Advertisement
E-Paper

ভাঙা ঘরে ধুলোয় চাদর পেতে ঘুম

ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতেই স্কুলে জল্পনা, কার কার চিঠি আসবে। সহকর্মীদের সঙ্গে দেখি আমার নামেও চিঠি এসেছে। খানিক উৎকণ্ঠা নিয়েই শুরু হল প্রস্তুতি। ভোটের কাজ সামলাতে এ বার আমার গন্তব্য দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের নতুনপল্লিতে।

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৬ ০০:৫৪
সুব্রত চট্টরাজ
(প্রিসাইডিং অফিসার)

সুব্রত চট্টরাজ (প্রিসাইডিং অফিসার)

ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতেই স্কুলে জল্পনা, কার কার চিঠি আসবে। সহকর্মীদের সঙ্গে দেখি আমার নামেও চিঠি এসেছে। খানিক উৎকণ্ঠা নিয়েই শুরু হল প্রস্তুতি। ভোটের কাজ সামলাতে এ বার আমার গন্তব্য দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের নতুনপল্লিতে।

ভোটের আগের দিন সকাল সকাল বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লাম। ঠিক সময়ে ভোটের জিনিসপত্র গ্রহণ কেন্দ্র (ডিসিআরসি) দুর্গাপুর গভর্নমেন্ট কলেজে পৌঁছেই শুরু হল বিপত্তি। ভীষণ রোদ। সঙ্গে উপরি পাওনা ধুলো। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও মোবাইল নম্বর নথিভুক্ত করাতে বেগ পেতে হল। তার উপর ফোনের নেটওয়ার্ক সমস্যা। ততক্ষণে অবশ্য পরিচয় হয়ে গিয়েছে দলের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে। শেষমেশ প্রথম পোলিং অফিসারের ফোন থেকে জরুরি সব যোগাযোগ সারতে হল।

সব জিনিসপত্র নিয়ে ডিসিআরসি থেকে বেরিয়ে এ বার বাস খোঁজার পালা। দীর্ঘ ২০ মিনিট চলে গেল বাস খুঁজে পেতে। খানিক দূর গিয়ে ভিড়িঙ্গি কালীবাড়ির সামনে আমাদের নামিয়ে দেওয়া হল। ভারী জিনিসপত্র হাতে ১০ মিনিট ধরে হেঁটে পৌঁছলাম ভোটকেন্দ্র নতুনপল্লি আদর্শ বিদ্যালয়ে।

ভোটকেন্দ্রে ততক্ষণে পৌঁছে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। স্কুলের গেট পেরিয়ে ঢুকতেই দেখি দু’টো কুকুর ঘেউ ঘেউ করে তেড়ে এল। বোধহয় ওদের নিদ্রাভঙ্গ করলাম আমরা। আমাদের জন্য নির্দিষ্ট ঘরে ঢুকে দেখি পুরু ধুলোর স্তর চারদিকে। বিদ্যুতও নেই ঘরে। তাকিয়ে দেখি, দেওয়ালের একাংশ আবার ভাঙা। গা-মুখ ধুতে গিয়েও বিপত্তি। জল নেই।

রাতে বিদ্যুত আসার পর খানিক হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। শেষমেশ রাত ৮টা নাগাদ ভোটকেন্দ্রে জল এল। ভোটের জিনসপত্র সব গুছিয়ে নিতে নিতেই রাত হয়ে গেল। খাবারের সন্ধানে বেরতে হল এ বার। ৮০ টাকা মিলে খাবার মিলল। তবে তাতে ভাত, সব্জি প্রায় নেই বললেই চলে। শুধু রয়েছে মাছের ছোট্ট একটা টুকরো। ‘মিলে’র বহর দেখে ভোটের দিন কিছু না খাবার সিদ্ধান্ত নিলাম।

কোনও রকমে ধুলোর উপর চাদর পেতে রাতটা কাটিয়ে ভাবলাম স্নানটা সেরে নিই। কিন্তু সে গুড়ে বালি। ফের জল নেই। ভোট শুরু হল সকাল সকাল। খানিক বাদেই দেখি অন্যের বুথ স্লিপ হাতে ভুয়ো ভোটারদের ভিড় লাইনে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর তৎপরতায় অবশ্য গোলমাল কিছু হয়নি। ভোট শেষ হওয়ার পর সব গুছিয়ে বেরলাম যখন, তখন রাত ৮টা। ফের মিনিট দশেক হেঁটে বাসে চাপা। এ বার অন্য বিপত্তি। ডিসিআরসি-র এক কিলোমিটার আগে বাস দাঁড়িয়ে পড়ল। সামনে যানজট, বাস আর এগোবে না। ডিসিআরসি থেকে যখন বেরিয়ে এলাম, তখন রাত ১০টা।

(লেখক ইছাপুর এনসি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক)

assembly election 2016 preciding officer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy