Advertisement
E-Paper

সবচেয়ে বিপজ্জনক দল বিজেপি, তৃণমূল দুর্নীতিগ্রস্ত, সিপিআইএম দিশেহারা! তাই মানুষ অসহায়: কৌশিক সেন 

সুযোগ পেলে একদিন শুধুই মঞ্চে অভিনয় করতে চান। জানালেন কৌশিক সেন। আনন্দবাজার ডট কম-এর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ছবির জগতের রাজনীতি থেকে সমাজের রাজনীতি— সব নিয়ে অকপট অভিনেতা।

স্বরলিপি দাশগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:৫২
ছবি ও রাজনীতি নিয়ে অকপট কৌশিক সেন।

ছবি ও রাজনীতি নিয়ে অকপট কৌশিক সেন। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

যে কোনও বিষয়ে তাঁর স্পষ্ট মতামত। সদ্য মুক্তি পেয়েছে তাঁর ছবি ‘স্বার্থপর’। ধূসর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তবে সুযোগ পেলে একদিন শুধুই মঞ্চে অভিনয় ও পরিচালনা করতে চান। জানালেন কৌশিক সেন। আনন্দবাজার ডট কম-এর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ছবির জগতের রাজনীতি থেকে সমাজের রাজনীতি— সব নিয়ে অকপট অভিনেতা।

প্রশ্ন: আপনি সচেতন মানুষ। আশপাশের পরিস্থিতিতে কৌশিক সেন কেমন আছেন?

কৌশিক: আমি ভাল আছি। খারাপ আছি বা চলে যাচ্ছে, এগুলি বলা আমার কাছে হাস্যকর। আসলে আমি অনেকের চেয়ে অনেক ভাল আছি। আমাদের সমাজের বিরাট বড় একটা অংশ খুব খারাপ আছে। তাদের চেয়ে অনেক ভাল আছি।

প্রশ্ন: বাংলা ছবির মান নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে। এমন সময়ে আপনি নতুন পরিচালক অন্নপূর্ণা বসুর সঙ্গে কাজ করলেন।

কৌশিক: ভাইবোনের সম্পর্ক নিয়ে আগেও বহু বাংলা ছবি হয়েছে। ‘মেঘে ঢাকা তারা’র কথা সবার আগে উঠে আসে। তবে ‘স্বার্থপর’ ছবিটা আজকের সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তৈরি করা হয়েছে। আজ প্রায় সব সম্পর্কই কলুষিত। ভাইবোনের সম্পর্কও। খুব সততার সঙ্গে সেই দিকটা তুলে ধরেছে অন্নপূর্ণা। আরজি কর কাণ্ডের পরে বহু মহিলার সম্মান নিয়ে বহু প্রশ্ন উঠেছে। আসলে আমরা মূল জায়গাটাকে ধরতেই পারিনি। একটি মেয়ের উপর শারীরিক অত্যাচার করাই সব নয়, মেয়ে হওয়ার জন্য প্রতিদিন সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম অপমানের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় তাদের। সেটা খুব সুন্দর ভাবে দেখানোর চেষ্টা করেছে অন্নপূর্ণা।

প্রশ্ন: এত স্পষ্ট কথা বলেন। এর ফলে কি ব্যক্তিগত পরিসর কেবল ছোট হয়ে যাচ্ছে?

কৌশিক: আসলে ভাবনাচিন্তা যত পরিণত হবে, তত পরিসর ছোট হতে থাকে। স্বতন্ত্র ভাবনাচিন্তার ফলে অবশ্যই চারপাশের লোক কমবে। তবে তাতে খুব কিছু ক্ষতি হয় না। স্বতন্ত্র বলে নিজেকে কাচের ঘরে বন্দি করে থাকার কথা বলছি না যদিও। বিশেষ করে আমি যখন একজন অভিনেতা। মূলত মঞ্চের অভিনেতা।

প্রশ্ন: তবে কি এমন দিনও আসতে পারে, পর্দার অভিনয় ছেড়ে শুধুই মঞ্চের জন্য কাজ করবেন?

কৌশিক: হ্যাঁ। আমি আসলে মঞ্চের পরিচালক হিসাবে অনেক ভাল। আমার দেশে থিয়েটার করে খাওয়া যায় না, তাই বাধ্য হয়ে আমি ছবি ও ধারাবাহিকে কাজ করি। কাল যদি কেউ বলেন, থিয়েটার করলে ঠিকঠাক পারিশ্রমিক পাওয়া যাবে, আমি আর ছবি ও ধারাবাহিকে কাজ করব না। কিন্তু অভিনেতা হিসাবে মানুষের সঙ্গে যোগস্থাপন তো করতেই হবে। কথাও বলতে হবে। আমার কথা আমি বলব। তাতে পরিসর ছোট হলে, হবে!

প্রশ্ন: সৃজনশীল ভাবনা টিকে থাকার জন্য উপার্জন— এই দুইয়ের মধ্যে সমতা বজায় রাখেন কী ভাবে?

কৌশিক: আমার দেশের ইতিহাস দেখে এটা আমি শিখেছি। আমি আমার বাবা-মাকেও এটা করতে দেখেছি। উৎপল দত্ত, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো অভিনেতাকেও এটাই করতে হয়েছিল। প্রথমে অর্থ উপার্জন করে তার পর ওঁদের নিজের ভালবাসার কাজের কাছে যেতে হয়েছে। ভালবাসার কাজের প্রতি অদম্য জেদ থাকতে হবে।

প্রশ্ন: পুজোয় চারটে বাংলা ছবি মুক্তি পেল। বক্স অফিসে আশানুরূপ ফল নেই। কী বলবেন এই পরিস্থিতিকে?

কৌশিক: একটি ছবিও সফল নয়। সেটা স্বীকার করে নেওয়াই সবচেয়ে ভাল বলে আমার মনে হয়। তা হলে পরবর্তী ধাক্কার জন্য আমরা প্রস্তুত হতে পারব। সমস্যাটা হল, ছবি তৈরির প্রথম দিনেই আমরা ভেবে নিচ্ছি, এটা ব্যবসা। অবশ্যই ছবি ভাল ব্যবসা করলে সকলের উপকার হবে। কিন্তু শুধুই যদি ব্যবসা হয়, তা হলে মুশকিল।

প্রশ্ন: আপনি বলতে চাইছেন ছবিগুলি শুধুই ব্যবসার মানসিকতা নিয়ে তৈরি হয়েছে?

কৌশিক: ব্যবসা ভাল হওয়াই কাম্য। কিন্তু শুধুই ব্যবসা কেন? আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে এমন বহু মানুষ রয়েছেন যাঁদের ব্যবসায়িক বুদ্ধিটা খুব ভাল। তাঁরা অন্য ব্যবসা করছেন না কেন? চলচ্চিত্রকেই তাঁরা বেছে নিলেন কেন? ছবির ভাবনার পিছনে ‘এস্থেটিক্‌স’ আছে তো? সেটা নিয়ে কোনও আলোচনাই হচ্ছে না। কে ক’টা প্রেক্ষাগৃহ পেল, কে কেমন প্রচার করল, কে সমাজমাধ্যমে কতটা কুকথা বলল, সেগুলো নিয়েই আলোচনা হচ্ছে। ছবির বিষয়বস্তু, ছবির ভালমন্দ নিয়ে কোনও আলোচনাই হচ্ছে না। তার কারণ ছবিগুলির বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করার কিছুই নেই। এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক।

প্রশ্ন: অথচ ছবির সাফল্য উদ্‌যাপন হচ্ছে!

কৌশিক: এই পরিস্থিতিটা খুব ভয়ের। জোর করে ‘সাকসেস পার্টি’ দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করতে পারি, আমি কত সফল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাতে খুব সুবিধা হবে না।

প্রশ্ন: একসঙ্গে এতগুলো ছবি মুক্তি পাওয়ার কারণেই কি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে?

কৌশিক: ছবি বাণিজ্যিক ভাবে সফল করার কৌশল এগুলি। আরও অদ্ভুত লাগে, এই বিষয়গুলিতে এখন অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও যোগ দিচ্ছেন। তাঁদের একটা নির্দিষ্ট ভূমিকা থাকতে পারে। কিন্তু বাকিটা তো প্রযোজক ও পরিবেশকদের হাতে। অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও বাণিজ্যের বিষয়ে কোমর বেঁধে নেমে পড়ছেন, যেটা আমার স্বাস্থ্যকর বলে মনে হচ্ছে না। শুধুই কেন ব্যবসা নিয়ে এত কথা হবে, আর বিষয়বস্তু পিছিয়ে থাকবে। তা হলে আলু-পটলের ব্যবসা হোক।

প্রশ্ন: দু’টি ছবিতে আবীর চট্টোপাধ্যায় অভিনয় করেছেন। তা নিয়েও তরজা চলেছে।

কৌশিক: হ্যাঁ, খুবই হাস্যকর। আমি দু’টি ছবিতে অভিনয় করলে গর্বের সঙ্গে সেটা বলব। আমি আবীরকে খুব ভালবাসি। আমি তো আলাদা করে ওকে দু’টি চরিত্রেই দেখতে চাইব। অভিনেতা হিসাবে আমি কী ভাবে বলতে পারি, একটি ছবির প্রচারে আছি, অন্যটায় নেই। তা হলে কি অন্য ছবিটা ভালবেসে করা হয়নি? তা হলে তো পেশার সঙ্গে দ্বিচারিতা করা হয়ে যায়।

প্রশ্ন: ‘ফ্যানক্লাব’গুলির ভূমিকাও কি অনেকটা বড় হয়ে গিয়েছে?

কৌশিক: ‘ফ্যানক্লাব’ থাকবে। তাঁদের সম্মান করব। কিন্তু আমার ‘এস্থেটিক্‌স’-এর সঙ্গে কি ‘ফ্যানক্লাব’-এর সম্পর্ক থাকতে পারে? অভিনয়টা ভালবেসে করেছ, একক লড়াই রয়েছে। তার পরে ‘ফ্যানক্লাব’ তৈরি হয়েছে। তারা একজন অভিনেতাকে উদ্‌যাপন করতে পারে। কিন্তু অভিনেতা নিজের স্বপ্ন, নিজের সফর তাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারেন না।

প্রশ্ন: এই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আগামী পাঁচ বছরে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে কী ভাবে দেখেন?

কৌশিক: বাংলাদেশের অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী আমার ছেলে ঋদ্ধির সঙ্গে ‘হাওয়া’ ছবির শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন। তিনি ছবির ডাবিংটাই করেছেন ২০-২১ দিন ধরে। এই চেষ্টাটা দরকার। প্রচুর চেষ্টা ও খাটনির পরেও একটা ছবি খারাপ হতেই পারে। কিন্তু এখানে কাজ হচ্ছে চটজলদি। আমাদের কম বয়সে, বাংলাদেশের ছবি নিয়ে আমরা খুব হাসিঠাট্টা করতাম। তার পরে একেবারে পতন হল বাংলাদেশের ছবির। সেখান থেকে আবার নতুন করে পথচলা শুরু হল ওদের। আমার অনুমান, আমাদের ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গেও এমন কিছু হতে চলেছে।

প্রশ্ন: বাংলার নিজের অনেক গল্প রয়েছে। তাও কি দক্ষিণের ছবিকে অনুকরণ করার প্রবণতা বাড়ছে?

কৌশিক: আমাদের নিজস্ব শিকড়বাকড় প্রচুর। সেগুলির মধ্যে যথেষ্ট রসও রয়েছে। যেমন ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবিটার শুটিং একটা মেসবাড়িতে হয়েছিল। ছবিটা দেখলে যেন মেসবাড়িটার গন্ধ পাওয়া যায়। তেলচিটে বালিশের গন্ধ পাওয়া যায়। ওই জীবনটা অনুভব করা যায় ছবিটা দেখলে।

প্রশ্ন: কিন্তু আজকের দিনে বাঙালির পরিচয় কি স্পষ্ট? কোন বিষয়গুলি বাঙালি সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করবে আজ?

কৌশিক: বাঙালির কোনও পরিচিতি আজ নেই। বাংলার গল্প মানেই লোকসংস্কৃতি দেখাতে হবে এমন নয়। মৃণাল সেন, সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটককে বাঙালির উৎস বা শিকড় খোঁজার জন্য কিন্তু লোকসংস্কৃতির আশ্রয় নিতে হয়নি। পাড়ার গল্পও সেই শিকড় হতে পারে। ‘স্বার্থপর’ ছবিটার ক্ষেত্রেও এই বিষয়টা রয়েছে। অন্নপূর্ণা কোনও পাকামি করেনি। মেয়ে হিসাবে যা দেখেছে, সেটাই তুলে ধরেছে।

প্রশ্ন: মেয়েদের অধিকার নিয়ে এত আলোচনা হয়। অথচ আজও তাদের নিজের বাড়িতেই অধিকারের জন্য লড়তে হয়।

কৌশিক: দৈনন্দিন, খুব সাধারণ বিষয়েও মেয়েদের সূক্ষ্ম অপমানের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। আমার মায়ের কথাই বলি। একসময় মায়ের রোজগারের উপরে আমার মামাবাড়ির একটা বড় অংশ নির্ভর করত। কিন্তু বিয়ের পরে কোনও সমস্যা হলে ওঁরা অত সহজে আমার মায়ের কাছে আসতেন না। ওঁরা মনে করতেন, ‘মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। আর যাওয়া যাবে না।’ আবার রেশমি যখন আমাকে বিয়ে করে এল, ধরে নেওয়া হল ওর বাপের বাড়িটার আর অস্তিত্বই নেই। আমিও স্বার্থপরের মতো ভেবেছিলাম, বিয়ে করা বৌ, আমারই তাই অধিকার বেশি।

প্রশ্ন: বরাবর মতামত প্রকাশ করেন। তাই কোনও ঘটনায় মতামত না দিলে পাল্টা প্রতিক্রিয়া আসে। কী বলবেন?

কৌশিক: একটা সময়ে এই নিয়ে ভাবতাম। এখন ভাবি না। তাই এখন টেলিভিশনের বিতর্কসভায় আর যাই না। সেখানে শুধুই তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম কী বলল— সেটাই বিষয়। কিন্তু সমস্যা তো দলীয় রাজনীতির অনেক উর্ধ্বে। সারা বিশ্ব জুড়ে যুদ্ধ হচ্ছে, গাজ়ায় বীভৎসতা চলছে, এ সবের উৎস কি রাষ্ট্রনায়কেরা জানেন না? এত অস্ত্র কী ভাবে আসছে? তাই আমাদের মতামতের কোনও মূল্য নেই।

প্রশ্ন: মতামত দিলেই যে কোনও একটি নির্দিষ্ট দলের সমর্থক হিসাবে দেগে দেওয়া হয়?

কৌশিক: দেশে বিজেপি ও রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় রয়েছে। তাই ওরা মনে করবেই, সকলে ওদের দাস। কিন্তু বিরোধীরাও এখন ঠিক করে দেয়, আমার প্রতিবাদের ভাষা ঠিক কেমন হবে। ওদের তৈরি ‘ন্যারেটিভ’ দিয়েই প্রতিবাদ করতে হবে। এই জন্যই কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল শক্তি বৃদ্ধি করতে সক্ষম হচ্ছে। মানুষকে মানুষের ভাষায় কথা বলতে দিতে হবে।

প্রশ্ন: এই কারণেই কি আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে না-নামায় অনির্বাণ ভট্টাচার্যকে সমালোচিত হতে হয়েছিল?

কৌশিক: আমি তো এখন বলব, অনির্বাণ একদম ঠিক করেছে। এই বিরাট আন্দোলনটা কেবল নিজেকে জাহির করার একটা মঞ্চ হয়ে দাঁড়াল। সমাজমাধ্যমে নিজস্বী দিতে থাকলাম— আমি শ্যামবাজারেও আছি, যাদবপুরেও আছি! সেখানে আমি নাচছি, গাইছি, স্লোগান লেখা টি-শার্ট পরছি। আমরা একটা বড় খেলার অংশ হয়ে গেলাম। আমরাও হেঁটেছিলাম মিছিলে। তার পরে বুঝলাম, কোথাও একটা গন্ডগোল হয়ে যাচ্ছে।

প্রশ্ন: আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। কিছু অনুমান রয়েছে?

কৌশিক: আমি মনে করি, বিজেপি সবচেয়ে বিপজ্জনক দল। তৃণমূল সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দল। আর সিপিআইএম ও কংগ্রেস বিভ্রান্তির মধ্যে থাকে। ওরা দিশেহারা। সারা বছর একে অন্যের সঙ্গে কোনও যোগ নেই ওদের। অথচ ভোটের সময়ে ওরা জোট বাঁধে। এরা সবসময় সংশয়ে থাকে। এর মধ্যে মানুষকেই বিবেচনা করে বেছে নিতে হবে। অর্থাৎ বোঝাই যায়, মানুষ কতটা খারাপ আছে। আমাদের কাছে কোনও অপশন নেই, তার ছাপ শিল্পেও পড়েছে।

প্রশ্ন: রাজনৈতিক মতামত রেখে কাজ পেতে অসুবিধা হচ্ছে না?

কৌশিক: কাজ কমে গিয়েছে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবুও ভাগ্য ভাল। রেশমি কাজ করছে, ঋদ্ধি কাজ করছে। রেড রোডের কার্নিভাল নিয়ে ঋদ্ধি একটা পোস্ট করেছিল ব্যঙ্গ করে। শিল্পীদের তো সেটাই করার কথা। বরং যাঁরা মুখ খোলেন না, প্রতিবাদ করেন না, তাঁরাই ব্যতিক্রমী (হেসে)।

প্রশ্ন: কার্নিভালে রাজনৈতিক ভাবে সচেতন মানুষদেরও কিন্তু দেখা গিয়েছিল।

কৌশিক: সচেতনতা অনেকে ঠিক করে উঠতে পারে না। আসলে প্রত্যেকে খুব চাপে রয়েছে। সব দিক থেকেই। তাই দোষও দিই না।

প্রশ্ন: এটা কি কাজ হারানোর ভয় থেকে?

কৌশিক: জীবনযাপনের চাপ। তাই অনেক সময় আমরা এমন কিছু করে ফেলি, যার যুক্তি-বুদ্ধি থাকে না।

প্রশ্ন: আচ্ছা, ঋদ্ধি প্রায়ই সমালোচিত হন সমাজমাধ্যমে। বাবা হিসাবে কোনও পরামর্শ দেন?

কৌশিক: আমি আর রেশমি সমাজমাধ্যমে নেই। আমাদের কাছে ওই জগৎটা অচেনা। বাবিয়া মাঝেমধ্যে বলে। একই লোক ঘুরেফিরে গালাগাল করছে। ও জানে কোথায় থামতে হবে। আমি বা রেশমি, দু’জনের থেকেই ঋদ্ধি অনেক বেশি প্রতিভাবান। ও যা বলার, ছবির মাধ্যমে, অভিনয়ের মাধ্যমে বলবে। ওর প্রতিবাদের ভাষা শিল্প হয়ে উঠবে বলে বিশ্বাস করি।

Kaushik Sen
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy