Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: সন্ত্রাসের ভয়ে ঘরছাড়া, ‘আশ্রয়’ অসমেও

অভিযোগ, ভোট পরবর্তী হিংসার জেরে কোচবিহারের তুফানগঞ্জ বিধানসভা এলাকার এক হাজারেরও বেশি মানুষ ঘরছাড়া।

অসমের রণপাগলী ক্যাম্পে আশ্রিতরা।

অসমের রণপাগলী ক্যাম্পে আশ্রিতরা। নিজস্ব চিত্র।

পার্থ চক্রবর্তী এবং সঞ্জীব সরকার
তুফানগঞ্জ ও আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২১ ০৬:৪০
Share: Save:

কোথাও সন্ত্রাসের অভিযোগ তো কোথাও পুলিশের ধরপাকড়ের ভয়। অভিযোগ, যার জেরে ভোটের ফল বার হতেই ‘ঘরছাড়া’ হতে শুরু করেছেন অনেকে। যাঁদের অনেকে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে পড়শি অসমেও। বিভিন্ন জায়গায় শিবির করে থাকছেন তাঁরা।

অভিযোগ, ভোট পরবর্তী হিংসার জেরে কোচবিহারের তুফানগঞ্জ বিধানসভা এলাকার এক হাজারেরও বেশি মানুষ ঘরছাড়া। গেরুয়া শিবিরের নেতাদের দাবি, তাঁদের মধ্যে অসমের রণপাগলী এম ডি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন আড়াইশোর বেশি পুরুষ, মহিলা ও শিশু। ছাগোলিয়ার বেসিক স্কুলে রয়েছেন প্রায় সাড়ে চারশো জন। এ ছাড়াও অসমের ভাইবাজার এবং রণপাগলী এলাকার বিভিন্ন আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছেন কয়েক জন। সূত্রের খবর, অসম সরকার নিয়মিত দুই ক্যাম্পে আশ্রয়ে থাকা লোকজনকে খাবার জল এবং রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা করছে।

বিজেপি সূত্রে খবর, তুফানগঞ্জ ১ ব্লকের বালাভূত গ্রাম পঞ্চায়েতের ঝাউকুঠি, গোপালেরকুঠি, নাককাটিগাছ গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজারকুঠি এলাকার বেশিরভাগ লোক রয়েছেন রণপাগলীর শিবিরে। তুফানগঞ্জ ২ ব্লকের ভানুকুমারী, মহিষকুচি, শালডাঙা, ফলিমারি এবং বক্সিরহাটের জোড়াইমোড় ও রামপুরের অনেকেই রয়েছেন ছাগলিয়ার শিবিরে। দুই শিবির রয়েছেন সংখ্যালঘুদের একাংশও। ঝাউকুঠি এলাকায় বিজেপি কর্মী মেঘু দাস বলেন, ‘‘ফল ঘোষণার দু’দিন আগে মা মারা গিয়েছেন। ৩ মে তৃণমূল বাড়িতে এসে হুমকি দেয়। প্রাণে মারার কথা বলে। ভয়ে শিবিরে এসেছি। কবে বাড়ি ফিরব জানি না।’’ রণপাগলীতে আশ্রয়থ নেওয়া মহম্মদ সফুর আলি বলেন, ‘‘আমাদের একটাই অপরাধ, আমরা বিজেপি করি। তাই ঘরছাড়া।’’ রাজারকুটির বিজেপির বুথ সভাপতি স্বপন রায়ের অভিযোগ, ‘‘প্রাণ বাচাতে নদী সাঁতরে শিবিরে আশ্রয় নিয়েছি।’’

বৃহস্পতিবার রণপাগলী ও ছাগলিয়ার শিবিরে যান তুফানগঞ্জ বিধানসভার বিজেপির জয়ী প্রার্থী মালতি রাভা, দলের নেতা দীপেন প্রামাণিকরা। ঘর ছাড়াদের ফেরাতে দুই শিবিরে যান তুফানগঞ্জ মহকুমাশাসক কৌশিক সিনহা, তুফানগঞ্জ ২ ব্লকের বিডিও প্রসেনজিৎ কুণ্ডু ও তুফানগঞ্জের এসডিপিও জ্যাম ইয়াং জিম্বা। কোচবিহারের পুলিশ সুপার কে কান্নান বলেন, ‘‘প্রশাসন ও পুলিশের আধিকারিকরা দুই শিবিরে গিয়ে সকলকে আশ্বস্ত করেন। তাঁরা জানান, শুক্রবার পুরুষরা এলাকায় এসে পরিস্থিতি দেখবে। তারপর সবাই বাড়িতে আসবেন।’’ মালতি রাভা বলেন, “শিবিরে থাকা প্রত্যেকেই বাড়ি ফিরতে ভয় পাচ্ছেন। প্রশাসনকে বলব আগে পরিস্থিতি শান্ত করুন। তার পর নিরাপত্তা দিয়ে তাঁদের নিয়ে যেতে পারবেন।’’

এ দিকে, ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক অশান্তির জেরে আলিপুরদুয়ার জেলাতেও ঘরছাড়া বিজেপির অনেক নেতা-কর্মী অসমে আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ। বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের সন্ত্রাসের জেরে জেলার বিভিন্ন জায়গায় আমাদের নেতা-কর্মীরা ঘরছাড়া। পুলিশ মিথ্যা মামলায় ফাঁসাবে ভেবে তাদের অনেকে অসমে আশ্রয় নিয়েছেন।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী পাল্টা বলেন, ‘‘যদি কেউ অপরাধী হন, তা হলে তো ঘরছাড়া হবেনই। তবে বিজেপির এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগ করা উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC West Bengal Assembly Election 2021
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE