Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Minakshi Mukherjee

bengal Polls: ‘হেভিওয়েট’দের চিন্তায় রাখলেন তৃতীয় পক্ষ

নন্দীগ্রামে সেই গুলিচালনা এবং জমি আন্দোলন ইস্তক ভোটে বামেরা ব্রাত্যই।

নন্দীগ্রামের সিপিএম প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সোনাচূড়ায়। নিজস্ব চিত্র

নন্দীগ্রামের সিপিএম প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সোনাচূড়ায়। নিজস্ব চিত্র

সন্দীপন চক্রবর্তী
নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২১ ০৫:৩৫
Share: Save:

বাকি দু’জন বাইরে পা রাখলেই নিরাপত্তার বলয়। সঙ্গে সংবাদমাধ্যমের ঠেলাঠেলি ভিড়। দুই ‘হেভিওয়েটে’র মাঝখানে তিনি নন্দীগ্রামে ঘুরে বেড়ালেন প্রায় কারও নজর ছাড়াই। একই সঙ্গে ভাবনায় রাখলেন বড় দুই প্রতিপক্ষ শিবিরকেই।

তারকার দ্যুতির বিন্দুমাত্র না থেকেও এ বার নন্দীগ্রামে চর্চায় উঠে এসেছেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। নন্দীগ্রামে সেই গুলিচালনা এবং জমি আন্দোলন ইস্তক ভোটে বামেরা ব্রাত্যই। এ বারের বিধানসভা ভোটে এক দিকে মমতা বন্দ্যোপাপধ্যায় এবং অন্য দিকে শুভেন্দু অধিকারী যখন টক্করে নেমেছেন, রাজনৈতিক ভাবে প্রান্তিক শক্তির প্রতিনিধিত্ব করতে আসা মীনাক্ষী তার মধ্যেও আলোচনার জমি পেয়েছেন। ভোটের বিকেলে নন্দীগ্রাম বাজার থেকে সোনাচূড়া, নানা জটলায় আলোচনা চলেছে— সিপিএম প্রার্থী কত ভোট পাবেন? কার ভোটে কাটবেন? মীনাক্ষীর ভোটের ভাগকে মাথায় রেখেই নিজেদের অঙ্ক কষছে বিজেপি এবং তৃণমূলও।

হাজরাকাটা, ভূতার মোড়, গড়চক্রবেড়িয়া বা সোনাচূড়া, বৃহস্পতিবার দিনভর গোটা নন্দীগ্রামেই নিজের মতো ঘুরে বেড়িয়েছেন মীনাক্ষী। কোথাও জানলার ধারে ইভিএম রাখা হয়েছে দেখে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এজেন্টের খোঁজ মিলছে না খবর পেয়ে আবার দৌড়েছেন দাউদপুর। তবে সিপিএম সূত্রের বক্তব্য, নন্দীগ্রামের বেশির ভাগ বুথেই এ বার তাদের এজেন্ট ছিল। গত কয়েক বারের ভোটে যা অভাবনীয় ছিল বামেদের কাছে।

মীনাক্ষী বলছেন, ‘‘গত ১০ বছরে তৃণমূল এবং এখন তৃণমূল থেকে বিজেপি হয়ে যাওয়া লোকজনের সন্ত্রাসের জেরে এখানে দমবন্ধ পরিবেশ ছিল। এ বার খানিকটা ভয় কেটেছে মানুষের। ভোট দিতে বেরিয়েছেন অনেকেই।’’ ভোট কেমন হল? মীনাক্ষীর মতে, ‘‘১৪৪ ধারা জারি খাকা সত্ত্বেও ৬০০-৭০০ লোকের জমায়েত হয়েছে। একে যদি শান্তিপূর্ণঁ ভোট বলে, তা হলে ভোট শান্তিপূর্ণ!’’

এ বারের নন্দীগ্রামে ছবি তীব্র মেরুকরণের। নন্দীগ্রাম-২ ব্লকে সংখ্যালঘু ভোট তুলনায় কম, সেখানে বিজেপির দাপট বেশি। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে মিশ্র জনবসতি বেশি, সেখানে মেরুকরণও আরও তীব্র। এমতাবস্থায় সিপিএম প্রার্থী কোন এলাকায় কত ভোট পেলেন, সে দিকে তীক্ষ্ণ নজর রয়েছে বিজেপি এবং তৃণমূল দুই শিবিরেরই। মীনাক্ষীর সঙ্গীরাও বলছেন, দু’পক্ষের উদ্বেগ আছে বলেই কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই শাসক দলই নন্দীগ্রামে বামেদের পতাকা-ফেস্টুন খুলে দিয়েছে যখন যেমন পেরেছে।

রেয়াপাড়ায় ভোটের সকালে গোপাল সামন্ত নামে এক দোকানদার বলছিলেন, ‘‘পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ওই দিদি (মীনাক্ষী) কাজের দাবি, গ্যাস-তেল-জিনিসপত্রের দামের কথা বলেছে। এখানে ওই দিদিই শুধু এগুলো বলেছে। মানুষ শুনেছে কিন্তু ভোট কত দেবে, জানি না!’’ মীনাক্ষী যেন অন্য পক্ষের ভোটটাই কাটেন, এমনই অদ্ভুত আশায় রয়েছে বিজেপি ও তৃণমূল, দুই শিবির!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE