প্রতীকী ছবি।
দেশে ফের বাড়ছে কোভিডের সংক্রমণ। সে কথা মাথায় রেখেই বুথে ভোটার ও ভোটকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই নির্দেশ অনুযায়ী, প্রতিটি বুথেই রাখতে হবে থার্মাল স্ক্যানার, পিপিই সেট, মাস্ক-সহ নানা জিনিস। ভোটদান পর্ব শেষ হলেই কোভিড-সুরক্ষার ওই সমস্ত ব্যবহৃত সরঞ্জাম কোভিড-বর্জ্যের মতো সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে নষ্ট করে ফেলতে হবে। শুধু তা-ই নয়, যে লরি বা গাড়িতে করে ওই জঞ্জাল মেডিক্যাল বর্জ্য সংগ্রহকারী সংস্থার কাছে পৌঁছতে হবে, তাতে লাগাতে হবে জিপিএস ব্যবস্থা। যার মাধ্যমে লরিটির গতিবিধির উপরে নজর রাখা যাবে। প্রশাসন যে সংস্থার কাছে ওই বর্জ্য তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল, তাদের কাছেই সেই লরি পৌঁছল কি না, জিপিএসের মাধ্যমেই তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
ভোটের দিন কোভিড-সুরক্ষা বিধি মেনে চলার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের পাঠানো এই নির্দেশিকা নিয়ে কার্যত নাজেহাল অবস্থা নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসনের পদস্থ অফিসার ও কর্মীদের। তাঁদের সমস্যা একটাই। তা হল, পর্যাপ্ত কর্মীর অভাব। শুক্রবার জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মানতেই হবে। কিন্তু যে পরিমাণ নির্দেশ কমিশন পাঠাচ্ছে, তা কার্যকর করতে অধিকাংশ অফিসার ও কর্মীকেই মাঝরাত পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে। কেউ কেউ অসুস্থও হয়ে পড়ছেন। কিন্তু ছুটি মিলছে না।
ওই প্রশাসনিক কর্তা বলেন, ‘‘কমিশনের নির্দেশ তো পালন করতেই হবে। কিন্তু সমস্যা হল, কর্মী কম। এক দিকে সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। তার উপরে কোভিড-সুরক্ষার এই সমস্ত জিনিসপত্র সরবরাহ করতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা হচ্ছে সকলের।’’
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী, ভোটের দিন হাওড়ার ৫৫৫৬টি বুথে রাখতে হবে থার্মাল স্ক্যানার, পিপিই, গ্লাভস, স্যানিটাইজ়ার ও ফেস শিল্ড-সহ কোভিড-সুরক্ষার সমস্ত জিনিসপত্র। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সমস্ত জিনিসের মধ্যে থার্মাল স্ক্যানার, ফেস মাস্ক, ফেস শিল্ড, স্যানিটাইজার, পিপিই, রাবারের গ্লাভস, বর্জ্য ফেলার ঢাকনা দেওয়া বালতি এবং প্ল্যাস্টিকের ব্যাগ (যে ব্যাগে কোভিড-বর্জ্য রাখা হবে) সরবরাহ করবে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এ ছাড়া, জেলা প্রশাসনকে জোগাড় করতে হবে সমস্ত থার্মাল স্ক্যানারের ব্যাটারি, ব্যাক্টিরিয়া-রোধী সাবান, কোভিড-বর্জ্য ফেলার বাক্স, সেই বাক্স বন্ধ করার সরঞ্জাম এবং কোভিড সচেতনতা নিয়ে পোস্টার।
জেলা প্রশাসনের এক অফিসার বলেন, ‘‘কোভিড পরিস্থিতিতে নির্বাচন হওয়ায় রাজ্য সরকারের পাশাপাশি প্রতিটি জেলা প্রশাসনের দায়িত্ব যেমন বেড়েছে, তেমনই কোটি কোটি টাকা খরচও বেড়েছে। হাওড়ার সব বুথের জন্য শুধু গ্লাভস কিনতেই খরচ হবে ৪৭ লক্ষ টাকা। এর পরে তো অন্যান্য খরচ আছেই। ভোটের আগে এত জিনিস জোগাড় করা এবং সব বুথে পাঠানো একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কোভিড-সুরক্ষার এই সব জিনিসপত্র কেনাই শুধু নয়, নির্বাচন কমিশন নির্দেশ দিয়েছে, ভোটের তিন দিন আগে থেকে প্রতিটি বুথকে প্রতিদিন জীবাণুমুক্ত করতে হবে। নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পরেও তা করতে বলা হয়েছে। কিন্তু করার লোক কোথায়? এই প্রশ্নই এখন ঘোরাফেরা করছে হাওড়া জেলা প্রশাসনের অন্দরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy