২০১৬ সালে পাকিস্তান থেকে ভারতে এসে এ দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও বিতর্ক পিছু ছাড়েনি আদনান সামির। বেশি টাকা উপার্জনের উদ্দেশ্যেই নাকি পাকিস্তান থেকে এ দেশে চলে এসেছিলেন বলিউডের প্লেব্যাক গায়ক। নেটাগরিকদের মধ্যে এই চর্চা বেশ অনেক দিন ধরেই চলছে। কিন্তু কেন এ দেশে চলে এলেন আদনান? গায়ক জানিয়েছেন, আশা ভোঁসলের কথায় তিনি পাকিস্তান থেকে তল্পিতল্পা গুটিয়ে মুম্বইয়ে চলে আসেন।
১৯৭১ সালে লন্ডনে জন্ম আদনান সামির। তাঁর বাবা আরশাদ সামি খান ছিলেন পাকিস্তান বায়ুসেনার জওয়ান। পরবর্তী কালে পাকিস্তানের সরকারি আমলার পদেও ছিলেন আরশাদ। অন্য দিকে, আদনানের মা ছিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা। লন্ডনেই শৈশব কেটেছে গায়কের। নব্বইয়ের দশক থেকে গানবাজনাকেই পেশা হিসাবে গ্রহণ করেন আদনান। আর কর্মজীবনের শুরুতেই আশা ভোঁসলের মতো কিংবদন্তি গায়িকার সঙ্গে গান গাওয়ার সুযোগ হয়েছিল তাঁর।
এর নেপথ্যে অবশ্য রয়েছে একাধিক প্রত্যাখান। প্রথমে নিজের গান ও অ্যালবাম পাকিস্তানে প্রকাশ করেন তিনি। কিন্তু সেখানকার মানুষ ও শিল্পীরা তাঁর গান প্রত্যাখান করেন। সেই সময় যদিও আদনান থাকতেন কানাডায়। সেখান থেকে তিনি আশা ভোঁসলেকে ফোন করেন। সরাসরি তাঁর সঙ্গে গান রেকর্ড করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। এমনকি গায়িকাকে লন্ডনে আসার অনুরোধও করেন।
কিন্তু সেই সময় আশা ভোঁসলে তাঁকে পাল্টা প্রস্তাব দেন, মুম্বই চলে আসার। আদনান বলেন, ‘‘আমি আশাজিকে আমার হতাশার কথা শোনাই। বলি, পাকিস্তানের লোকেরা আমার সঙ্গে কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই আমি লন্ডনে আপনার সঙ্গে গান রেকর্ড করতে চাই। তিনি বললেন, ‘লন্ডনে কেন? যদি সত্যিই নতুন কিছু করতে চাও, তাহলে মুম্বই এসো। হিন্দি সঙ্গীতের রাজধানী, এবং এখানে যা জনপ্রিয় হবে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে।’ তাই আমি মুম্বই পৌঁছে গেলাম।”
আদনান জানিয়েছেন, আশা তাঁকে অনেক যত্ন করে স্বয়ং রাহুলদেব বর্মণের বাড়িতে থাকতে দিয়েছিলেন। গায়ক বলেন, “যেন সঙ্গীতের মন্দিরে ছিলাম আমি।” পাকিস্তানে প্রত্যাখ্যাত গান, ‘লিফ্ট করাদে’,‘ ভিগি ভিগি রাতোঁ মে’-র মতো গান ভারতে প্রকাশ পায়। বাকিটা ইতিহাস।