প্রতীকী ছবি।
সিপিএম শিলিগুড়িতে ‘স্থবির’ দলে পরিণত হয়েছে বলে জানিয়ে দলের একাংশের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন পদত্যাগী যুব নেতা শঙ্কর ঘোষ। বুধবার বিকেলে শঙ্কর প্রকাশ্যে দল ছাড়ার ঘোষণা করেন। রাতে সিপিএম তাঁকে প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করে।
মঙ্গলবারই তিনি দলের জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকারকে চিঠি দিয়ে পদত্যাগের কথা জানান। ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করে দল ছেড়ে শঙ্কর শিলিগুড়ির সিপিএমকে কার্যত তুলোধোনা করেছেন বলেই দলের একাংশ মনে করেছেন। তাঁর চিঠি নিয়ে বামেদের ছাত্র-যুব মহলে জোর আলোড়ন পড়েছে। কয়েকজনের স্বার্থে দল চালানো, পরামর্শ বা আলোচনা করতে চাইলে চার দেওয়ালের মাঝে অপদস্থ ও অভিযুক্ত করার কথা বলেছেন শঙ্কর। সরাসরি নাম না করলেও অশোক ভট্টাচার্য, জীবেশ সরকারদের মতো নেতাদের দিকেই যে এই যুব নেতা আঙুল তুলেছেন তা স্পষ্ট।
দলীয় সূত্রের খবর, শিলিগুড়িতে সিপিএমের অন্দরে ‘চাপিয়ে’ দেওয়ার রাজনীতি নিয়ে ক্ষোভ ছিলই। দু’একজন নিজেদের মতো একদল অনুগামীকে নিয়ে দল চালান বলেও অভিযোগ। ভোটে দাঁড়ানো থেকে, প্রার্থী চয়ন, পুরসভায় বোর্ডে দায়িত্ব বণ্টন, কাজের অগ্রাধিকার, কাজের ছাড়পত্র বা দলের কোনও সিদ্ধান্ত ওই নেতারাই নিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ। সামগ্রিক মতামত বা বিপরীত মতামতের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে শঙ্করের মতো নেতা প্রথমবার খোলাখুলি সামনে আনেন। পাহাড় নিয়ে দলের দিশাহীন ভূমিকা, আইএসএফের সঙ্গে জোট নিয়ে আপত্তির কথাও শঙ্কর চিঠিতে জানান।
শঙ্কর বলেন, ‘‘বামপন্থা রাজনীতির থেকে বেশি জীবনের অঙ্গ, ধারা। তাই করার চেষ্টা করেছি। অথচ এক-দু’জন সব ঠিক করে দল চালাচ্ছেন। কারও কথা শোনা হচ্ছে না। দিনের পর দিন তা হয়েছে। এটা বামপন্থা নয়। দলের ছিলাম বলে এসব বলিনি।’’
কয়েক বছরে শিলিগুড়ি সিপিএম অনেকেই ছেড়েছেন। ফাঁসিদেওয়ার প্রাক্তন বিধায়ক ছোটন কিস্কু, সহকারী সভাধিপতি জ্যোতি তিরকে, শিলিগুড়ি পুরসভায় মেয়র পারিষদ পরিমল মিত্র অন্যতম। সকলের অভিযোগ ছিল, দল সার্বিক ভাবে মানুষের থেকে সরে যাচ্ছে। একদল বছরের পর বছর ভোটে দাঁড়াচ্ছেন। সমস্ত পদে বসছেন। আরেকদল পার্টির পদ আগলে বসে থাকছেন। দলের কঠিন সময়ে মাঠে ময়দানের মানুষের সঙ্গে দ্বিতীয় দলের লোকজনের কোনও সম্পর্কই নেই।
এ বার ভোটের মুখে শঙ্করও সেই অভিযোগ তুললেন। যদিও জেলা সম্পাদক জীবেশের দাবি, ‘‘ভোটের মুখে দলকে ব্ল্যাকমেল করছে। ও কিছু কাজকর্ম নিয়ে দল প্রশ্ন করেছে, তা তো বলেনি। উল্টে, বাস্তবের উল্টো সব অভিযোগ করছে।’’ আর সিপিএমের শিলিগুড়ির প্রার্থী অশোকবাবুর কথায়, ‘‘যা করল সেটা্ ভাল করেনি। তবে দলে এর কোনও প্রভাব পড়বে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy