মডেলিং থেকে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। তার পরে, ‘বং কানেকশন’, ‘ক্রস কানেকশন’, ‘আহিস্তা আহিস্তা’র মতো বেশ কিছু বাংলা ও হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। তার পরে বিনোদন জগৎ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলেন। ১০ বছর পরে প্রত্যাবর্তন করলেন সায়ন মুন্সী। অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর ‘ডিয়ার মা’ ছবিতে অভিনয় করছেন অভিনেতা।
কিন্তু এমন দীর্ঘ বিরতি কেন? প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, “এত বছর নিউ ইয়র্কে ছিলাম। সেখানে নাটকের দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। মঞ্চে অভিনয় করতাম। স্বাধীন ছবিতে কাজ করেছি ওখানে। কিছু মডেলিং-এর কাজও করেছি। আবার ১০ বছর পর ফিরলাম কলকাতায়। আমাদের পারিবারিক চোখের হাসপাতালে ম্যানেজিং ডিরেক্টর হয়ে ফিরেছি।” ফেরার পরে হঠাৎ এক দিন পরিচালক অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর থেকে ফোন পান সায়ন। ছবির কথা শুনেই রাজি হয়ে যান তিনি।
‘ডিয়ার মা’ ছবিতে ভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন সায়ন। এই ছবিতে মা ও সন্তানের রসায়ন উঠে আসবে। বাস্তবে নিজের মায়ের সঙ্গে কেমন সমীকরণ সায়নের? উত্তরে অভিনেতা জানান, এমন পরিস্থিতি তাঁর জীবনে এসেছে, যখন পাশে মা ছিল বলে চলার পথ অনেকটাই সহজ হয়েছে। সায়ন বলেছেন, “ভালবাসা বিষয়টা মায়ের থেকেই সবার আগে সন্তানেরা বোঝে। শর্তহীন ভালবাসা মায়ের কাছে না পেলে কিছুই বুঝতাম না। মনে আছে, একবার খুব কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে আমি যাচ্ছিলাম। আমার মন, আত্মা সব ভেঙে পড়েছিল। সেই সময়ে নিজের মনের অবস্থা মাকে বলে বোঝাতেও পারছিলাম না। এতটাই ভেঙে পড়েছিলাম যে কথা বলতে পারছিলাম না।”
কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়েই সায়ন বলতে থাকেন, “সেই দিন মা আমাকে জড়িয়ে ধরে এনে নিজের পাশে বসালেন। কিন্তু কিচ্ছু বললেন না। মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। একটা কথাও সেই দিন মা বলেননি। সেই দিন মায়ের থেকে যে সান্ত্বনা পেয়েছিলাম, তা অন্য কোথাও মিলত না। মায়েদের মাধ্যমে এ ভাবেই ভালবাসার অর্থ খুঁজে পাই আমরা। এর জন্য আমি আমার মায়ের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।”
দীপিকা পাড়ুকোন বনাম সন্দীপ রেড্ডি বঙ্গার আট ঘণ্টার শুটিং নিয়েও কথা বললেন সায়ন। তিনি বলেন, “ভারতে একটা মাত্রা পর্যন্ত হেনস্থা চলে। পশ্চিমের দেশে সময়ের যে মূল্য দেওয়া হয়, তা ভারতে নেই। যে কোনও পেশায়, পশ্চিমে ঘণ্টার হিসেবে পারিশ্রমিক দেওয়া হয়ে থাকে। অতিরিক্ত কাজ করলেও অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। আমাদের এখানে এই সব নেই। হঠাৎ ডেকে নেওয়া হল শুটিং-এ। সেখানে কোনও সময়সীমা নেই। অতিরিক্ত সময়ের জন্য আলাদা করে ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয় না।”
দীপিকার মতামতকে খানিক সমর্থন জানিয়েই সায়ন বলেছেন, “সকলের মানসিক স্বাস্থ্য রয়েছে, পরিবার রয়েছে। সেগুলো অবহেলা করে শুধু কাজ করা যায় না। এই বিষয়ে কিছু নিয়মকানুন প্রয়োজন।”
বিনোদন দুনিয়ায় মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন ওঠে। পুরুষেরাও কি নিরাপদ? সম্প্রতি অভিনেতা রাজীব খন্ডেলওয়াল জানিয়েছেন হেনস্থা হওয়ার কথা। এই প্রসঙ্গে সায়ন বলেন, “আমি মডেলিং জগৎ থেকে এসেছি। এমন অনেক ঘটনাই শুনেছি। তবে আমাকে কখনও এই ধরনের অভিজ্ঞতার শিকার হতে হয়নি। কিন্তু সর্বত্র এই সমস্যা রয়েছে। বাংলা থেকে শুরু করে হলিউড, সর্বত্রই এমন ঘটে থাকে। কিন্তু এমন পরিস্থিতিকে এ়ড়িয়ে চলতে জানতে হবে। নিজেকেও শক্ত রাখতে হবে। চাঁদ পাওয়ার জন্য নিজে কম্প্রোমাইজ় করে, পরে সেটা নিয়ে কথা বলার কোনও মানে হয় না।”