গত এক বছরে তাঁর জীবনে অনেক কিছু ঘটেছে। এখন আর সমালোচনা তাঁকে প্রভাবিত করে না। অনেক ঝড়ঝাপটা পেরিয়ে ৬ মে তিনি ৫১ বছরে পা দিলেন। কথা হচ্ছে অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিকের। এক দিকে তৃণমূল বিধায়ক, অন্য দিকে অভিনেতা। মা-বাবার অবর্তমানে শ্বশুর-শাশুড়িই এখন তাঁর একান্ত আপন। তবে বর্তমান কাঞ্চনের সঙ্গে তাঁর ছোটবেলার কোনও মিল নেই। ঠাকুরদা-ঠাকুমার খুব আদরের নাতি ছিলেন তিনি। সে যুগেই বড় করে এ দিনটা পালন হত। কপালে চন্দনের ফোঁটা দিয়ে মা তাঁকে সাজিয়ে দিতেন। নিমন্ত্রিতেরা আসতেন। উপহার পেতেন। জন্মদিনের বিশেষ কেক আসত। আনন্দবাজার ডট কমকে অভিনেতা বলেন, “পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত জন্মদিনটা আমার কাছে উৎসব ছিল। ঠাকুরদা-ঠাকুমার আদরের নাতি ছিলাম। তার পর বিভিন্ন কারণে বন্ধ হয়ে যায় উদ্যাপন।”
কাঞ্চনকে জন্মদিনের কেক খাওয়াচ্ছেন স্ত্রী শ্রীময়ী। —নিজস্ব চিত্র।
এখন অভিনেতার জন্মদিনের সবটাই স্ত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজের হাতে। সবটা তাঁরই পরিকল্পনা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ঠিক কী ভাবে স্বামীকে ত্ন্ চমকে দেবে প্রায় অনেক দিন আগে থেকেই চলছে সেই ভাবনা। পর্দায় রাগিণী চট্টোপাধ্যায় যেমন পরিবারের মাথা, তেমনই মল্লিক বাড়ির সব দায়িত্বই শ্রীময়ীর কাঁধে। ‘বুলেট সরোজিনী’র শুটিংয়ের ফাঁকেই স্বামীর জন্মদিনের নিখুঁত পরিকল্পনা করেছেন তিনি। সকাল ৮টায় কল টাইম। রাত অবধি চলছে শুটিং। তার মাঝেই জন্মদিনের নিমন্ত্রণ করেছেন কাছের সবাইকে। আবার সেখানেই সবাইকে বলেও দেওয়া আছে ভুল করেও কাঞ্চন যেন জানতে না পারেন। এই কারণেই নিজের সবটা তাঁর উপরেই ছেড়ে দিয়েছেন কাঞ্চন। বললেন, “আমার ‘হোমমেকার’, ‘প্ল্যান মেকার’ সবটাই শ্রীময়ী। সকাল থেকে শুটিং করেও যে এ ভাবে চমকে দেবে ভাবিনি।” মেয়ে কৃষভি আসার পর অভিনেতার প্রথম জন্মদিন। তাই মাঝরাতের উদ্যাপনে কেক কেটে একটুখানি অংশ প্রথম মেয়ের মুখেই দিয়েছেন। সবে ৫ মাসের। তাই সে ভাবে তো আর কিছু করতে পারবেন না।
কাঞ্চনের জন্মদিনে ভূরিভোজ। —নিজস্ব চিত্র।
তবে শ্রীময়ীর দিদি এবং তাঁর মা-বাবা যথাসম্ভব চেষ্টা করেছেন এই দিনটা যেন একটু অন্য ভাবে কাটাতে পারেন তিনি। ছোটবেলায় এই দিনে মা পায়েস রান্না করতেন। কাঞ্চন ছোট থেকেই খেতে ভালবাসেন। তাই নানা পদের আয়োজন করতেন। এই বছর সেই ফাঁকা জায়গা পূরণ করেছেন শাশুড়ি মা। জামাইয়ের পছন্দের সব পদ রান্না করে খাইয়েছেন। অভিনেতা বলেন, “আমার শাশুড়ি মা দারুণ পায়েস রান্না করেন। আর শ্বশুর উত্তর কলকাতা থেকে আমার প্রিয় রসগোল্লা এনেছেন। আর কী চাই!” একরত্তি কৃষভি, শ্রীময়ীকে পেয়ে কাঞ্চন এখন পরিপূর্ণ। জন্মদিনের রাতে অভিনেতার মুখের হাসিই বলে দিচ্ছিল সে কথা। ভাবতেই পারেননি ১৪ ঘণ্টা শুটিং করেও এমন ভাবে চমকে দেবেন শ্রীময়ী।
কাঞ্চন মল্লিকের জন্মদিনে নানা পদের আয়োজন। —নিজস্ব চিত্র।