতো রাজ্যের সাংসদরা পশ্চিমবঙ্গে ভোটের প্রচারে ব্যস্ত থাকবেন বলে আপাতত তা হচ্ছে না। আবার যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই তৃণমূলের বিশেষ কেউও এখন সংসদে হাজির থাকবেন না। সংসদের থেকে ভোটের ময়দানে এই লড়াইটাই বেশি বুদ্ধিমানের কাজ হবে বলে সিপিএম নেতারা মনে করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy