নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদও তাঁর কোনও দিনই ছিল না বলে দাবি অনির্বাণের।
সফল অভিনেতা, ‘মন্দার’ সিরিজের সফল পরিচালক। অনির্বাণ ভট্টাচার্যের সাম্প্রতিক জীবনের মানচিত্র এটাই। কিন্তু ২০০৪ সালে মেদিনীপুরের সেই ছেলেই যখন খাস শহর কলকাতায় পা রেখেছিলেন? তখন কী অনুভূতি ছিল তাঁর?
জীবনবোধ বলে, কিছুটা ভয়, শহুরে মানুষের কাছে নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদ- এই দুই অনুভূতির সহাবস্থান সাধারণত কাজ করে। শনিবার আনন্দবাজার অনলাইনের লাইভ আড্ডায় সেই ধারণাকেই নস্যাৎ করলেন অনির্বাণ। অভিনেতার দাবি, তিনি তথাকথিত গ্রাম থেকে উঠে আসেননি। মেদিনীপুরের যে অঞ্চলে তাঁর বাড়ি, সেই সময়ে তা মফসসল হিসেবে চিহ্নিত ছিল। তা ছাড়া, বেহালায় অনির্বাণের মামার বাড়ি। ফলে, কলকাতাকে তিনি ছোট থেকেই দেখেছেন।
তবে অনির্বাণ মানছেন, ২০০৪-এ নিজের তাগিদে যখন শহরে পাকাপাকি পা রেখেছিলেন, তখন শহরের আকাশচুম্বী বহুতলগুলো তাঁর সত্ত্বাকে যেন গ্রাস করতে চাইত! মনে হত, ওরে বাবা! এখানে বেশি ট্যাঁ-ফোঁ করা চলবে না। সমঝে চলতে হবে। এটা মেদিনীপুরের বিধাননগরের মাঠ নয় যে, যখন তখন ইচ্ছে হলেই বেরিয়ে পড়ে সবাইকে ডাকা যাবে।
বাইপাস ধরে গাড়িতে গন্তব্যের দিকে ছোটার সময়ে আজও সেই আচ্ছন্ন ভাব তাঁকে কুয়াশার মতো ঘিরে ধরে। অনির্বাণের কথায়, ‘‘পরমা আইল্যান্ড অর্থাৎ সায়েন্স সিটির মোড় পেরিয়েই চোখে পড়ে ড্যুয়েল বিল্ডিং, টাওয়ার। গাড়ি বসে দেখি বলে আমার দৃষ্টি ছড়িয়ে পড়ে নীচ থেকে উঁচুতে। দেখতে দেখতে শিহরিত হই নিজের অজান্তেই।’’
'মন্দার'-এর পরিচালক জানান, থিয়েটার করার সুবাদে পরে সেই জড়তা তাঁর কেটেছে। এ-ও বলেন, কলকাতার কোনও বন্ধু কিন্তু তাঁকে 'তুই মফসসল থেকে এসেছিস' বলে নাক কুঁচকোয়নি। ফলে, নিজেকে কখনওই অপাংক্তেয় বলে মনে হয়নি তাঁর।
তাই নিজেকে প্রমাণ করার তাগিদও তাঁর কোনও দিনই ছিল না বলে দাবি অভিনেতার। সেরা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে কলকাতার বন্ধুরা যে পরিশ্রম করেছেন, অনির্বাণও তা-ই করেছেন। তিনি কেবল বুঝতেন, সংলাপ, শারীরিক গঠন, অভিনয়- সবেতেই নিজের সেরাটা দিতে হবে। বরাবর সেই চেষ্টাই করে এসেছেন। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তাই সফল অভিনেতা এবং প্রথম চেষ্টাতেই সাফল্যের স্বাদ পাওয়া পরিচালকের কথায়, ‘‘আমি কোনও কিছু প্রমাণ করতে আসিনি, শুধু ভাল করে কাজ করতে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy