কান চলচ্চিত্র উৎসবে সদ্য দেখানো হয়েছে ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’। শহুরে জীবন, ভিন্ন সামাজিক শ্রেণিকে সূক্ষ্ম ভাবে ছবিতে বুনেছিলেন সত্যজিৎ রায়। পলামুর জঙ্গলে চার শহুরে যুবকের কয়েক দিনের যাপন উঠে এসেছিল এই ছবিতে। সেই সাদাকালো ছবির সাক্ষী থাকল আন্তর্জাতিক দর্শকও। ছবির প্রদর্শনের জন্য ফ্রান্সে পৌঁছে গিয়েছিলেন এ ছবির অন্যতম অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর। প্রদর্শনের পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী।
সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন শর্মিলা। শুধু অভিনয় নয়, সত্যজিতের সাক্ষাৎকারও নিয়েছিলেন শর্মিলা। এক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিককে শর্মিলা বলেন, “আপনি যেমন আমার সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন, ঠিক তেমনই আমিও সত্যজিৎ রায়ের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম।” সত্যজিৎ রায়কে কী প্রশ্ন করেছিলেন শর্মিলা?
“নিজের পরিচালিত কোন ছবিগুলি আপনার সবচেয়ে পছন্দ?” শর্মিলার এই প্রশ্নে সত্যজিৎ প্রথমেই জানিয়েছিলেন, অপু ট্রিলজির ‘পথের পাঁচালি’, ‘অপরাজিত’ ও ‘অপুর সংসার’ তাঁর সবচেয়ে পছন্দের। তার পরেই তাঁর পছন্দ ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’। এই ছবির নামোল্লেখ করেই সত্যজিৎ রায় বলেছিলেন, “এই ছবিতে তো তুমি আছ।”
আরও পড়ুন:
‘অরণ্যের দিনরাত্রি’র শুটিং-এর অভিজ্ঞতাও স্মৃতিচারণ করেন শর্মিলা। তিনি বলেন, “আমরা ওঁকে মানিকদা বলে ডাকতাম। ওঁর হাতে লেখা চিত্রনাট্য থাকত। সংলাপ মুখস্থ করতে বলতেন না মানিকদা।” একটি বিশেষ দৃশ্যের জন্য আগে থেকে কোনও রকমের প্রস্তুতি নিতে নিষেধ করতেন সত্যজিৎ রায়। তিনি চাইতেন, কিছু প্রতিক্রিয়া যেন অভিনেতাদের স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আসে।
ছবিতে মেমরি গেমের একটি দৃশ্য ছিল। সেই দৃশ্যের জন্য রবি ঘোষকে নিজের মতো করে সংলাপ বলতে ও প্রতিক্রিয়া দিতে দিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়। কিন্তু চরিত্রের কথা মাথায় রেখে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে সেটা করতে দেননি পরিচালক। জানান শর্মিলা।
এই ছবিতে শমিত ভঞ্জ, সিমি গারেওয়াল, অপর্ণা সেন, কাবেরী বসুও অভিনয় করেছিলেন।