যাবতীয় জল্পনা ও সংশয়ের অবসান ঘটিয়ে মনোনয়নপত্র পরীক্ষায় উতরে গেলেন মুকুটমনি অধিকারী। অর্থাৎ, রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে শেষপর্যন্ত তিনিই লড়াই করছেন।
বুধবার রানাঘাট মহকুমাশাসকের দফতরে মনোনয়নপত্র পরীক্ষায় পাশ করে যান মুকুট। তাঁর মনোনয়নে সমস্যা হতে পারে ধরে নিয়ে মঙ্গলবার আপৎকালীন বিকল্প হিসাবে বিজেপির একাধিক নেতা নির্দল প্রার্থী হিসাবে ওই কেন্দ্রে মননয়ন জমা দিয়েছিলেন। তাঁরাও এ বার মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেবেন বলে জানিয়েছেন।
যদিও মুকুটমণি প্রথম থেকে দাবি করেছিলেন, তাঁর মনোনয়নে এ বার কোনও সমস্যাই নেই। অযথা ইচ্ছাকৃতভাবে তৃণমূল সমস্যার কথা রটাচ্ছে। এর পিছনে তাঁর নিজের দলের একাংশের মদত রয়েছে, এমন ইঙ্গিতও ছিল তাঁর কথায়। তাঁর কেন্দ্রে একাধিক বিজেপি নেতার নির্দল হিসাবে মনোনয়ন পেশের মধ্যেও দলের সেই অন্তর্দ্বন্দ্বের আভাস মিলেছিল। মুকুট নিজেও জানিয়েছিলেন, ওই নেতাদের মনোনয়ন সম্পর্কে তিনি কিছুই জানতেন না। বুধবার অবশ্য ওই নেতারা প্রত্যেকে মুকুটমণির প্রতি পূর্ণ সমর্থনের কথা জানিয়েছেন, যাঁকে বিরোধীরা ‘বিজেপির অন্তর্কলহ চাপার ব্যর্থ চেষ্টা’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন।
সরকারি চিকিৎসকের চাকরিতে ইস্তফা সংক্রান্ত সমস্যায় গত লোকসভা ভোটে একেবারে শেষ মুহূর্তে রানাঘাট কেন্দ্রে প্রার্থী হওয়া হয়নি মুকুটমণি অধিকারীর। ঠিক দু’বছরের মাথায় ফের সেই একই বিষয়কে কেন্দ্র করে বিধানসভা ভোটে তাঁর প্রার্থী হওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে বলে খবর ছড়িয়েছিল। এমনও শোনা গিয়েছিল যে, মুকুটমণির বদলে তাঁর বাবা প্রার্থী হবেন!
স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীও মঙ্গলবার বলেছিলেন, ‘‘মুকুটমণি যে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন সেখানে ৫ বছর চাকরি না করলে কারও ইস্তফা গৃহীত হয় না। ফলে আমরা হাইকোর্টে গিয়েছি। সেখানে আগামী সপ্তাহে শুনানি আছে। তার আগে উনি মনোনয়ন জমা দিলে আমাদের ‘নো অবজেকশন’ ছাড়াই দেবেন। তখন বিষয়টি নির্বাচন কমিশন বুঝবে।’’ এই বক্তব্যের পর মুকুটের ভোটে দাঁড়াতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে জল্পনা আরও বেড়়েছিল। যদিও মুকুটমণি নিজে সে সব কথা উড়িয়ে দিয়েছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, আইনগত ভাবে এ বার ভোটে দাঁড়ানোয় কোনও বাধাই তাঁর নেই। এবং সেটাই শেষে সত্যি হল।
এ দিন দুপুরেই মুকুটমণি ফেসুবকে বিদ্রূপের সুরে লেখেন, “স্ক্রুটিনি শেষ, এ বাবা! এ বার কী হবে? এ বার তো আর ঝড়ে আম পড়ল না, আমকুড়ানিরা অভুক্ত থাকবে। ইস!”
দলের কাউকে কি ইঙ্গিত করছেন এই পোস্টে?
মুকুট বলেন, “না। দলের কেউ নয়। আমরা সবাই এক। তৃণমূল চেষ্টা করছিল আমার মনোনয়ন আটকানোর। তা সফল হয়নি। ভোটের বাক্সে মানুষ এর জবাব দেবেন।” এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে রানাঘাট দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী বর্নালী দে বলেন, ‘‘ভাষাই সংস্কৃতির পরিচয়। এই মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার রুচি নেই আমার। মানুষ চেনেন আমাকে। তাঁরাই জবাব দেবেন।’’