বিজয়াদশমীর সকাল। সমাজমাধ্যমে একটি ছবি ভাগ করে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের অভিনেতা যশ রোহন। কপালে সিঁদুরের তিলক। নেপথ্যে দেবীপ্রতিমা। তিনি লিখেছিলেন, শুভ বিজয়া। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর দেশবাসী ক্ষিপ্ত। তার পর থেকেই নাগাড়ে কটূ মন্তব্যের প্লাবন! যেন খাপ পঞ্চায়েত বসানো হয়েছে।
অভিনেতার সমর্থনে বক্তব্য জানানোর লোকসংখ্যা খুবই কম। এই ঘটনা আহত করেছে শ্রীলেখা মিত্রকে। মঙ্গলবার তিনি বিষয়টি নিয়ে নিজের মতামত জানালেন। আনন্দবাজার ডট কম-কে বললেন, “ধর্ম নিয়ে রাজনীতি মানুষের তৈরি। শুরু করেছিল ব্রিটিশরা। গোটা দেশ এককাট্টা হলে তারা টিকতে পারবে না। তাই ভেদনীতির প্রয়োগ করে ভারত-পাকিস্তান ভাগ করেছিল।” অভিনেত্রীর আফসোস, ইংরেজরা অনেক ভাল কাজও করেছিল দেশের জন্য। যেমন, বাল্যবিবাহরোধ, সতীদাহপ্রথা। জনগণ ভেদনীতিটাই মনে রাখল!
এই উপলব্ধি তাঁর সমাজমাধ্যমের বার্তাতেও। অভিনেতার যে ক’জন অনুরাগী তাঁকে সমর্থন করেছেন, তাঁদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন শ্রীলেখা। তাঁদের পাল্টা সমর্থন করে লিখেছেন, “অনেকেই ভাবেন, কেবলমাত্র এখানকার কিছু মানুষ ধর্মীয় নিরপেক্ষতা নিয়ে কথা বলি। ওপারের সবাই বুঝি অ্যান্টি-হিন্দু।” তিনি আরও বলেন, “আমার পূর্বপুরুষ বাংলাদেশের। আমি এখনও বাংলাদেশকেই নিজের দেশ মনে করি। আমাদের ওখানে জমিদারি ছিল। বিশাল দরদালানে দুর্গাপুজো হত। যৌথ পরিবারে পুজোর পালা পড়ত। উৎসবে কিন্তু ভিন্ধর্মীরাও আসতেন। পুজো দেখতেন, ভোগ খেতেন। তা নিয়ে কোনও সমস্যাই হত না!”
আরও পড়ুন:
তাঁর ধারণা, নিজের দেশে অভিনেতা কটাক্ষের শিকার হয়েছেন স্রেফ ধর্মান্ধতার কারণে। ধর্ম যার যার। সেই জায়গা থেকেই অভিনেত্রীর প্রশ্ন, “পারস্পরিক শুভেচ্ছা বিনিময়ে বাধা কোথায়? আমি তো ইদের শুভেচ্ছা জানাই পরিচিত ভিনধর্মী বন্ধুদের। ওঁরাও আমায় বিজয়ার শুভেচ্ছা জানান।” তাঁর মতে, মানুষকে আরও শিক্ষিত হতে হবে। আধুনিক যুগে ধর্মান্ধতাকে বয়ে বেড়ানো শিক্ষিতমনস্কের লক্ষণ নয়। ধর্ম নয়, কাজের মাপকাঠিতে মানুষের বিচার হোক।