Advertisement
E-Paper

West Bengal Election 2021: ‘কোন্দল’ সামলাতেই কি রানিগঞ্জে তাপস

তাপসবাবুর প্রশাসনিক দক্ষতা রয়েছে। এটিও তাঁকে রানিগঞ্জ কেন্দ্রে দাঁড় করানোর অন্যতম কারণ বলে দাবি।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২১ ০৭:৪৭
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

১৯৬২ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত রানিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রটি থেকে এক বার ছাড়া বরাবর জিতেছেন বাম প্রার্থীরা। এমন ‘ঠাঁই’তে কেন তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন প্রার্থী করল দল, তা নিয়ে চর্চা রয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একাংশের পর্যবেক্ষণ: এক দিকে, দলীয় ‘কোন্দল’ সামাল দেওয়া এবং অন্য দিকে, তাপসবাবুর ‘স্বচ্ছ ভাবমূর্তি’কে কাজে লাগাতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এ পর্যন্ত রানিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রটির তিন বার পুনর্গঠন হয়েছে। ১৯৬২-তে অণ্ডাল গ্রামীণ এলাকা ও রানিগঞ্জ পুর-এলাকা নিয়ে ছিল এই কেন্দ্র। ১৯৬৭-তে রানিগঞ্জের পুর ও গ্রামীণ এলাকায় নিয়ে তৈরি হয় এই কেন্দ্র। পরে ২০১১-য় রানিগঞ্জ পুর এলাকা এবং অণ্ডাল গ্রামীণ এলাকা কেন্দ্রটির বর্তমান রূপ তৈরি হয়। ২০১১-র ভোটে এ পর্যন্ত মাত্র এক বারই কেন্দ্রটিতে হেরেছিলেন বামপ্রার্থী। ২০১৬-য় ফের এই কেন্দ্র থেকে জেতেন সিপিএম প্রার্থী রুনু দত্ত। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে অবশ্য দেখা যায়, এই বিধানসভা এলাকায় ভোটপ্রাপ্তির নিরিখে বামেরা নেমে আসে তিনে। প্রায় ৫১ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রথম
হয় বিজেপি।

জেলা তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, এমন একটি কেন্দ্র জিততে প্রার্থী নির্বাচনের জন্য তিনটি দিক নিয়ে চর্চা চলছিল। প্রায় ৩০ শতাংশ হিন্দিভাষী ভোটের কথা মাথায় রেখে ভি শিবদাসন (দাশু), যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি রূপেশ যাদব প্রমুখের নাম সামনে এসেছিল। পাশাপাশি, এই বিধানসভা কেন্দ্রে ব্যবসায়ীদের ‘প্রভাব’ থাকায় চর্চায় ছিল রানিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সন্দীপ ভালোটিয়ার নাম। এ ছাড়া, প্রায় ২০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটের কথা মাথায় রেখে আলোচনা হয় প্রাক্তন বিধায়ক সোহরাব আলির নাম নিয়েও।

কিন্তু তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের একাংশের দাবি, যে নামগুলি নিয়ে আগে চর্চা হচ্ছিল, দলের অন্দরে তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই ‘গোষ্ঠী-রাজনীতি’র অভিযোগ রয়েছে। এমনকি, অণ্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, উখড়া পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপ-প্রধানদের আড়াই বছর করে দায়িত্ব ভাগের ঘটনাও এই বিধানসভা কেন্দ্রে ঘটেছে। যদিও সংশ্লিষ্ট নেতারা ‘গোষ্ঠী-রাজনীতি’র কথা স্বীকার করেননি। এই পরিস্থিতিতেই এই সব আলোচনাকে সরিয়ে রেখে শেষ মুহূর্তে উঠে আসে তাপসবাবুর নাম। কারণ, তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, তাপসবাবু কোনও গোষ্ঠীভুক্ত নন। বরং, সব ‘গোষ্ঠী’র সঙ্গেই তাঁর সদ্ভাব। পাশাপাশি, তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। সেই সঙ্গে রয়েছে ‘ভূমিপুত্র-ফ্যাক্টর’ও। কারণ, তাপসবাবুর আদি বাড়ি, দুর্গাপুরের গোপালমাঠে। ফলে, তিনি অণ্ডাল গ্রামীণ এলাকার মানুষের ‘কাছের লোক’ বলেই পরিচিত, দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের।

এ ছাড়া, ১৯৯৬, ২০১১, ২০১৬-য় তিন বারের বিধায়ক, আসানসোল পুরসভার প্রাক্তন মেয়র, আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) চেয়ারম্যান তাপসবাবু। ফলে তাপসবাবুর প্রশাসনিক দক্ষতা রয়েছে। এটিও তাঁকে রানিগঞ্জ কেন্দ্রে দাঁড় করানোর অন্যতম কারণ বলে দাবি।

তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন অবশ্য বলেন, ‘‘জেলাতেই কোথাও কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। দল যাঁকে যোগ্য মনে করেছে তাঁকেই প্রার্থী করেছে। আমরা সবাই মিলে কাজ করছি।’’ তাপসবাবুও বলেন, ‘‘আমি সবাইকে নিয়েই চলছি।’’ তবে বিদায়ী বিধায়ক, সিপিএমের রুনুবাবুর টিপ্পনী: ‘‘তৃণমূল যাকে খুশি প্রার্থী করতেই পারে। কিন্তু রানিগঞ্জের মাটি লাল।’’

TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy