অভিজিৎ। ছবি: সুদীপ্ত চন্দ, লোকেশন: চ্যাপ্টার টু।
প্র: অনেকেই বলেন, আপনাকে এখন আর সে ভাবে দেখা যায় না...
উ: হ্যাঁ, এটা আমিও শুনেছি। যারা এ সব বলে, তারা কুয়োর ব্যাঙ। দেখুন, মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি আর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি আলাদা। সিনেমায় গান না গাইলে কি কেউ বেকার হয়ে যায়! জগজিৎ সিংহ, অনুপ জলোটা, পঙ্কজ উদাসরা তেমন ভাবে সিনেমায় গাননি। তার মানে কি ওঁরা কাজ করতেন না? অভিজিৎ, শানু, উদিতদের নিজস্ব জগৎ রয়েছে। পৃথিবী জুড়ে আমরা গেয়ে বেড়াই। এ বছরই আমি কেরিয়ারে সবচেয়ে বেশি ইনকাম ট্যাক্স জমা দিলাম! আমাদের নামে কনসার্টের টিকিট বিক্রি হয়। দু’-তিন ঘণ্টা গাইতে হয়। এখনকার কোনও গায়কের পনেরো মিনিটের বেশি গাওয়ার গান রয়েছে? আমাদের গান মানুষ মনে রেখেছে। আমরা জলজ্যান্ত দৃষ্টান্ত।
প্র: এখনকার গায়কদের কোথায় সমস্যা হচ্ছে?
উ: ক্যাসেট, সিডি উঠে গিয়েছে। এখন ডিজিটালে মানুষের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। এক ছিল নোটবন্দি, আর এটা হল মিউজিক-বন্দি! আপনি কি ভার্চুয়ালি তাজমহল বা হিমালয় দেখে মজা পাবেন? আমাদের পাঁচ হাজার ক্যাসেট কমপ্লিমেন্টারি দেওয়া হত। এখন দু’হাজারও গানের বিক্রি নেই! মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ হওয়ার মুখে।
প্র: ঘুরে দাঁড়ানোর ফর্মুলাটা কী?
উ: আর পারবে না। মিউজিশিয়ান পাওয়া যাবে। কিন্তু কেউ কি নিজের ছেলেকে তবলা, গিটার, পিয়ানো শেখায়? সবাই ল্যাপটপে মেতে। আমাদের গানই অমর থেকে যাবে। রোম্যান্টিক, ক্ল্যাসিকাল, পুজোর গান... কত গেয়েছি। আমার ‘ঢাকের তালে...’ গানটা অমরত্ব পেয়েছে।
প্র: সেই জন্যই কি পুরনো গান ফিরে আসছে?
উ: অবশ্যই। নতুন গান তৈরি করবে কে? এখন তো হানি সিংহ, বাদশারাও গায়ক! এরা ড্রাগ নেবে, চরস খাবে, ইঞ্জেকশন নেবে নাকি আঙুল নেড়ে অদ্ভুত কায়দা করবে! অবশ্য ওদের দোষ নেই। রাস্তায় দাঁড়িয়ে হয়তো গান করছিল, ধরে নিয়ে এসে গাওয়ানো হচ্ছে। সিনেমার তারকা হয়ে ওঠার পিছনে গায়কদের বিরাট অবদান রয়েছে। রাজ-মুকেশ, শাম্মি-রফি, দেব আনন্দ-অমিতাভ-রাজেশ খন্নার সঙ্গে কিশোরকুমারের জুটি ছিল। আমার গানে শাহরুখ, সলমন জনপ্রিয় হয়েছে।
প্র: আপনি মন খুলে কথা বলেন, এ জন্য কখনও সমস্যায় পড়েছেন?
উ: মনে যা আসে, তাই বলি। এর জন্য অনেক বার সমস্যায় পড়েছি। সেটা উপভোগও করি।
প্র: আপনার পরিবারে এর প্রতিক্রিয়া কী?
উ: ওরা বরাবরই আমার পাশে থেকেছে। পরিবারের সকলে ভাল করেই জানে, আমি কাউকে অহেতুক দুঃখ দিই না, মানুষটা স্বচ্ছ। সোজা কথা বলতে ভালবাসি। তাই আমার বন্ধু খুব কম। কিন্তু তারা প্রকৃত বন্ধু।
প্র: আপনার টুইটার অ্যাকাউন্ট ডিলিট করার পরে এখন কী করেন?
উ: ইউটিউবে আমার চ্যানেল আছে।
প্র: সক্রিয় রাজনীতিতে আসার কথা মনে হয়নি কখনও?
উ: কেন আসব? অভিজিৎ হয়ে ওঠা সবচেয়ে কঠিন। একজন পাড়ার লোকও মন্ত্রী বা সাংসদ হতে পারে। আমি তো একটা বিরাট পজিশনে বসে আছি। যদি আমার অন্য কিছু করার না থাকত, তা হলে হয়তো রাজনীতির কথা ভাবতাম। প্রতিটা রাজনৈতিক দল আমাকে সম্মান করে। এর বেশি কী প্রয়োজন! আমি একজন দেশপ্রেমিক।
প্র: এর জন্য কখনও হুমকি আসে?
উ: কত বার! পাকিস্তান থেকেই তো এসেছে। আমি তোয়াক্কা করিনি।
প্র: আপনার কণ্ঠে রোম্যান্টিক গান অন্য মাত্রা পেয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনে আপনি কতটা রোম্যান্টিক?
উ: ভীষণ। আর ইমোশনালও। তাই তো এত রকমের গান গেয়েছি। এখনও প্রচুর প্রোপোজাল পাই। আসলে হ্যান্ডসাম তো (হেসে)!
প্র: সমসাময়িক কোন গায়ককে আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেন?
উ: নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে নিজেকেই দেখি। বহু বার বিশ্লেষণ করে দেখেছি, আমি হয়তো আরও ভাল গাইতে পারতাম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy