Advertisement
E-Paper

নিজের মতো বাঁচো, সব নাতনিকেই বললেন দাদু

নাতনিদের দাদুর চিঠি। জীবনের পাঠ দেওয়ার জন্য বলিউডের প্রবীণ অভিনেতা সত্তরোর্ধ্ব দাদু বেছে নিলেন শিক্ষক দিবসকেই। এক জনের বয়স আঠারো। আর অন্য জন এখনও পাঁচ ছোঁয়নি। নভ্য নভেলি নন্দা এবং আরাধ্যা বচ্চন।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:১১
চিঠি লেখার এই ছবি শিক্ষক দিবসে সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়েছেন অমিতাভ বচ্চন।

চিঠি লেখার এই ছবি শিক্ষক দিবসে সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়েছেন অমিতাভ বচ্চন।

নাতনিদের দাদুর চিঠি। জীবনের পাঠ দেওয়ার জন্য বলিউডের প্রবীণ অভিনেতা সত্তরোর্ধ্ব দাদু বেছে নিলেন শিক্ষক দিবসকেই।

এক জনের বয়স আঠারো। আর অন্য জন এখনও পাঁচ ছোঁয়নি। নভ্য নভেলি নন্দা এবং আরাধ্যা বচ্চন। অমিতাভ বচ্চন দু’জনকেই একটি খোলা চিঠি লিখেছেন। ওদের জন্য, আবার শুধু ওদের জন্যও নয়। অমিতাভ নিজের ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘আমার সব নাতনিদের জন্য।’

আজ সেই চিঠি ফেসবুকে শেয়ার করেছেন তিনি। তাতে দাদুর মূল উপদেশ, ‘লোক কী ভাববে, জীবনে সেই ভেবে কিছু করতে যেও না।’ নভ্য অমিতাভের মেয়ে শ্বেতার কন্যা। আর অভিষেক-ঐশ্বর্যার মেয়ে আরাধ্যা। নভ্যর ‘নানা’ আর আরাধ্যার ‘দাদাজি’ তাদের ছোট্ট কাঁধে পদবির গুরুভারের কথা মনে করিয়েছেন। আরাধ্যাকে বলেছেন, তার প্রপিতামহ হরিবংশ রাই বচ্চনের কথা আর নভ্যকে মনে করিয়েছেন তার প্রপিতামহ এইচ পি নন্দর কথা। তার পরে লিখেছেন, ‘‘তবু সব কিছুর ঊর্ধ্বে তোমরা দু’টি মেয়ে... মহিলা। আর তোমরা মেয়ে বলেই মানুষ চেষ্টা করবে তাদের ভাবনাচিন্তা তোমাদের উপরে চাপিয়ে দিতে। তারাই বলে দেবে, তুমি কী ভাবে সাজবে, কেমন আচরণ করবে, কার সঙ্গে দেখা করতে পারবে, কোথায় কোথায় যেতে পারবে। কিন্তু মানুষের বিচারের উপরে নিজেদের জীবন ছেড়ে দিও না।’’

নভ্য-আরাধ্যাকে তাই নিজেদের জ্ঞানবুদ্ধি অনুযায়ী নিজেদের পছন্দে জীবন কাটানোর পরামর্শ দিয়েছেন তাদের দাদু। বলেছেন, ‘‘তোমাদের চরিত্র কেমন, সেটা তোমাদের স্কার্টের ঝুল বলে দেবে না। কেউ এটা বোঝাতে চাইলেও তা মেনে নিও না। তোমরা কার সঙ্গে বন্ধুত্ব করবে, কাকে বাদ দেবে, সেটাও অন্য কেউ ঠিক করে দেবে না।’’

অমিতাভের লেখা সেই চিঠি।

নভ্যর তুলনায় আরাধ্যা ততটা পরিণত নয়। সেটাও মাথায় রেখেছেন দাদু। আরাধ্যাকে বলেছেন, ‘‘তুমি যত দিনে এই চিঠি পড়ে বুঝবে, তখন হয়তো আমি থাকব না। কিন্তু আমি যা বলে যাচ্ছি, তা তখনও প্রাসঙ্গিক থাকবে। এই পৃথিবীটা মেয়েদের জন্য কিছুটা কঠিন। কিন্তু আমার বিশ্বাস, তোমাদের মতো মেয়েরা এই ধারণা পাল্টে দেবে। সেটা হয়তো খুব সহজ নয়। বাইরের দুনিয়া কী বলল, তা উড়িয়ে দিয়ে নিজের সিদ্ধান্তে বাঁচতে পারা কঠিন কাজ। কিন্তু সব মহিলার জন্য তোমরা সেই নজির তৈরি করতে পারো।’’

বিয়ের মতো অন্যতম কঠিন সিদ্ধান্ত সম্পর্কেও স্বচ্ছ ধারণা তৈরি করার চেষ্টা করেছেন দাদু অমিতাভ। তাই লিখেছেন, ‘‘তুমি বিয়ে করতে চাইলে তবেই করবে। অন্য কোনও কারণের জন্য নয়। লোকে অনেক কিছু বলবে। ভয়ঙ্কর সব জিনিস। কিন্তু তাতে কান দেওয়ার কোনও দরকার নেই। লোকে কী ভাববে, তা নিয়ে কখনও চিন্তা করবে না।’’ পৃথিবীতে মহিলাদের এখনও যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়, দুই নাতনির নামের পিছনে বড় পরিবারের ঐতিহ্য জড়িয়ে রয়েছে বলে সেটা সহজ হয়ে যাবে না— প্রবীণ মানুষটি ছোট দুই নাগরিককে বুঝিয়েছেন সে কথাও। তাদের নিজেদের কাজের দায় যে তাদেরই, স্পষ্ট করে দিয়েছেন তা-ও। অমিতাভের কথায়, ‘‘দিনের শেষে তোমাদের কাজের ফল ভুগতে হবে তোমাদেরই। তাই অন্য কাউকে তোমার জীবনের সিদ্ধান্ত নিতে দিও না।’’

চিঠির একেবারে শেষে তিনি লিখছেন, ‘‘আমি যা করেছি, তার চেয়েও বড় কিছু করবে তোমরা। অমিতাভ বচ্চন হিসেবে নয়, তোমাদের দাদু হিসেবে পরিচিত হতে পারলে আরও ভাল লাগবে।’’

amitabh bachchan letter
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy