Advertisement
E-Paper

ডানা ছাঁটা হোক দীনেশের, দলের দাবি দিদির কাছে

দলের সব সাংসদ ও নতুন জিতে আসা বিধায়কদের মঙ্গলবার কালীঘাটে বৈঠকে ডেকেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগাম খবর, ব্যারাকপুরের সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী সেখানে থাকবেন না।

স্বপন সরকার

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৬ ০৩:৫৭

দলের সব সাংসদ ও নতুন জিতে আসা বিধায়কদের মঙ্গলবার কালীঘাটে বৈঠকে ডেকেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগাম খবর, ব্যারাকপুরের সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী সেখানে থাকবেন না।

কেন?

দীনেশের কথায়, ‘‘রেল মন্ত্রক সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির বৈঠক রয়েছে বুধবার। আমি কমিটির চেয়ারম্যান। তাই কালীঘাটে আসতে অপারগ।’’ কিন্তু তৃণমূল সূত্র বলছে, ‘ধুর্! খোঁজ নিন, ওনাকে মমতা আদৌ ডেকেছেন কি? ডাকলেও দীনেশদার কি দেখানোর মুখ আছে আর?
স্থায়ী কমিটির বৈঠক আদতে ছুতো!’

তৃণমূলের সুদিনে সত্যিই বড় দুর্দিন দীনেশের! হওয়াটাও অমূলক নয়। বিধানসভা ভোট যখন চলছে, তখন নারদ কাণ্ড নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছিলেন দীনেশ। এমনকী মমতার নেতৃত্বের প্রতি কার্যত অনাস্থা প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘‘আমি দলের সভাপতি হলে নারদ অভিযুক্তদের ঘরে বসিয়ে দিতাম।’’

দীনেশের সেই মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েছিল দল। তৃণমূলের বিপুল সাফল্যের পর এ বার তাঁর ডানা ছাঁটা অনিবার্য বলেই মনে করছেন দলের নেতারা। ভোটের ফল প্রকাশের পর দিনই পরিষদীয় দলের বৈঠকে সেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মমতা। বলেছিলেন, যুদ্ধের সময় যে সৈনিক ক্ষতি করার চেষ্টা করেন, তাঁকে বরদাস্ত করা হবে না। তৃণমূল সূত্রে খবর, অবিলম্বে দলের সহ-সভাপতি এবং লোকসভায় রেলের স্থায়ী কমিটির পদ থেকে দীনেশকে সরানোর জন্য তৃণমূলের অন্দরেই দাবি উঠেছে।

শুধু নারদ কাণ্ড নিয়ে মন্তব্য করা নয়, তৃণমূলে তাঁর সতীর্থ সাংসদরাই জানাচ্ছেন, ভোটের ফলাফল ঘোষণার আগেই সংসদের সেন্ট্রাল হলে অন্য দলের সাংসদদের জনে জনে ডেকে দীনেশ বলেছেন, ডাহা
হারবে তৃণমূল! এমনকী বিজেপির শীর্ষ নেতাদের কাছেও সেটা তিনি বলেছেন। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘দীনেশ আশা করেছিলেন, তৃণমূল হারবে। তার পর দল থেকে ইস্তফা দিয়ে তিনি ব্যারাকপুর থেকে জোটের প্রার্থী হিসেবে উপ-নির্বাচনে লড়বেন। ঘটনা হল, ওঁর এই
ইচ্ছের কথা গোপন থাকেনি।
বিজেপি নেতারাই সেটা আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন।’’

এই পরিস্থিতিতে দীনেশ অবশ্য এখন সুর নরম করেছেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘পরিষদীয় দলের বৈঠকে নেত্রী তো কারও নাম করে কিছু বলেননি। তা ছাড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
একজন সৎ মানুষ। আমি নেত্রীর সেই দেখানো পথেই হেঁটেছি।’’

তবে তৃণমূলের ওপরের সারির অধিকাংশ নেতার মতে, এই সব কথায় এখন আর চিঁড়ে ভিজবে না। দলের প্রাক্তন এক মন্ত্রীর কথায়, ‘‘দীনেশদা আক্ষরিক অর্থেই অকৃতজ্ঞের মতো কাজ করেছেন। মমতা ওঁকে রেলমন্ত্রী করেছিলেন। কিন্তু রেল বাজেটে যে
জনবিরোধী সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে চলেছেন, তা নেত্রীকেই গোপন করে যান! তার পর গত লোকসভা ভোটের সময় বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। নেত্রী সবই জানতেন।
তবু ব্যারাকপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিলেন। কিন্তু সবারই সহ্যের একটা সীমা থাকে।’’

দলের উষ্মা আঁচ করতে অসুবিধা হচ্ছে না দীনেশেরও। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি বলেছেন, ‘‘নেত্রীর বিরুদ্ধে কখনও সমালোচনা করিনি। তবে এর পরেও যদি আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তা হলে নিক। কী আর করবে? বড় জোর দল থেকে বহিষ্কার করতে পারে। সাংসদ পদ থেকে বরখাস্ত তো করতে পারবে না!’’

assembly election 2016 Dinesh Tribedi Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy