শোকজের মুখে পড়েও ভ্রূক্ষেপ নেই। আচরণবিধির বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না করে এ বার নির্বাচন কমিশনকেই তীব্র আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বীরভূমের মুরারইয়ের জনসভা থেকে মমতার হুঙ্কার, ‘‘যা বলেছি বেশ করেছি। আবার বলব। হাজার বার বলব। ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বুঝে নেব। আমার বিরুদ্ধে কুৎসা করলে, ইঞ্চিতে ইঞ্চিতেই উত্তর দিতে হবে।’’ বেনজির ভাষায় নসীম জৈদীদের সমালোচনা করে মমতার মন্তব্য কংগ্রেস আর বিজেপির কথায় একতরফা ভাবে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডের সঙ্গে সঙ্ঘাতে জড়িয়েছিলেন মমতা। পুর নির্বাচনের আগে আর এক রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায়ের উর এমন চাপ তৈরি করেছিলেন যে সুশান্তবাবু নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাঝ পথেই ইস্তফা দিয়ে চলে যান। এ বার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও সঙ্ঘাত শুরু বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর। আগের চেয়েও চড়া সুরে নির্বাচন কমিশনকে আক্রমণ করলেন তৃণমূলনেত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর এই আচরণের তীব্র নিন্দায় সরব বিরোধী দলগুলি-সহ বিভিন্ন মহল।
জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন আমাকে শোকজ করেছে, বলছে কেন ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বুঝে নেব বলেছি? বেশ করেছি বলেছি। আবার বলব। হাজার বার বলব। আমার নামে কুৎসা করবে, অপপ্রচার করবে, আর আমি জবাব চাইতে পারব না। ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে জবাব নেব।’’
এতেই থামেননি মুখ্যমন্ত্রী। সরাসরি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও তুলেছেন কমিশনের বিরুদ্ধে। তিনি প্রথমে বলেন, কংগ্রেসের কথায় চলছে নির্বাচন কমিশন। কংগ্রেস যা বলছে, কমিশন তাই করছে। তার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কংগ্রেস আর বিজেপির কথায় কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। শেষে বলেন, কংগ্রেস, সিপিএম আর বিজেপি যা বলছে, নির্বাচন কমিশন শুধু তাই করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘পুলিশে রোজ একটা করে লোককে সরিয়ে দিচ্ছ। ৩০০-৩৫০ ওসি-কে সরিয়ে দিয়েছে। কলকাতার সিপি রাজীব কুমারকে সরিয়ে দিয়েছ। ওর মতো ব্রাইট অফিসার হয় না। তাকে পর্যন্ত তোমরা সরিয়ে দিয়েছ। কংগ্রেস যা বলছে তাই তোমরা করছ। এমনকী ভোটের আগের দিন দুর্গাপুরের ওসিকে সরিয়ে দিয়েছ।’’ মমতার অভিযোগ এক তরফা ভাবে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। এর পরই তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের পাশে দাঁড়ান মমতা। বলেন, ‘‘শুধু বলছে অনুব্রতকে গ্রেফতার করতে হবে। কেন গ্রেফতার করবে? আগে সেলিমকে কেন গ্রেফতার করবে না? অনুব্রত কেন গ্রেফতার হবে? সেলিম কেন গ্রেফতার হবে না? অধীর কেন গ্রেফতার হবে না? সুজন কেন গ্রেফতার হবে না? বিমান কেন গ্রেফতার হবে না? বুদ্ধ কেন গ্রেফতার হবে না? যাও গিয়ে আগে ওদের গ্রেফতার করে এসো।’’
আরও পড়ুন:
জোর ধাক্কা, এ বার মমতাকেই শোকজ করল কমিশন
নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে এমন বেনজির ভাষায় মুখ্যমন্ত্রীর আক্রমণ গোটা দেশেই বেনজির। বিরোধীরা মুখ্যমন্ত্রীর তীব্র নিন্দা করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy