কৌশিক ও চূর্ণীর সঙ্গে উজান
এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে করোনায় আক্রান্ত হন অভিনেতা উজান গঙ্গোপাধ্যায়। ১৮ মে তাঁর দিদিমা, অর্থাৎ চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়ের মা সুদীপ্তা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ভাইরাসেই প্রাণ হারান। তার মাস কয়েক আগে উজানের ‘ছোট ভাই’, তাঁর পোষ্য, জেট মারা যায়। সব মিলিয়ে চলতি বছরে অনেক খারাপ সময় দেখেছেন পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের পুত্র। কিন্তু তৈরি হওয়া সেই শূন্যতার মধ্যেও জীবনের মানে খুঁজে পেয়েছেন উজান। সে রকমই জানালেন আনন্দবাজার অনলাইনকে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব সাহিত্য নিয়ে পড়ার জন্য বিশেষ বৃত্তি পেয়েছেন উজান। তাঁর পড়াশোনার খরচ বহন করবে সেই সংস্থা। নিজের যোগ্যতায় বৃত্তি অর্জন করেও সমস্ত কৃতিত্ব নিজেকে দিতে চান না অভিনেতা। তিনি জানালেন, গত বছর লকডাউনের শুরু থেকেই লেখালেখি শুরু করেছিলেন। রাত জেগে লিখতে হত। সেই সময়ে তাঁর দিদা কয়েক মাসের জন্য তাঁদের সঙ্গে এক বাড়িতে থাকছিলেন। দিদা তাঁর লেখা পড়তেন। নিজের মতামত দিতেন। তাতে তাঁর লেখায় আরও উন্নতি হয়েছিল বলে দাবি অভিনেতার।
তা ছাড়া তিনি যখন লিখতেন, তাঁর পোষ্য জেট তাঁর হাঁটুতে মুখ রেখে ঘুমিয়ে থাকত। তার সান্নিধ্যও সাহায্য করেছে উজানকে। উপরন্তু বাবা ও মা, স্কুল এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকারা, বন্ধুবান্ধব— সবার হাত ধরেই তিনি আজ সাফল্যের চূড়া দেখতে পেয়েছেন।
গত ফেব্রুয়ারি মাসেই এই সুখবর তিনি পেয়েছিলেন, কিন্তু তার পর থেকে তাঁর পরিবারে শোকের ছায়া ঘনিয়ে এসেছিল। সেই রেশ কাটিয়ে নিজেকে মানসিক ভাবে সুস্থ করে এত দিন বাদে সেই খবর জানালেন নেটমাধ্যমে।
প্রিন্সটন, এডিনবরা, একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু বেছে নিয়েছেন অক্সফোর্ডকেই। বৃত্তি কতটা সাহায়্য করছে জানাতে গিয়ে উজান বললেন, ‘‘হয়তো এই পড়াশোনার খরচ বহন করতে পারতেন বাবা-মা। কিন্তু কষ্ট হত। তাই এই বৃত্তি আমার জন্য আশীর্বাদের মতো। এটা পাওয়ার পরেই আমি বিদেশে পড়তে যাওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করি।’’
তবে কি অভিনয় জগতে পা রাখতে না রাখতেই সব ছেড়ে দেবেন? উজানের কথায়, ‘‘সে ভাবে ভাবছি না। পড়াশোনা করতে চেয়েছিলাম। সেটা শেষ করে যদি অভিনয় করতে ইচ্ছে করে, তা হলে আবার কয়েক বছর পরে শুরু করব। আর চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে আমার বিচ্ছেদ ঘটছে না। বিশ্ব সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করতে হলে আমাকে বিশ্ব চলচ্চিত্র নিয়েও জানতে হবে। সেখানে গিয়ে আমি আরও জ্ঞান অর্জন করতে পারব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy