ছোট পর্দায় কেটেছে অনেকগুলি বছর। এ বার বড় পর্দার পালা। সব্যসাচী চৌধুরী গুটিপোকা থেকে প্রজাপতি। তাঁর হাতে একাধিক ছবির কাজ। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য এসভিএফ প্রযোজনা সংস্থার ‘বামাক্ষ্যাপা’। পরিচালনায় সায়ন্তন ঘোষাল। স্টার জলসার ‘সাধক বামাক্ষ্যাপা’র পর আবারও নিজের অভিনীত চরিত্রে দেখা দেবেন সব্যসাচী। শুক্রবার তারকাখচিত অনুষ্ঠানে ঘোষণার পরেই উপস্থিত সাংবাদিকদের নজর তাঁর উপর।
সায়ন্তন মানেই তাঁর ছবি রহস্যধর্মী। হঠাৎ ঘরানা বদল কেন? প্রশ্ন ছিল আনন্দবাজার অনলাইনের। পরিচালকের যুক্তি, “এক ঘরানার ছবি বানানো মানে ১০টা-৫টার চাকরি যেন! কেন করব সেই কাজ? ওই জন্যই ঘরানা বদল।”
সব্যসাচী এ দিন সাদা পাজামা-পাঞ্জাবিতে শ্বেতশুভ্র। গায়ে জড়ানো সূক্ষ্ম কাজের পাতলা চাদর।
বড় পর্দায় সাধকের জীবন আরও বড় ভাবে দেখানো হবে? প্রশ্ন রেখেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। সব্যসাচীর জবাব, “অবশ্যই। এমন অনেক দৃশ্য থাকবে যা ছোট পর্দায় দেখানো সম্ভব হয়নি। তা ছাড়া, ছোট পর্দায় এক ভাবে দেখায়। বড় পর্দায় সেই একই বিষয় আরও বড় ভাবে ধরা পড়ে।” এই ছবিতে তিনি মুখ্য অভিনেতা এবং সৃজনশীল পরিচালক। চিত্রনাট্য তৈরিতেও রয়েছেন। একটি প্রযোজনা সংস্থা, একটি ছবি তাঁর সামনে কি অনেক রাস্তা খুলে দিল? সে কথা মেনে নিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, ছোট পর্দায় সাধকের চরিত্রে অভিনয়ের সময় তিনি বামাক্ষ্যাপাকে নিয়ে অনেক পড়াশোনা করেছিলেন। সেই জ্ঞান কাজে লাগছে। তা ছাড়া, তিনি নিজেই সম্প্রতি ছোট ছবি পরিচালনা করেছেন। যা গত কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হয়েছে।

সব্যসাচী ছাড়া বাকি অভিনেতারা নতুন, বেশির ভাগ মঞ্চাভিনেতা। তবে এখনও কেউ চূড়ান্ত হননি। পরিচালকের ইচ্ছে, এপ্রিল মাস থেকে শুটিং শুরু করবেন। সম্প্রতি তাই রামপুরহাট-সহ বীরভূমের প্রত্যন্ত অঞ্চল ঘুরে দেখতে গিয়েছিলেন। রামপুর হাট, তারাপীঠে বামাক্ষ্যাপার সাধনপীঠ হিসেবে পরিচিত জায়গাতেই কি ছবির শুটিং হবে? পরিচালক জানিয়েছেন, আগের মতো কিছুই আর নেই। বীরভূমের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও শহরের ছোঁয়া। তাই সেট বানিয়ে কলকাতাতেই শুটিং করবেন। সব্যসাচী থাকায় সায়ন্তন অনেকটাই ভরসা পেয়েছেন। বললেন, “ওকে নিয়ে তারাপীঠে গিয়েছিলাম। সব্যসাচীকে দেখার জন্য দর্শনার্থীদের ভিড় দেখে আমি হতবাক।”
এত ইতিবাচক দিক থাকার পরেও প্রশ্ন, কোথাও কি ‘টাইপকাস্ট’ হয়ে যাচ্ছেন অভিনেতা? বার বার সাধকের চরিত্রেই ভাবা হচ্ছে তাঁকে?
সব্যসাচী এবং সায়ন্তন উভয়কেই এই প্রশ্ন করা হয়েছিল। সায়ন্তন এই ভাবনাকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তাঁর পাল্টা যুক্তি, “এই মুহূর্তে সাধকের ভূমিকায় সব্যসাচীর মতো আর কেউ অভিনয় করতে পারবেন না। একই ভাবে ও আগেও এই চরিত্রে অভিনয় করায় সবটাই নখদর্পণে। যা আমাদের কাজে লাগবে। পাশাপাশি, এই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ওর জনপ্রিয়তা হেলাফেলার মতো নয়।” চেনা চরিত্র পেয়ে খুশি অভিনেতাও। চরিত্রের জন্য রাখা দাড়িতে হাত বোলাতে বোলাতে তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, “চেনা চরিত্রে আরও একবার অভিনয় করলে সমস্যা কোথায়? বরং দর্শক তাড়াতাড়ি ছবি, চরিত্রের সঙ্গে নিজেকে মেলাতে পারবেন। এটা ছবির ব্যবসার পক্ষে সুবিধাই হবে।”
আরও পড়ুন:
সব্যসাচী এ-ও জানান, নির্দিষ্ট চরিত্রে বন্দি থাকবেন না বলেই ‘রাপ্পা রায়’ ছবিতে তিনি জবরদস্ত খলনায়ক! বললেন, “সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী ছবি। চরিত্রেও অনেক স্তর রয়েছে। সেই জন্যই রাজি হয়েছি।” কোনও দিন নায়ক হওয়ার বাসনা নিয়ে অভিনয় দুনিয়ায় পা রাখেননি। “দর্শক আমায় ভাল অভিনেতা হিসেবে মনে রাখুন”, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা সব্যসাচীর।