রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া যশবন্ত সিন্হা এবং দলীয় নেতা পূর্ণেন্দু বসু।
অডিয়ো ক্লিপ বিতর্কে এ বার নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাল তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোনে ‘অবৈধ’ এবং ‘বেআইনি’ ভাবে আড়িপাতা হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ। শনিবার তৃণমূলের এক প্রতিনিধি দল কমিশনের দফতরে গিয়ে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে ‘তদন্ত’ এবং ‘উপযুক্ত ব্যবস্থা’ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। ফৌজদারি মামলা রুজু করে তদন্তের দাবিও জানানো হয়েছে। ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া যশবন্ত সিন্হা এবং দলীয় নেতা পূর্ণেন্দু বসু।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বিজেপি-র আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য দলীয় সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে ১ মিনিট ২০ সেকেন্ডের একটি অডিয়ো ক্লিপ শুনিয়ে অমিত দাবি করেন, সেটি মমতা এবং কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা শীতলখুচির দলীয় প্রার্থী পার্তপ্রতিম রায়ের কথোপকথন। সেখানে এক মহিলা ও এক পুরুষ কণ্ঠকে শীতলখুচির ঘটনা নিয়ে কিছু কথা বলতে শোনা গিয়েছে। শনিবার তৃণমূলের প্রতিনিধিদল কমিশনে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, পঞ্চম দফার ভোটের আগের সন্ধ্যায় এই ক্লিপ বিজেপি ‘উদ্দেশ্য প্রণোদিত’ ভাবে প্রকাশ করেছে। শুধু তাই নয় সাংবাদিক বৈঠক করে ‘মমতা-পার্থ’র ওই ‘কথোপকথন’ শোনানো হয়েছে। তৃণমূলের মতে, এটা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং বেআইনি।
তৃণমূল কমিশনের কাছে তাদের অভিযোগে জানিয়েছে, বিজেপি-র নির্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর ফোনে আড়িপাতা হয়েছে এবং কথোপকথন রেকর্ড করা হয়েছে। এই ঘটনা ‘ভারতীয় সংবিধান’, ‘১৮৮৫ সালের ভারতীয় টেলিগ্রাফ আইন’, ‘২০০০ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইন’, ‘১৮৬০ সালের ভারতীয় দণ্ডবিধি’কে লঙ্ঘিত করেছে বলেও অভিযোগপত্রে জানিয়েছে তৃণমূল। ভারতীয় ফৌজদারি আইন অনুযায়ী মামলা করে আলাদা করে এই ঘটনার বিচারের দাবিও জানানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পূর্ণেন্দু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ফোনে আড়ি পেতে অডিয়ো টেপ ফাঁস করেছে বিজেপি। এটা বেআইনি। সাংবিধানিক অধিকার খর্ব হয়েছে। আমরা এর বিরুদ্ধেই কমিশনে নালিশ করেছি।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ফোন যদি ট্যাপ না করা হয়, তা হলে কী ভাবে একটি রাজনৈতিক দলের কাছে কথোপকথন পৌঁছে গেল?’’
বিজেপি যদিও সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। শনিবার তাদেরও এক প্রতিনিধি দল কমিশনে যায়। সেখান থেকে বেরিয়ে তারকেশ্বরের বিজেপি প্রার্থী স্বপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘ওই অডিয়োটি মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর দলের এক নেতার মধ্যে হয়েছে। নেটমাধ্যমে তাঁদের মধ্যে কেউ এক জন এটা প্রকাশ করেছেন।’’ একই সঙ্গে স্বপনের দাবি, ‘‘এটা ইচ্ছাকৃত ভাবেই ভাইরাল করা হয়েছে। নির্বাচনে ফায়দা তোলার জন্য এই অডিয়ো টেপের মাধ্যমে মেরুকরণের চেষ্টা করছে তৃণমূল। আমরা কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। কমিশন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।’’
বিজেপি-র এই দাবি অস্বীকার করেছে তৃণমূল। ডেরেক বলেন, ‘‘বিজেপি যা বলছে তা হাস্যকর। কারণ অডিয়ো টেপটি প্রকাশ করেছে বিজেপি, আমরা নই। তাই আমাদের ফায়দা তোলার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। এটা আসলে উত্তরপ্রদেশের আইটি সেলের নেতা অমিত মালব্যের কাজ। আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’’
একই সুর শোনা গিয়েছে যশবন্তের গলাতেও। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর ফোন ট্যাপ করা হয়েছে। আমি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলাম, আমি জানি, কোনও অপরাধীরও ফোন এ ভাবে ট্যাপ করা যায় না, নির্দিষ্ট মন্ত্রকের অনুমতি ছাড়া।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy