পুজোয় আমি ‘খলনায়ক’। তাই কি আমায় ‘অসুর’ নিয়ে বলতে বলা হল? এই কথাটাই অনেকক্ষণ ধরে ভেবে চলেছি। কারণ, বাস্তবে তো এমন কোনও কাজ আমি করিনি, যেটার সঙ্গে অসুরের মিল পাওয়া যায়। আসলে অসুর মানেই তো ধরে নেওয়া হয় খারাপ কিছু। কিন্তু জানেন তো, সবটাই আসলে দৃষ্টিভঙ্গি।
মা দুর্গা দুষ্টের দমন করেছিলেন। অর্থাৎ দেবী দুর্গা যেমন শক্তির প্রতীক, তেমনই অসুরের ক্ষেত্রেও আমরা ধরে নিই উনি অশুভ শক্তির প্রতীক। যদিও আমি অত পুরাণ জানি না। তাই এই বিষয়ে বেশি তত্ত্বকথা বলতে পারব না। তবে আমার সত্যিই মনে হয়, সবটাই যার যেমন দৃষ্টিভঙ্গি। যেমন, ‘রক্তবীজ ২’ ছবিতে আমার চরিত্রটি হল মুনির আলম। আমাকে দেখে দর্শকের স্বাভাবিক ভাবেই রাগ হবে। কিন্তু আমার ভাবনা থেকে ভাবার চেষ্টা করলে সবটাই ঘুরে যাবে।
তাই আমার চোখে অসুরও কিন্তু ‘নায়ক’। কোনও ভাবেই ‘অশুভ শক্তি’ বলে আমি কখনও দাগিয়ে দিতে রাজি নই। কয়েক বছর হল নিজের প্রযোজনা সংস্থা শুরু করেছি আমি। তার আগে অনেক প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে কাজ করেছি অভিনেতা হিসাবে। নিজের ব্যবসা শুরু করার অর্থ হল স্বাধীন ভাবে কাজ করতে চাই। আমি যে ধরনের গল্প দর্শককে বলতে চাই বা যে ধরনের চরিত্রে আমি অভিনয় করতে চাই, তার সঙ্গে প্রযোজকের ভাবনাচিন্তার মিল না-ই থাকতে পারে। সেখানে কি আমি বলব, সেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ভাল নয়?
আরও পড়ুন:
আমি এমন প্রযোজকের পাল্লাতেও পড়েছি, যিনি ভেবেছেন ১০-১১ দিনে সিনেমা তৈরি করবেন। কোনও রকমে সেই ছবি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দিয়ে দেবেন। কিন্তু আমি তো তা চাই না। সে ক্ষেত্রে আমার দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিচার করলে সেই প্রযোজককে আমার ‘খারাপ’ বলে মনে হবে। কিন্তু আমি যদি তাঁর দিক থেকে ভাবি। উনি তো ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যবসা করতে এসেছেন। লাভ করতে এসেছেন। শিল্পীসত্তা বা সৃজনশীলতা তিনি না-ই বুঝতে পারেন। তাই আমার মনে হয়, আমাদের কখনও কাউকে খারাপ বা ভাল বলে সম্বোধন করাই উচিত নয়। কে কোন পরিস্থিতিতে পড়ে খারাপ হতে বাধ্য হয়েছে, তা কারও জানা সম্ভব নয়।
তবে নিজের ক্ষমতা বা শক্তিকে সবসময় ইতিবাচক ভাবেই ব্যবহার করা উচিত। এই ক’টা বছরে মানুষ অঙ্কুশের এটুকুই উপলব্ধি হয়েছে।